মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
গাঁও গেরাম

নোয়াখালীতে করোনা মোকাবেলায় করনীয় শীর্ষক ওয়েবিনার

চিকিৎসা প্রস্তুতি ও জনসচেতনতা সৃষ্টির তাগিদ

আরিফুর রহমান, নোয়াখালী
০৮ মে ২০২১

নোয়াখালী জেলায় করোনা সংক্রমন ব্যাপকতা ও স্বাস্থ্যসেবা সংকট মোকাবেলায় কভিড হাসপাতালে ৪টি আইসিইউ এবং আগামী জুন মাসে আরো ১০টি আইসিইউ বেড স্থাপন করা হবে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান ৪ মে নাগরিক অধিকার সহায়তা জোট ও এনআরডিএস আয়োজিত ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা জানান। এনআরডিএস এর নির্বাহী প্রধান আবদুল আউয়ালের সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন নাগরিক অধিকার জোট আহবায়ক এডভোকেট মোল্লা হাবিবুর রসুল মামুন।

ওয়েবিনারে সমীক্ষা প্রতিবেদনে প্রাপ্ত নাগরিকদের উদ্বেগ ও মতামত তুলে ধরে বলা হয়, যা নিম্নরুপঃ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল ও আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ সংলগ্ন হাসপাতালকে পূর্ণাঙ্গ কোভিড চিকিৎসা ইউনিট সহ উন্নয়ন করা দরকার। জেলা কোভিড হাসপাতালে আই.সি.ইউ ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও দক্ষ লোকবলের ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়াও বেগমগঞ্জ ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল দ্রুত চালু করার পদক্ষেপ গ্রহণ সহ উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোভিড-১৯ এ আক্রান্তদের জন্য চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও হাসপাতালসমূহে আই.সি.ইউ এবং উচ্চচাপের অক্সিজেনের ব্যবস্থা সহ উন্নত চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ করা প্রয়োজন। করোনা নিয়ে যে সব অপপ্রচার, গুজব প্রচলিত আছে তা প্রতিরোধে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সমূহের মাধ্যমে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। করোনা টীকা প্রদান কর্মসূচী উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র পর্যন্ত সম্প্রসারিত করা প্রয়োজন। কমর্হীন ও নতুন করে দরিদ্র হওয়া জনগোষ্ঠিকে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসুচির আওতায় আনার ব্যবস্থা করা এবং উপকারভোগী নির্বাচনে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং নাগরিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। ইউনিয়ন পর্যায়ে করোনা সনাক্তকরন পরীক্ষার ব্যবস্থা ও গণ টিকাদান কর্মসূচি চালু করতে হবে।


জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান তার বক্তব্যে বলেন, করোনা সংকট মোকাবেলায় সরকারের নির্ধারিত কর্মসূচিকে বাস্তবায়নের জন্য জেলা প্রশাসন কাজ করছে। অক্সিজেন এর চাহিদা বাড়ার কারনে প্রশাসন জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য জেলায় ৮০ শয্যার ডেডিকেটেড হাসপাতালে ২০ শয্যার আইসোলেশন ইউনিট এবং ৬০ শয্যার করোনা ইউনিট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বর্তমানে সাড়ে ৬০০ লিটারের ১১০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার কোভিড রোগীদের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে এবং ৬০ শয্যার প্রতিটির সাথে অক্সিজেন ব্যবস্থা যুক্ত করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন যে, ২২টি অক্সিজেন কন্সেট্রেটর এর মাধ্যমে বাতাস থেকে অক্সিজেন সংগ্রহ করে রোগীদের জন্য সরবরাহ করা হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ করোনা রোগীদের জন্য ৪টি আইসিইউ শয্যা চালুর প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে এবং আগামী ৬ মে, ২০২১ এ এটি চালু করা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। উপজেলা পর্যায়ে টেলি মেডিসিন কর্মসূচি চালু রাখার মাধ্যমে রোগীরা যেকোন সমস্যা নিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সাথে যোগাযোগ করতে সক্ষম হচ্ছেন। ইতিমধ্যে জেলার ৮৯ হাজার নাগরিক করোনা মোকাবেলায় গণটিকাদান কর্মসূচির ১ম ডোজ নিয়েছেন, যার মধ্যে ইউনিয়ন পর্যায়ের নাগরিক সংখ্যা ৪৮ হাজার। বর্তমানে জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে গণটিকাদান কর্মসূচি চালু থাকলেও সেটিকে ইউনিয়ন পর্যায়ে সম্প্রসারণ করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।

সিভিল সার্জন ডাঃ মাসুম ইফতেখার বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় আক্রান্তদের কোভিড পরীক্ষার নোয়াখালীর পূর্ণাঙ্গ সক্ষমতা রয়েছে। অন্যান্য জেলায় যেখানে ফলাফল পেতে ৪/৫ দিন সময় ব্যয় হয় সেখানে জেলায় ২টি ল্যাব যথাক্রমে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজের সর্বাধুনিক পিসিআর ল্যবের মাধ্যমে এক দিনেই পরীক্ষার ফলাফল দেওয়া হচ্ছে। 

ওয়েবিনারে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নারী অধিকার জোট সভাপতি লায়লা পারভীন, বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ, গণমাধ্যম কর্মী এবং নাগরিক ফোরাম বৃন্দ।

মহাকাশে প্রথম পর্যটকের ভ্রমণ অভিজ্ঞতা
যুক্তরাজ্যের ভ্রমণ তালিকা প্রকাশ, লাল তালিকায় বাংলাদেশ

আপনার মতামত লিখুন