মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ইভেন্ট

কালিনারি ফোলোশিপ: সেরা ৩ রন্ধনশিল্পী পাবেন এক লক্ষ টাকা

অনলাইন ডেস্ক
২৭ মার্চ ২০২০

বাংলাদেশের জাতীয় ও ঐতিহ্যবাহী খাবারের সেরা সেরা রেসিপিগুলো তুলে নিয়ে আসতে ও তা দেশের মানুষের কাছে পরিচিত করে দিতে বাংলাদেশ ট্যুরিজম ফাউন্ডেশন আয়োজনে ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম এক্সপ্লোরার্স অ্যাসোসিয়েশন ও ট্রাভেল বাংলাদেশের সহযোগিতায় প্রদান করা হবে কালিনারি ট্যুরিজম ফেলোশিপ। দেশের যেকোন রন্ধনশিল্পী এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে জিতে নিতে পারেন এক লক্ষ টাকার পুরস্কার।

ফোলোশিপে অংশগ্রহণে রেজিষ্ট্রেশনের লিংকঃ t.ly/nWRBe

রেজিষ্ট্রেশন এর সর্বশেষ তারিখ ৩০ মে ২০২০।

খাদ্যের অনুসন্ধানের মধ্য দিয়ে সংঘটিত ট্যুরিজমই কালিনারি ট্যুরিজম নামে পরিচিত। কালিনারি ট্যুরিজমের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট এলাকার খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ করে পর্যটকরা অনুপম ও স্মরণীয় অভিজ্ঞতা নিয়ে বাড়ি ফেরেন। পর্যটন অভিজ্ঞতায় বর্তমানকালে কালিনারি অন্যতম প্রধান পর্যটন উপাদান হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। কেননা, একটি খাদ্য ঐ এলাকার আবহাওয়া, কৃষি, মানুষের খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনধারাকে নির্দেশ করে। তাই পর্যটকরা এই বিশেষ অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য নিজ এলাকা ছেড়ে অন্যত্র ছুটে যান।

কোন অঞ্চলের খাদ্য হলো ঐ অঞ্চলের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই কালিনারি ট্যুরিজম একটি অঞ্চলকে অন্য অঞ্চলের মানুষের কাছে তুলে ধরে। গন্তব্য বাজারজাতকরণ এবং পর্যটকদেরকে আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে কালিনারি ট্যুরিজম তাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খাদ্যের আকর্ষণে পর্যটকরা নির্দিষ্ট গন্তব্যে ছুটে যান ও ভ্রমণকালে তা উপভোগ করেন।

ক্রমবর্ধমান ও দ্রুত পরিবর্তনশীল অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পরিবেশগত উন্নয়নখাত হিসেবে পর্যটনের অবদান বিশ্বব্যাপী যে অবদান রাখছে, কালিনারি পর্যটন তার অন্যতম অংশ। অথচ আমরা এখনো এই বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারিনি। বিশেষত এদেশের প্রাচীন ও চিরায়ত খাবারগুলি সংরক্ষণ ও অনুশীলনের অভাবে ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হচ্ছে। অনেকগুলি ইতোমধ্যে হারিয়েও গেছে। যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে আমাদের এইসকল দৃশ্যমান ও অদৃশ্য সম্পদগুলি হারিয়ে গেলে আমাদের জাতিসত্ত্বা হুমকির মুখে পড়বে এবং মানবিক বিপর্যয় ঘটবে। তাই সময় এসেছে এসবের অনুসন্ধানের মাধ্যমে সংরক্ষণের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের। গবেষকদেরকে এই জাতীয় কাজের জন্য এগিয়ে এসে ভূমিকা রাখা অত্যন্ত জরুরি।

বিশেষভাবে লক্ষনীয় যে, আমাদের দেশের রন্ধনশিল্পী এবং ফুড ও নিউট্রিশনের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীগণ প্রথাগতভাবে দেশি-বিদেশি খাবার প্রস্তুতের মধ্যে নিজেদেরকে সীমাবদ্ধ করে রাখেন। এই ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে আমাদের প্রাকৃতিক ও বুনো উদ্ভিদগুলোকে খাদ্যে ব্যবহারের অনুশীলনকে উদ্ভাবনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এই অবস্থায় অনুসন্ধান ও গবেষণাধর্মী খাদ্যকর্মীদেরকে দিয়ে এই ব্যবস্থা প্রবর্তন করা দরকার। আমাদের দেশে আগামী দিনের পর্যটনকে এই সকল সম্পদগুলি চিহ্নিতকরণ, সংরক্ষণ ও ব্যবহারের পন্থা খুঁজে বের করার মাধ্যমে কালিনারি আর্টিস্টরা নতুন এক মাত্রা দিতে পারেন। এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে কালিনারি ট্যুরিজমে ফেলোশিপ প্রবর্তনের প্রয়োজনীয়তা থেকেই এই ফেলোশীপ প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

ফেলোশীপ প্রদানের উদ্দেশ্যঃ

ক. সমতল এলাকা, পার্বত্য এলাকা এবং উপকূলীয় এলাকার প্রত্যেক অঞ্চল থেকে ৫০টি করে মোট ১৫০টি বুনো উদ্ভিদ চিহ্নিত করা যা প্রত্যক্ষভাবে খাবারে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং অতীতে ব্যবহৃত হতো।

খ. এই সকল বুনো উদ্ভিদ দিয়ে খাবারের আদি রেসিপিগুলির অনুসন্ধান করা।

গ. হাল আমলের রন্ধনশিল্পের অভিজ্ঞতার আলোকে এই সকল বুনো উদ্ভিদ দিয়ে নতুন নতুন রেসিপি উদ্ভাবন করা।

ঘ. অনুসন্ধানমূলক গবেষণার মধ্য দিয়ে আমাদের মানুষের আদি খাদ্যাভ্যাসের অনুসন্ধান করা।

ঙ. আমাদের জীবনধারায় ও খাদ্যাভ্যাসে বুনো উদ্ভিদের অবদান নিরূপণ করা।

ফেলোশিপ প্রাপ্তির যোগ্যতাঃ

ক. খাবারের রেসিপি তৈরির অন্তত ১ (এক) বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

খ. নুন্যতম স্নাতক পাশ এবং প্রার্থীর বয়স অন্তত ২৭ (সাতাশ) বছর হতে হবে।

গ. কালিনারি ট্যুরিজমে ক্যারিয়ার তৈরিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হতে হবে।

ঘ. কালিনারি হেরিটেজ অনুসন্ধানে গভীর আগ্রহ থাকতে হবে।

চ. বাজার, অর্থনীতি ও সমাজে কালিনারি ট্যুরিজমের প্রতিষ্ঠায় প্রত্যয়ী হতে হবে।

ফেলো বাছাই প্রক্রিয়াঃ

২ (দুই) দিন ব্যাপী একটি কর্মশালার মাধ্যমে কাঙ্খিত সংখ্যক ফেলোদেরকে বাছাই করা হবে।

ফেলোশিপ প্রদানকারীঃ

বাংলাদেশ ট্যুরিজম ফাউন্ডেশন (Bangladesh Tourism Foundation) নিয়মিতভাবে এই ফেলশীপ প্রদান করবে। সহযোগিতায় থাকবে বাংলাদেশ ট্যুরিজম এক্সপ্লোরার্স অ্যাসোসিয়েশন (Bangladesh Tourism Explorers Association- BTEA), ট্রাভেল বাংলাদেশ (Travel Bangladesh) সহ বেশ কিছু সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।

ফেলোশিপ তত্ত্বাবধানঃ

বাংলাদেশ ট্যুরিজম ফাউন্ডেশনের সভাপতি জনাব মোখলেছুর রহমান সকল ফেলোদের তত্ত্বাবধায়কের (Supervisor) দায়িত্ব পালন করবেন। প্রয়োজনে অন্য কোন গবেষক বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে সহ-তত্ত্বাবধায়ক (Co-Supervisor) নিয়োগ করা হবে।

ফেলোশিপের মেয়াদকালঃ

এক বছর। জুলাই ২০২০ থেকে জুন ২০২১ খ্রি:ব্দ

ফেলোশিপের সংখ্যাঃ

৩ (তিন) টি।

ফেলোদের কাজের প্রকৃতিঃ

ক. একজন ফেলোর জন্য সমতল এলাকা, পার্বত্য এলাকা ও উপকূলীয় এলাকা এই ৩ (তিন) টির মধ্য থেকে যে কোন একটি নির্ধারণ করা হবে।

খ. ফেলোদেরকে প্রস্তুতির জন্য কালিনারি কালচার ও হেরিটেজ, কালিনারি সায়েন্স ও আর্টস্, লোকজ জীবনধারা এবং বাংলাদেশের সামাজিক বিবর্তন ইত্যাদি বিষয়ে ২ (তিন) দিনব্যপী একটি কর্মশালা পরিচালনা করা হবে।

গ. প্রত্যেক ফেলোকে তার নির্ধারিত অঞ্চল থেকে অন্তত ৫০টি বুনো উদ্ভিদের অনুসন্ধান ও সে সব দিয়ে তৈরি চিরায়ত খাবারের রেসিপি অনুসন্ধান করতে হবে।

ঘ. রন্ধনশিল্পের অভিজ্ঞতার আলোকে এই সকল বুনো উদ্ভিদ দিয়ে নতুন নতুন রেসিপি উদ্ভাবন করা।

ঙ. প্রতি মাসের ১ম রবিবারে প্রত্যেক ফেলোকে পর্যালোচনা সভা-কাম-কর্মশালায় যোগ দিতে হবে। উক্ত সভায় তিনি পূর্ববর্তী মাসের কাজসমূহ জমা দিবেন এবং পরবর্তী মাসের কাজের জন্য ব্রিফিং নিবেন।

চ. বছর শেষে প্রত্যেক ফেলোর ছবি, বায়োডাটা এবং তাদের সংগৃহিত ও উদ্ভাবিত রেসিপিসমূহ নিয়ে ১ (এক)টি পুস্তক প্রকাশিত হবে, যা আগামী দিনে কাজের রেকর্ড হিসেবে থাকবে এবং গবেষকদের রেফারেন্স পুস্তক হিসেবে ব্যবহৃত হবে।

ফেলোশিপের স্বীকৃতিঃ

ক. জুন ২০২০ মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে ফেলোশিপ ঘোষণা করা হবে।

খ. জুলাই ২০২১ মাসে একটি আড়ম্বরপূর্ণ কনভোকেশন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রত্যেক ফেলোকে ১ (এক) লক্ষ টাকা, ১ (এক)টি পদকসহ ফেলোশিপ সনদ প্রদান করা হবে।

ফেলোদেরকে নিয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনাঃ

ক. এই ফেলোদেরকে দিয়ে দেশি ও বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিনার ও কনফারেন্সে প্রেরণ এবং গণমাধ্যমে উপস্থাপন করা হবে।

খ. জাতীয় স্কিল কাউন্সিলের মাধ্যমে এই ফেলোশিপের জাতীয়মান নির্ধারণ করা হবে।

গ. পর্যটন শিক্ষা ও পাঠ্যক্রম প্রণয়নে এই ফেলোদেরকে সংযুক্ত রাখার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

ঘ. ফেলোদের কাজ নিয়ে একটি ইউটিউব চ্যানেল চালু করা হবে।

যে কোন প্রয়োজনে যোগাযোগঃ

শহিদুল ইসলাম সাগর; ফোনঃ 01796807049; 01670184940

ফোকাল পয়েন্ট ও পরিচালক, বাংলাদেশ ট্যুরিজম ফাউন্ডেশন এবং চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ট্যুরিজম এক্সপ্লোরারস অ্যাসোসিয়েশন – বিটিইএ।

পর্যটন সাংবাদিকতায় ফেলোশিপের জন্য বাংলাদেশ ট্যুরিজম ফাউন্ডেশনের প্রস্তাব আহ্বান
লন্ডন ও ম্যানচেস্টারে ফ্লাইট এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত

আপনার মতামত লিখুন