বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
জাতীয়

কক্সবাজারে পর্যটন শিল্পের বিকাশে মহাপরিকল্পনার উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার

অনলাইন ডেস্ক
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০

অনলাইন ডেস্ক-  দেশের একমাত্র প্রধান পর্যটন স্থান হচ্ছে কক্সবাজার। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতটি কক্সবাজার শহর থেকে টেকনাফ এবং দেশের সর্ব দক্ষিণের শেষ পর্যন্ত বিস্তৃত। মনোমুগ্ধকর ল্যান্ডস্কেপিং, পাহাড়, নদী, বন, সব মিলিয়ে এটি দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের জন্য একটি অন্যতম পর্যটন স্থান। কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় পরিমন্ডলে কক্সবাজার জেলা গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় অর্থনীতিতে এ জেলার আরও অবদান রাখার সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ভিশন ২০২১ এবং ভিশন ২০৪১ অর্জনের লক্ষ্যে মেরিনড্রাইভ, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার রেল সংযােগ, মহেশখালী এলএনজি টার্মিনাল , বিদ্যুৎকেন্দ্র ইত্যাদি বৃহৎ প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড দ্রুত বিকশিত হবে যা কক্সবাজার অঞ্চলের ভূমি ব্যবহারকে প্রভাবিত করবে।

এ লক্ষ্যেই কক্সবাজারকে কেন্দ্র করে মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। পরিকল্পনা কমিশন এ প্রকল্পটির ওপর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হবে। প্রকল্পটির জন্য মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২১০ কোটি টাকা। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুুমোদনের পর চলতি বছরের এপ্রিল থেকে এপ্রিল ২০২৩ সালে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। পিইসি সভাকে কেন্দ্র করে প্রকল্পটির বেশ কয়েকটি খাতের ব্যয় নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।

পিইসি সভার কার্যপত্রে বলা হয়েছে, নগর উন্নয়ন অধিদপ্তর কর্তৃক কক্সবাজার শহর এবং টেকনাফ পর্যন্ত সৈকত এলাকার ডেভলপমেন্ট প্ল্যান ২০১১ সালে প্রণীত হয়। যা ২০১৩ সালে গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। পরিকল্পনায় প্রতি ৫ বছর পরপর এটি পর্যালোচনা করার বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। নগর উন্নয়ন অধিদপ্তরের মাধ্যমে স্ট্রাকচার প্ল্যান, আরবান এরিয়া প্ল্যান ও ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান অন্তর্ভুক্ত করে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্রাধীন ৬৯০.৬৭ বর্গকিলোমিটার এলাকার জন্য উক্ত ডেভেলপমেন্ট প্ল্যানটিকে বর্তমান সময়ের সাথে যুগোপযোগী করা যায় কিনা তা সভায় আলোচনা করতে হবে। প্রকল্প দলিলে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা হিসেবে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন কনসালটেন্ট (সিএসসি), বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দেখানো হয়েছে। প্রকল্পটি সমীক্ষাধর্মী এবং এতে নির্মাণধর্মী কোন কার্যক্রম নেই । সুতরাং সিএসসি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে বাদ দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা হিসেবে শুধু কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে দেখানো সমীচীন হবে।

বর্তমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে সরকারের অগ্রাধিকার, সম্পদের স্বল্পতা এবং প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দ প্রাপ্তির নিশ্চয়তা বিবেচনায় নিয়ে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গসমূহ বাদ দিয়ে অন্যান্য অঙ্গের ব্যয় কমিয়ে মোট ব্যয় প্রাক্কলন যৌক্তিকভাবে হ্রাস করা প্রয়োজন। প্রকল্প দলিলের ক্রয় পরিকল্পনায় প্রকল্পের সার্ভে এবং ডাটা কালেকশনের জন্য কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন কনসালটেন্ট (সিএসসি) বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ১৭০ কোটি টাকায় নিয়োগের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অপরদিকে ১১ জন আন্তর্জাতিক ও ১১ জন দেশীয় পরামর্শক এবং ২০ জন নন কী স্টাফসহ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের জন্য ১৭০ কোটি টাকার ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক পরামর্শক বাদ দিয়ে কিউসিবিএস পদ্ধতিতে দেশীয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের মাধ্যমে ‘সার্ভে ও ডাটা কালেকশনের কাজটি সম্পন্ন করার সংস্থান রাখতে হবে।

কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নিজস্ব জনবলে ঘাটতি থাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ২১ জন জনবল নিয়োগের প্রস্তাব করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে জিআইএস ও প্ল্যানিং ল্যাব স্থাপন, ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে মেশিনারিজ ও ইকুইপমেন্ট ক্রয় এবং ৪৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ব্যয়ে সার্ভে ইকুইমেন্ট ক্রয় করা হলে প্রকল্প সমাপ্তির পর এগুলাের রক্ষণাবেক্ষণ এবং এর ব্যবহারের বিষয়ে সংশয় রয়েছে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের মাধ্যমে সার্ভের কাজটি করা হবে। তাই পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের ইকুইমেন্টসমূহ ব্যবহারের মাধ্যমে আলোচ্য প্রকল্পের কাজ করার বিষয়ে সভায় আলোচনা করতে হবে।

স্টাডি প্রোপোজালে সময়ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা থাকা প্রয়োজন যাতে উল্লিখিত কাজের জন্য পৃথক সময় বরাদ্দ থাকবে। প্রকল্প দলিলে কনসালটেন্সি, সার্ভে ও ডাটা কালেকশনের আওতায় রিপোর্ট, ম্যাপস , ড্রয়িং, ফিজিক্যাল মডেল এবং ওয়েবজিআইএস বেজড সিস্টেমের সংস্থান থাকলেও পৃথকভাবে প্রিন্টিং, বাইন্ডিং বাবদ ৮৮ লাখ টাকা এবং পাবলিকেশন বাবদ ১ কোটি ৬৯ লাখ টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে। এছাড়া সার্ভে ও ডাটা কালেকশনের আওতায় মৌজা ম্যাপ সংগ্রহ এবং প্রসেসিং বাবদ ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকার সংস্থান থাকলেও পুনরায় মৌজা সিট ক্রয় বাবদ অংশে ৫ লাখ টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে। স্যাটেলাইট ইমেজ ক্রয় এবং ফটোগ্রামেটিক ওয়ার্কস অঙ্গে ২ কোটি ৯৪ লাখ লক্ষ টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অফিস থাকা সত্ত্বেও কক্সবাজারে প্রকল্প বাস্তবায়ন ইউনিট অফিস ভাড়া বাবদ ৯৯ লাখ টাকা সংস্থান রাখা হয়েছে। অফিস ভাড়ার সংস্থান বাদ দিয়ে উল্লিখিত অঙ্গসমূহের ব্যয় প্রাক্কলন যৌক্তিকভাবে হ্রাস করতে হবে। বৈদেশিক প্রশিক্ষণ বাবদ প্রস্তাবিত ১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক ট্রাভেল ও ট্রান্সফার বাবদ প্রস্তাবিত ৫৮ লাখ টাকা প্রকল্প দলিল হতে বাদ দিতে হবে। এছাড়া পিএমইউ প্রফেশনালদের অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ বাবদ ৯২ লাখ টাকা, স্থানীয় ট্রাভেল বাবদ ৯৮ লাখ টাকা এবং ট্রান্সফার বাবদ ৪ লাখ টাকা সংস্থানের যৌক্তিকতা জানাতে হবে।

এছাড়া তিন বছর মেয়াদী প্রকল্পে মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ (যানবাহন, ফার্নিচার, কম্পিউটার এবং মেশিনারী ইকুইপমেন্ট) বাবদ ৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা, পেট্রোল, গ্যাস, লুব্রিকেন্ট বাবদ ৬০ লাখ টাকা, সেমিনার, কনফারেন্স ও কনসালটেশন বাবদ ৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা এবং বিভিন্ন কমিটির সম্মানি বাবদ ৯২ লাখ টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে, যা অনেক বেশি। এসব অঙ্গের ব্যয় যৌক্তিকভাবে হ্রাস করতে হবে।

নগদ কর্মীর বিরুদ্ধে এজেন্টদের কাছ থেকে ২.৪১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
ওয়ালটনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং ও রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণের প্রত্যয়

আপনার মতামত লিখুন