শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
অর্থনীতি

ঈদে পর্যটন খাতে মন্দা কাটার আশা

নিজস্ব প্রতিবেদক
২১ এপ্রিল ২০২২

করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর বেশ মন্দা অবস্থায় পড়ে দেশের পর্যটন খাত। এখনো করোনার ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারেনি খাতটি। গত পহেলা বৈশাখ ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে টানা তিনদিনের ছুটিতেও কক্সবাজারে তেমন পর্যটক ছিলেন না। সমুদ্র সৈকতের দুয়েকটি পয়েন্টে কিছু সংখ্যক স্থানীয় পর্যটক দেখা গেলেও দূর-দূরান্ত থেকে আসেনি কোনো পর্যটক। 

তবে আসন্ন ঈদে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক সমাগম হবে বলে আশা করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। এতে চলমান মন্দা কাটানোর আশা করছেন তারা। এদিকে ইতিমধ্যে ঈদে আকাশপথে বাড়ি ফেরার টিকিট নেই। ঈদের আগের ১০ দিনের অগ্রিম টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না। কিছু টিকিট পাওয়া গেলেও সেগুলোর দাম সর্বোচ্চ।

চলমান করোনা মহামারিতে পর্যটন খাতে ৬০ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

বিভিন্ন ট্যুর অপারেটররা বলছেন, বাংলা নববর্ষকে বরণ করতে প্রতি বছর কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বিপুল পরিমাণ পর্যটকের সমাগম হলেও এবারের চিত্র ছিল ভিন্ন।

ট্যুর অপারেটরস আনোয়ার কামাল বলেন, পহেলা বৈশাখের তিনদিনের সরকারি ছুটিতে পর্যটক না আসায় হতাশ হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা। তবে আসন্ন ঈদে পর্যটক আসার সম্ভাবনা দেখছেন তারা। তাই ঈদে পর্যটক বরণের জন্য নানাভাবে আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছেন অনেকেই।

হোটেল-মোটেল মালিকরা জানান, রমজানের শুরু থেকেই কক্সবাজার ছিল পর্যটকশূন্য। হোটেল-মোটেল ও কটেজগুলোর বুকিংও শূন্য। একইসঙ্গে সব ধরনের খাবার হোটেলে ক্রেতা না থাকায় বেশিরভাগ হোটেল ও রেস্তরাঁ বন্ধ। মালিকদের প্রত্যাশা, আগামী ঈদে প্রত্যাশার বাইরে পর্যটক সমাগম ঘটবে। তথ্য অনুযায়ী কক্সবাজারে হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউজের সংখ্যা ৫১৬টি। এসব হোটেলে ধারণ ক্ষমতা প্রায় তিন লাখ পর্যটকের। অগ্রিম বুকিং শুরু হওয়ায় খুশি তারা।

হোটেল মালিক কলিম উল্লাহ বলেন, করোনা বড় ধরনের লোকসানে ফেলেছে ব্যবসায়ীদের। পর্যটন শিল্প ধরে রাখতে হলে পর্যটকদের গুরুত্ব দিতে হবে।

এদিকে কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্টের নাসির উদ্দিন জানান, গত দিনগুলোতে পহেলা বৈশাখে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ রুম বুকিং থাকতো। তবে এ বছর সেই চিত্র পুরোটাই ভিন্ন। আশা করছি ঈদে সেই খরা থাকবে না।

বিআইডিএস প্রতিবেদন অনুযায়ী, করোনায় পর্যটন খাতের ক্ষতি হয়েছে ৬০ হাজার কোটি টাকা। করোনা না হলে দেশের অর্থনীতিতে এই খাত মূল্য সংযোজন করতো প্রায় ১ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা। করোনা থাবার পরও অর্থনীতিতে এই খাতের অবদান প্রায় ৯৫ হাজার কোটি টাকা। ফলে ক্ষতি হয়েছে ৬০ হাজার কোটি টাকা। আর এই সময়ে কাজ হারিয়েছে ১ লাখ ৪১ হাজার শ্রমিক। প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনায় পর্যটন খাতের অন্যতম কয়েকটি উপ-খাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে পরিবহন সংস্থার। এ উপ-খাতের ক্ষতি ২৪ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা। এ ছাড়া হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট ব্যবসায় ক্ষতি ১৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। ট্রাভেল এজেন্টের ১ হাজার ৫২০ কোটি টাকা, ট্যুর অপারেটরদের ২৪০ কোটি টাকা এবং রেস্টুরেন্টের ক্ষতি ১৫ হাজার ১৭০ কোটি টাকা। সেইসঙ্গে অন্যান্য (টোটা) ক্ষেত্রে ক্ষতি হয়েছে ১ হাজার ১৮০ কোটি টাকা। এখান থেকে পুনরুদ্ধার সরকারের সহায়তা ছাড়া অসম্ভব।

বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন বলেন, পর্যটন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পুরো শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ক্ষতির মুখে পড়েছে। যদিও এর পেছনে অন্য কারণও আছে। তারপরও বাংলাদেশের উচিত শ্রীলঙ্কা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে পর্যটন খাত পুনরুদ্ধারে ব্যবস্থা নেয়া। করোনার সময় প্রণোদনার সুবিধা পেয়েছে পোশাক খাত। পর্যটন খাত পেলে এত শ্রমিক কাজ হারাতো না।

ওয়ালটন ফ্রিজ কিনে লাখ লাখ টাকা ও ৭৫ হাজার পণ্য ফ্রি পেলেন ক্রেতারা
সুবর্ণচরে বিদ্যুতের ছেঁড়া তারে মা-ছেলের মৃত্যু

আপনার মতামত লিখুন