বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
মতামত

এখন এরা মুক্ত বিহঙ্গ

জহির উদ্দীন তুহিন
০৩ জুলাই ২০২০

প্রত্যক জীবের জীবনে স্বাধীনতা একটি কাঙ্ক্ষিত মাহেন্দ্রক্ষণ। তেমনি সাদা বকগুলোর মুক্ত আকাশে ডানা মেলে উড়ে বেড়ানো ছিল কাঙ্ক্ষিত মাহেন্দ্রক্ষণ, কিন্তু বাদসাধে কিছু দুস্কৃতিকারী। গত ২৩ জুন নোয়াখালীর সর্বদক্ষিণে অবস্থিত স্বর্ণদ্বীপে থেকে ধবল বকের ডিম ফুটে বের হওয়া বাচ্চা গুলোকে চুরি করে নিয়ে যায় দুস্কৃতিকারীরা। সুবর্ণচরের ছমির হাট বাজার ও চরক্লার্ক বাংলাবাজারে বিক্রি উদেশ্য নিয়ে আসা হয় এগুলোকে। বাজারে বিক্রির করার সময় স্থানীয় সচেতন যুবক সবুজ হোসেন উপকূলীয় পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক ও স্থানীয় সংবাদকর্মী আবদুল বারী বাবলুকে জানান। আবদুল বারী বাবলু আমাকে সঙ্গে নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং পাখি শিকারীদের কাছ থেকে প্রায় শতাধিক বকের বাচ্চা উদ্ধার করে সুবর্ণচর উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করেন। সুবর্নচর উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি উপজেলা বন কর্মকর্তাকে জানায়। তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে বনরক্ষী পাঠিয়ে পাখি গ্রহণ করেন। পরে স্থানীয় এক কৃষকের নিকট বকের বাচ্চাগুলোকে সবল হয়ে উড়ে যাওয়া পর্যন্ত জিম্মায় রাখা হয়। বক পাখিদের খাবার হিসেবে প্রতিদিন ৫ কেজি করে ছোট কাঁচকি মাছের ব্যবস্থা করেন পাখিপ্রেমী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এএসএম ইবনুল হাসান ইভেন ও স্থানীয় উপকূল পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন। পরবর্তী ২৪ জুন থেকে ৩ জুলাই  দশ দিন লালন পালন করে আজ সকাল ১০টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অনুরোধে উপজেলা বন কর্মকর্তা ও রেঞ্জ কর্মকর্তা এবং স্থানীয় সংবাদ কর্মী আবদুল বারী বাবলু, গণমাধ্যকর্মী মোহাম্মদ শাখাওয়াত উল্ল্যাহসহ দুপুর ১টায় নোয়াখালীর স্বর্ণদ্বীপে প্রাকৃতিক অভয়ারণ্যে বক পাখির বাচ্চাগুলো অবমুক্ত করা হয়।

শিকারির হাত থেকে রক্ষা পেয়ে মুক্ত আকাশে উড়ল বক পাখি। জাল ও ফাঁদ পেতে পাখি ধরার পাশপাশি আরো কিছু নির্মম পদ্ধতিতে পাখি ধরা হয়৷ এরমধ্যে বিষ টোপ, ফাঁদ ও বড়শি দিয়ে পাখি ধরাও খুব নির্মম৷ ফাঁদ বা কামড়ি কল দিয়ে ধরার সময় পাখি গুরুতর আহত হয়৷ আর বিষ টোপে আক্রান্ত পাখি তো মুমূর্ষু  হয়েই ধরা পড়ে৷ এর বাইরে বন্দুক বা এয়ারগান দিয়েও পাখি শিকার করা হয়৷ বাংলাদেশে সব মিলিয়ে ৭০০ প্রজাতির পাখি আছে৷ পাখির প্রতি আগ্রহ নানাভাবে প্রকাশ পাচ্ছে৷ তারপরও পাখি কমছে, পাখি হারিয়ে যাচ্ছে৷ বিপন্ন হয়ে পড়ছে কোনো কোনো প্রজাতি৷ কেন এমন হচ্ছে? পাখির প্রতি মানুষের ভালোবাসা বাড়ুক। মানুষ সচেতন হোক। মানুষের সচেতনতাতেই মুক্ত আকাশে উড়ে বেড়াবে অসংখ্য পাখি। কিচির মিচির শব্দে মুখর হবে প্রকৃতি। 

কী দোষ দুধের শিশুটির, কেন এমন নিষ্ঠুরতা?
তারেক মোরতাজা— নেপথ্যের নায়ক

আপনার মতামত লিখুন