শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
মতামত

নদীভিত্তিক পর্যটন বিকাশে প্রাণবন্ত এক নৌ ভ্রমণ

 এস এম আশিকুজ্জামান
২০ জানুয়ারি ২০১৯
 এস এম আশিকুজ্জামান

 এস এম আশিকুজ্জামান

নদীমাতৃক বাংলাদেশের নদী ও পানিভিত্তিক পর্যটনের বিকাশে হাজার লোকের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হলো প্রাণবন্ত এক নৌ ভ্রমণ।

বেসরকারি ট্যুর অপারেটর ‘টাচ ক্রিয়েশন লিমিটেড’ এর আয়োজনে কীর্তনখোলা-২ লঞ্চে ভেসে শুক্রবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বুড়িগঙ্গা-শীতলক্ষ্যা ও মেঘনার বুকে চলে এ নৌ ভ্রমণ।

দেশি- বিদেশী পর্যটক, গণমাধ্যমকর্মী ও আমন্ত্রিত অতিথিসহ প্রায় দেড় হাজার ভ্রমণ পিপাসুকে নিয়ে শুক্রবার সকালে রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে যাত্রা শুরু করে কীর্তনখোলা-২ লঞ্চ। নদীর দু-পাড়ের প্রকৃতির অনাবিল সৌন্দর্য দেখতে দেখতে মস্ত বড় এ লঞ্চ এগিয়ে যায় চাঁদপুরের মোহনার দিকে।

শীত সকালের শুরুতেই সবার হাতে পৌঁছে যায় গরম-গরম নাস্তা। আর নাস্তা করেই ভ্রমনকারীদের নানামুখী ব্যস্ততা শুরু হয়। কেউ সেলফি তুলেন, তো আবার কেউ আনমনে নদীর দিকে তাকিয়ে প্রকৃতির অনাবিল সৌন্দর্য দেখেন। আবার অনেকেই স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে লঞ্চের কেবিনের বাইরে মেতে উঠেন হাসি খুশির গল্প আড্ডায়।

এরই মধ্যেই পেরিয়ে যায় সাড়ে তিন ঘণ্টা। একসময় জুম্মার নামাজের জন্য লঞ্চ থামে চাঁদপুরের মোহনপুরে। নামাজের বিরতির পর লঞ্চ আবার ছাড়লে শুরু হয় দুপুরের খাবারের জম্পেশ আয়োজন। পেটপুরে খেয়ে-দেয়ে ভ্রমণকারীরা আবার ছড়িয়ে পড়েন লঞ্চের মধ্যে চলা নানা আনন্দ আয়োজনে। কেউ মেতে উঠেন লঞ্চের দোতলায় চলা সংগীত আয়োজনে। আবার কেউ কেউ উঠে পড়েন লঞ্চের খোলা ছাদে।

একসময় সূর্য ঢোলতে থাকে পশ্চিম আকাশে আর লঞ্চ মুখ ঘুরিয়ে ফিরতে থাকে সদরঘাট টার্মিনালের দিকে। তবে পড়ন্ত সূর্যের মিষ্টি আলোকে কাজে লাগিয়ে ভ্রমণকারীরা তুলতে থাকে ঝকঝকে সব ছবি। সে ছবি আবার মুহূর্তেই চলে যায় ফেসবুকের ওয়ালে-ওয়ালে। এত্ত সব রঙ-বেরঙের আনন্দের মাঝেই বিকেলে নাস্তা চলে আসে অতিথিদের টেবিলে- টেবিলে।

একসময় বিকেল গড়িয়ে প্রকৃতিতে নেমে আসে চিরচেনা সন্ধ্যা। হৈ হুল্লোড় আর নানা আনন্দ আয়োজন শেষ হয়। তবে আলো ঝলমলে সন্ধ্যায় কীর্তনখোলা-২ লঞ্চ যখন এসে পৌছায় সদরঘাট টার্মিনালে তখন ভ্রমণকারীদের চোখেমুখে ছিল আনন্দের রেশ। অনেকেই লঞ্চ থেকে নামতে নামতে বলছিলেন ‘এরকম নৌ ভ্রমণ মাঝে-মাঝে হওয়া দরকার, যাতে একটু প্রশান্তি মেলে।’

নৌ ভ্রমণ প্রসঙ্গে টাচ ক্রিয়েশন লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. মাহবুব হোসাইন সুমন চ্যানেল আই অনলাইকে বলেন, ‘দেশের নদী ভিত্তিক পর্যটনের প্রসারের জন্যই আমাদের এরূপ আয়োজন। যেমন, আমাদের আজকের এই ভ্রমণের অন্যতম উদ্দেশ্যই ছিল বুড়িগঙ্গা- শীতলক্ষ্যা ও মেঘনা নদী সম্পর্কে জানা-চেনা এবং নৌ ভ্রমণে আগ্রহ তৈরি করা। আমরা আগামীতে নদী ভিত্তিক আরো নানা আয়োজন করবো। সে সব আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে নদী ভিত্তিক পর্যটন আরো বিকশিত হবে। আর নদী ভিত্তিক পর্যটন বিকশিত হলে তা আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে।’

আজকের এ নৌ ভ্রমণে উপস্থিত ট্যুর অপারেটর এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব) এর ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মো: রাফিউজ্জামান চ্যানেল আই অনলাইকে বলেন, ‘আমাদের নদীগুলো দেশী বিদেশী পর্যটকদের আকৃষ্ট করার মত। কারণ, আমাদের নদীর দুই পাড়ে নানা বৈচিত্র্যপূর্ণ সৌন্দর্য ছড়িয়ে আছে। এই সব সৌন্দর্যকে কেন্দ্র করে আমাদের নৌ পর্যটন বিস্তার লাভ করতে পারে। আর সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা এবং বেসরকারি ট্যুর অপারেটরদের সমন্বয়ে বাংলাদেশ হতে পারে নৌ পর্যটনের এক সম্ভাবনাময় দৃষ্টান্ত।’

বিশ্বের নিরাপদ এয়ারলাইনসের তালিকায় বিমান বাংলাদেশ
নদীভিত্তিক পর্যটন বিকাশে অন্যরকম ভাসমান পর্যটন মেলা

আপনার মতামত লিখুন