বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
অর্থনীতি

দিনটি ঐতিহাসিক!

 ডেস্ক রিপোর্ট
০১ মার্চ ২০২০

চারদিকে নেতিবাচক সংবাদ আর সমস্যার পাহাড়। তার মধ্যে একটি শুভদিন— শুভসংবাদ। আজকের দিনটি ওয়ালটনের জন্যে ঐতিহাসিক তো বটেই, বাংলাদেশের জন্যেও।
দেশীয় ইলেকট্রনিক্স পণ্য প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন দেশের প্রথম লিফট নির্মাণ প্ল্যান্ট চালু করছে।
গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজে (ডাব্লিউএইচআইএল) ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রতিষ্ঠিত এই প্ল্যান্টটি পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করেছে।
ওয়ালটন এলিভেটরের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল রানা বলেন, ‘আমরা দেশের বার্ষিক চাহিদার প্রায় ৫০ ভাগ পূরণ করার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছি। আমদানিকারকদের থেকে ভালো মান এবং কম দামে পণ্য তুলে দিতে পারব ক্রেতাদের কাছে।’
প্রতিবছর বাংলাদেশে পাঁচ হাজার ইউনিটেরও বেশি লিফট প্রয়োজন এবং এর বেশিরভাগই চীন থেকে আমদানি করা হয়। এই বাজারের আকার এক হাজার ২০০ কোটি টাকার কম নয়। নগরায়নের কারণে প্রতি বছর বাজারের আকার বাড়ছে প্রায় ২০ শতাংশ।
বাংলাদেশের চাহিদা মোতাবেক ওয়ালটন যাত্রী, কার্গো এবং ক্যাপসুল লিফট তৈরি করছে। ৩০০ কেজি থেকে শুরু করে তিন হাজার কেজি অর্থাৎ চার থেকে ৪০ জন যাত্রী ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন  লিফট আছে এই প্রতিষ্ঠানের। প্রতিষ্ঠান এবং কারখানায় ব্যবহারের জন্য তৈরি কার্গো লিফট ৮০০ কেজি থেকে চার হাজার ৫০০ কেজি ওজন বহন করতে পারবে।
সোহেল রানা আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের পণ্যের মান নিয়ে আত্মবিশ্বাসী।’
ওয়ালটন তাদের পণ্য নিয়ে এতটাই আত্মবিশ্বাসী যে তারা শুরু থেকেই গ্রাহকদের পাঁচ বছরের কিস্তিতে লিফট কেনার সুবিধা দেবে। এ সম্পর্কে সোহেল রানা বলেন, ‘এটি কোনো রসিকতা না। পাঁচ বছর বেশ দীর্ঘ সময় এবং আমরা আমাদের পণ্য সম্পর্কে খুব আত্মবিশ্বাসী থাকায় এতটা ঝুঁকি নিচ্ছি।’
রানা আশা করেন, প্লান্টের উৎপাদন পূর্ণাঙ্গভাবে শুরু হলে সামগ্রিকভাবে লিফটের দাম কমে যাবে। তিনি বলেন, ‘আমদানিকারকরা প্রতিটি লিফট থেকে বেশ বড় অংকের টাকা আয় করছে। আমাদের পণ্য বাজারে এলে অবশ্যই এই অবস্থার পরিবর্তন আসবে।’
তিনি জানান, বর্তমানে একটি যাত্রীবাহী লিফট কিনতে ক্রেতাকে ব্যয় করতে হচ্ছে প্রায় ২০ লাখ টাকা। তবে ওয়ালটনের উৎপাদন শুরু হলে এই দাম কয়েক লাখ টাকা কমে যাবে।
ভারী প্রযুক্তির পণ্য সংযোজনের জন্য ২০১৪ সালে ওয়ালটন এই প্লান্ট স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছিল। প্রায় দেড়শ স্থানীয় এবং বেশ কয়েকজন বিদেশি প্রকৌশলী এই প্লান্টে কাজ করছেন। এই প্লান্টের বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা এক হাজার ইউনিট। বাজারের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোর পরিকল্পনাও রয়েছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকের উপস্থিতিতে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল রোববার এই প্ল্যান্টের উদ্বোধন করবেন।
লিফট শিল্পের বিকাশ ঘটাতে সরকারের সহযোগিতা চান সোহেল রানা। বর্তমানে লিফট তৈরির সরঞ্জাম ও কাঁচামাল আমদানি করতে ১০ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। যেখানে তৈরি করা লিফট আমদানি করতে দিতে হয় ১ শতাংশ শুল্ক।
রানা বলেন, ‘এই শিল্পকে এগিয়ে নিতে এই পার্থক্যে সংশোধন আনা দরকার।’
দ্রুত বর্ধমান অর্থনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশে লিফটের ব্যবহার খুবই দ্রুত বাড়ছে। রানা যোগ করেন, ‘নতুন আরও প্রতিষ্ঠান অদূর ভবিষ্যতে স্থানীয়ভাবে লিফট তৈরির প্রতিযোগিতায় যোগ দেবেন।’
রোববার ওয়ালটনের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন। দেশের প্রথম লিফট নির্মাণ প্লান্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ওয়ালটন হাই-টেক পার্ককে দেশের প্রথম ব্যক্তিমালিকানাধীন হাই-টেক পার্ক হিসেবে ঘোষণা করার কথা রয়েছে। বিকালে অনুষ্ঠানে হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এবং ওয়ালটনের মধ্যে এ বিষয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে।
এছাড়াও, ভারতে ২৬ হাজার এয়ার কন্ডিশনার এবং যুক্তরাষ্ট্রে স্মার্টফোনের প্রথম ব্যাচের চালান রোববারই পাঠাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
এই প্লান্টের মাধ্যমে ওয়ালটন রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার, এয়ার কন্ডিশনার, এলইডি/এলসিডি টেলিভিশন, মোটরসাইকেল, স্মার্টফোন এবং ঘরের প্রয়োজনীয় অন্যান্য সরঞ্জাম উৎপাদন করে।
প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী ২০টিরও বেশি দেশে পণ্য রপ্তানি করছে সবচেয়ে বড় দেশীয় ইলেকট্রনিক্স প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন। খবর: ডেইলি স্টার

বান্দরবানে পর্যটকদের জন্য ‘ট্যুরিস্ট বাস’ চালু
মহেরা জমিদার বাড়ি : ইতিহাসের অনন্য পাঠ

আপনার মতামত লিখুন