শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সীমানার ওপারে

কাশ্মির ছাড়ছে হাজার হাজার তীর্থযাত্রী

বিদেশ ডেস্ক
০৬ আগস্ট ২০১৯

জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় রাজ্য সরকারের নির্দেশনা জারির পর কাশ্মির ছাড়তে শুরু করেছে হাজার হাজার তীর্থযাত্রী। কাশ্মিরের রাজ্য সরকারের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হাজার হাজার পর্যটক, তীর্থযাত্রী ও শ্রমিক এ এলাকা ছেড়ে গেছেন। তবে নির্দিষ্ট করে সংখ্যা বলতে পারেননি তিনি। তবে তিনি বলেন, ২০ হাজারেরও বেশি হিন্দু তীর্থযাত্রী ও ভারতীয় পর্যটক এবং দুই লাখের বেশি শ্রমিক এ এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, রাজ্য সরকারের নির্দেশনার পর কাশ্মিরে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।

শুক্রবার ভারতের নিরাপত্তাবাহিনীর তরফ থেকে জানানো হয়, কাশ্মিরে হিন্দু তীর্থযাত্রীদের ওপর হামলা চালানো হতে পারে বলে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে পবিত্র অমরনাথ গুহায় (যেখানে বরফের শিবলিঙ্গের পূজা দেওয়া হয়) যাত্রা করা তীর্থযাত্রীদের ওপর হামলা হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়। এই সতর্কতার পর শনিবার তীর্থযাত্রীদের কাশ্মির ছাড়ার নির্দেশনা জারি করে রাজ্য সরকার।

রাজ্য সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অমরনাথমুখী যাত্রীদের টার্গেট করে জঙ্গি হামলা হতে পারে, এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কাশ্মিরে নিরাপত্তা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পর্যটক ও অমরনাথমুখী যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, যত দ্রুত সম্ভব তাদের ফিরে যাওয়া উচিত।

কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল কেজেএস ডিলন ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে বলেন, ‘অমরনাথ যাত্রাপথে পাকিস্তানে তৈরি একটি ল্যান্ডমাইন ও টেলিস্কোপসহ একটি এম-২৪ আমেরিকান স্নাইপার রাইফেল পাওয়া গেছে। মাইন ও অস্ত্রসহ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ সংযোগের প্রমাণ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া বোমাও উদ্ধার করা হয়েছে।’

শনিবার কাশ্মির সরকারের এক কর্মকর্তা বলেন, স্থানীয় সরকারের নির্দেশনার কারণে কাশ্মিরে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই ভীতির কারণে হাজার হাজার পর্যটক, তীর্থযাত্রী ও শ্রমিক এলাকা ছেড়েছে বলে জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার ১০ দিনের ছুটিতে পরিবার নিয়ে কাশ্মিরের রাজধানী শ্রীনগর আসেন ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা প্রভাকর আয়ার। কিন্তু রাজ্য সরকারের নির্দেশনা জারির পর বাড়ি ফিরেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘যখন ওই নির্দেশনা জারি করা হয় তখন আমি ডাল লেকের হাউজবোটে ছিলাম। বুঝতে পারিনি কেন এ এলাকা ছাড়ার অনুরোধ করা হচ্ছে। এখানে তো সবই স্বাভাবিক’।

ভারতের উত্তর প্রদেশ থেকে আসা শ্রমিক মনজিৎ সিং ৯ বছর ধরে কাশ্মিরে কাজ করেন। রাজ্য সরকারের ঘোষণার পর তিনিও কাশ্মির ছেড়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি ভীত নই, কিন্তু সরকারের নির্দেশনা আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। আমার পরিবার আমাকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চায়। পরিস্থিতির উন্নতি হলে আমি ফিরে যাবো।’

তবে এরইমধ্যে শনিবার কাশ্মিরে পৌঁছেছে প্রায় ৬০ বিদেশি পর্যটক। বিদেশি পর্যটকদের জন্য আলাদা করে কোনও নির্দেশনা জারি করা না হলেও কাশ্মিরে ভ্রমণের ব্যাপারে তার দেশের নাগরিকদের নিরুৎসাহিত করেছে যুক্তরাজ্য ও জার্মানি। জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কাশ্মিরে অবস্থানরত জার্মানির নাগরিকদের জম্মু কাশ্মির ত্যাগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে কাশ্মির উপত্যকা ও অমরনাথ তীর্থযাত্রার পথ এড়িয়ে চলার কথা বলা হয়েছে।

টাঙ্গুয়ার হাওরে দেড় দশকেও গড়ে উঠেনি ইকো ট্যুরিজম সুবিধা
বাংলাদেশে হালাল ট্যুরিজমের অযুত সম্ভাবনা

আপনার মতামত লিখুন