বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
দেখা থেকে লেখা

টুকটুকের শহর কলম্বো

শ্রীলঙ্কা থেকে ফিরে ইমরুল কাওসার ইমন
০৬ আগস্ট ২০১৯
গল ফেস সমুদ্র সৈকতে লেখক ইমরুল কাওসার ইমন

গল ফেস সমুদ্র সৈকতে লেখক ইমরুল কাওসার ইমন

শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোর বাসিন্দাদের যোগাযোগের মাধ্যমকে একেবারেই সহজ এবং সাশ্রয়ী করেছে টুকটুক। এই শহরে যে পরিমাণ টুকটুক চলাচল করে তা দেখে অনেকেই কলম্বোকে টুকটুকের শহর বলে আখ্যায়িত করেন। কলম্বো শহরের পর্যটন বিকাশেও অনেক বেশি অবদান রাখছে তিন চাকার এই বাহন।

কলম্বো শহর ঘুরে দেখা গেছে, স্থানীয় এবং পর্যটকদের কাছে প্রাইভেটকার কিংবা জিপের থেকে বেশি প্রিয় টুকটুক। স্থানীয়রা কেউ কেউ এটিকে অটো বলে ডাকেন, কেউ কেউ বলেন থ্রি হুইলার, আর কেউ সিএনজি বলে ডাকেন। টুকটুক চালকদের সাথে কথা বলেন জানা গেছে, বহু বছর আগে থেকেই কলম্বোসহ পুরো শ্রীলঙ্কাতে ব্যাপক জনপ্রিয় এই তিন চাকার বাহন। যে কোনো গন্তব্যে ট্যাক্সি ক্যাব, অ্যাপ ভিত্তিক সেবা কিংবা জিপের থেকেও অনেক বেশি সাশ্রয়ী এবং নিরাপদ।

টুকটুক চালক জ্যোতি বলেন, টুকটুক শ্রীলঙ্কার একটি ঐতিহ্য। কলম্বো শহরে ঘুড়তে এসেছে কিন্তু টুকটুকে ওঠেনি এমন পর্যটক হয়তো পাওয়াই যাবে না। তিনি বলেন, গত প্রায় দেড় যুগ ধরে টুকটুক চালাচ্ছি এটি দিয়েই আমাদের সংসার চলে। ওই চালক বলেন, প্রতিদিন টুকটুক চালিয়ে প্রায় ৫ থেকে ৬ হাজার রুপি আয় করেন তিনি। পেট্রোল খরচ বাদ দিয়ে বাকি যা থাকে তাতে তার সংসার সুন্দরভাবে পরিচালিত হয়। টুকটুকে দুই পাশে খোলা থাকার কারণে পর্যটকরা বসে ভালোভাবে দুই দিকের দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন।

টুকটুক চালকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী দেখা গেছে, তিন কিলোমিটার দুরত্বের একটি গন্তব্যে প্রাইভেটকার কিংবা ট্যাক্সি ক্যাব ভাড়া নেয় প্রায় ৫০০ রুপি। সেখানে টুকটুকে খরচ হয় মাত্র ২০০ রূপি। যা টুকটুকের ভাড়ার তুলনায় অর্ধেকেরও কম। শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বো-৩ বাংলাদেশ থেকে আসা টুকটুকযাত্রী ছাইফুল বলেন, এটি অন্য যে কোনো বাহনের তুলনায় অনেক নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী। কলম্বো শহরে কম খরচে ট্যুর করতে চাইলে এই বাহনের বিকল্প নেই।

এই শহরের টুকটুক চালকদের প্রায় অধিকাংশই কথা বলেন ইংরেজিতে। ফলে দিনের বেশিভাগ সময়ই তারা চালকের পাশাপাশি ট্যুর গাইড হিসেবে কাজ করেন। এ ব্যপারে টুকটুক চালক সিদাম বলেন, রুটি-রুজির ব্যাপার। তাই যেটা করছি সেটাই শতভাগ সফল ভাবে করতে চাই। তা না হলে অনেক বেগ পেতে হবে। পুরো পরিবারই কষ্টে পরে যাবে। সুতরাং আমার একার একটু কষ্ট যদি পরিবারের সকলেরই সুখের পাত্র হয় তাহলে সেটাই আমাকে করতে হবে। তিনি আরো বলেন, অধিকাংশ শ্রীলঙ্কানই ইংরেজিতে পারদর্শী।   

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টুকটুকে কলম্বো সিটি ট্যুর করলে ২ থেকে ৩ তিন ঘণ্টা সময় লাগে। আর এই সময়ের মধ্যে কলম্বো শহরের গঙ্গারামা মন্দির, স্বাধীনতা চত্ত¡র, ভাসমান বাজার, লাল মসজিদ, কলম্বো শহরের পাইকারি বাজার, কলম্বো লেক ট্যুর করা যায়। এই সিটি ট্যুরের প্যাকেজ মূল্য ৩ হাজার রুপি। অর্থাৎ বাংলাদেশি টাকায় ১৫’শ টাকা। এছাড়াও যে কেউ চাইলে সারা দিনের জন্য টুকটুক ব্যবহার করতে পারেন। আর এর জন্য গুনতে হবে চার থেকে পাঁচ হাজার শ্রীলঙ্কান রুপি।

উনাবাতুনা- পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ সমুদ্র সৈকত
মুক্ত আসর ও টু‌গেদার উই ক্যা‌নের উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ

আপনার মতামত লিখুন