শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
অর্থনীতি

বিদেশে নিযুক্ত কমার্শিয়াল কাউন্সিলরদের কারখানা পরিদর্শন

ওয়ালটনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং ও রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণের প্রত্যয়

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০
গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন কারখানা পরিদর্শনে আসা বিদেশে বাংলাদেশী দূতাবাসে নবনিযুক্ত কমার্শিয়াল কাউন্সিলরদের প্রতিনিধিদলকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারা

গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন কারখানা পরিদর্শনে আসা বিদেশে বাংলাদেশী দূতাবাসে নবনিযুক্ত কমার্শিয়াল কাউন্সিলরদের প্রতিনিধিদলকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারা

কীভাবে বাংলাদেশী পণ্য বিশ্ববাজারে আরো গ্রহণযোগ্যতা পেতে পারে, ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ খ্যাত পণ্যের রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণের বিষয়ে বাস্তব জ্ঞান লাভ করতে ওয়ালটন কারখানা পরিদর্শন করেছেন নবনিযুক্ত কমার্সিয়াল কাউন্সিলরগণ। তারা প্রাপ্ত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বিশ্বের সম্ভাবনাময় দেশগুলোতে বাংলাদেশী পণ্যের প্রমোশনাল ব্র্যান্ডিং এর মাধ্যমে নতুন রপ্তানি বাজার সৃষ্টি ও বাণিজ্য সম্প্রসারণের চেষ্টা চালাবেন।
শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন কারখানা পরিদর্শন শেষে এমন প্রত্যয় ব্যক্ত করেন বিদেশে বাংলাদেশী দূতাবাসে নবনিযুক্ত কমার্সিয়াল কাউন্সিলরগণ। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব নাহিদ আফরোজের নেতৃত্বে নবনিযুক্ত কমার্সিয়াল কাউন্সিলরদের প্রতিনিধিদলে রয়েছেন তেহরানে নিয়োগপ্রাপ্ত ড. জুলিয়া মঈন, ইয়াংগুণে নিযুক্ত শাহেদুল আকবর খান, সিউলে ড. মিজানুর রহমান, লসএঞ্জেলসে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর এস এম খুরশিদ-উল-আলম, ব্রাসেলসে নিয়োগপ্রাপ্ত সফিউল আজম এবং কুনমিংয়ে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল দপ্তরের প্রথম সচিব বজলুর রশীদ। ওই প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আরো উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মিরাজুল ইসলাম উকিল ও সৈয়দা নাহিদা হাবিবাসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সহকারী প্রধান শামীমা আক্তার।
কারখানা পরিদর্শন শেষে ড. জুলিয়া মঈন বলেন, বাংলাদেশ যে অনেক এগিয়ে গেছে, ওয়ালটন কারখানা দেখে আজ সেটা ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারলাম। ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদনে বাংলাদেশের সক্ষমতা  তৈরি হয়েছে দেখে আজ আমরা গর্বিত। বহির্বিশ্বে বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং করবে ওয়ালটন।’
মিরাজুল ইসলাম উকিল বলেন, ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে ওয়ালটন। আগে বিভিন্ন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলাদেশে  কাজের সুযোগ ছিলোনা। কিন্তু, আজ দেখলাম- দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলাদেশেই কাজের সুযোগ সৃষ্টি করেছে ওয়ালটন। যা কিনা দেশের জন্য খুবই ভালো।
এস এম খুরশিদ-উল-আলম বলেন, ওয়ালটন কারখানায় এসে আমরা দেখলাম একটা পণ্যের এ টু জেড আমাদের দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে। যা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। আমরা যারা কমার্শিয়াল কাউন্সিলর হিসেবে বিভিন্ন দেশে যাচ্ছি, বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব এবং বহিঃর্বিশ্বে তুলে ধরার ক্ষেত্রে এ অভিজ্ঞতা আমাদের ব্যাপক কাজে লাগবে। ওয়ালটনের তৈরি পণ্য আরো বেশি বহিঃর্বিশ্বে সম্প্রসারণ করতে পারি, তার চেষ্টা আমরা করবো।
এর আগে সকালে অতিথিরা ওয়ালটন কারখানা কমপ্লেক্সে পৌঁছালে তাদেরকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর আলমগীর আলম সরকার এবং ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ইউনিটের প্রেসিডেন্ট এডওয়ার্ড কিম।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ইউসুফ আলী, ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর জাহিদুল ইসলাম, অ্যাকটিং হেড অব অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ইয়াসির আল ইমরান, ডেপুটি অপারেটিভ ডিরেক্টর আব্দুর রউফ, সিনিয়র অ্যাডিশনাল অপারেটিভ ডিরেক্টর মোহসিন আলী মোল্লা প্রমুখ।

ওয়ালটন কারখানায় পরিদর্শনকালে সুসজ্জিত প্রোডাক্ট ডিসপ্লে সেন্টার ঘুরে দেখছেন বিদেশে বাংলাদেশী দূতাবাসে নবনিযুক্ত কমার্শিয়াল কাউন্সিলরদের প্রতিনিধিদল

কারখানা প্রাঙ্গনে পৌঁছে অতিথিরা প্রথমে ওয়ালটনের বিশাল কর্মযজ্ঞের উপর নির্মিত ভিডিও ডক্যুমেন্টারি উপভোগ করেন। পরে তারা ওয়ালটনের সুসজ্জিত প্রোডাক্ট ডিসপ্লে সেন্টার ঘুরে দেখেন।
এরপর তারা ওয়ালটনের বিশ্বমানের রেফ্রিজারেটর উৎপাদন প্রক্রিয়া সরেজমিনে পর্যবেক্ষণে যান। পর্যায়ক্রমে অতিথিরা ওয়ালটনের মেটাল কাস্টিং, ফাউন্ড্রি, কম্প্রেসর, এয়ার কন্ডিশনার, টেলিভিশন, এসএমটি প্রোডাকশন, পিসিবি, কম্পিউটার এবং মোবাইল ফোন উৎপাদন ইউনিট ঘুরে দেখেন।
উল্লেখ্য, বিশ্বমানের প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদনে ওয়ালটন একটি প্রশংসিত নাম। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ৭৫০ একরেরও বেশি জায়গাজুড়ে স্থাপন করা হয়েছে ওয়ালটনের অত্যাধুনিক কারখানা। এখানে ফ্রিজ, টিভি, এসি, ল্যাপটপ, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, হোম ও ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্লায়েন্স, লিফটসহ বিভিন্ন উচ্চমানের পণ্য তৈরি হচ্ছে।
উৎপাদনের পাশাপাশি বিভিন্ন পণ্যের গবেষণা ও উন্নয়ন, মান নিয়ন্ত্রণ, আন্তর্জাতিক ব্যবসা ইউনিটসহ বিভিন্ন বিভাগ গড়ে তুলেছে। দেশের চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি ওয়ালটনের তৈরি আন্তর্জাতিক মানের পণ্য রপ্তানি হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।
ওয়ালটনের টার্গেট- বিশ্বের সেরা গ্লোবাল ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ডে পরিণত হওয়া। সেই লক্ষ্যে বাস্তবায়নে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির পণ্য, উচ্চগুণগতমান ও প্রতিযোগীমূল্য সক্ষমতা দিয়ে দ্রুত জয় করে নিচ্ছে বিশ্ব ক্রেতাদের আস্থা। বাড়ছে রপ্তানি বাণিজ্য। ওয়ালটন তথা বাংলাদেশে তৈরি প্রযুক্তিপণ্যের রপ্তানি বাজার দ্রুত সম্প্রসারণে এবার কর্মাসিয়াল কাউন্সেলরদের সহযোগিতা আরো বাড়বে। তারা দেশীয় হাই-টেক শিল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে অর্জিত অভিজ্ঞতা নতুন সম্ভাবনাময় রপ্তানি বাজার সৃষ্টিতে কাজে লাগাবেন।

কক্সবাজারে পর্যটন শিল্পের বিকাশে মহাপরিকল্পনার উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার
প্রথম দিনেই সর্বোচ্চ দামে ওয়ালটন শেয়ারের লেনদেন শুরু

আপনার মতামত লিখুন