আরও ৫ কিস্তি ক্রেতার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিলো ওয়ালটন প্লাজা

ওয়ালটন প্লাজার ‘কিস্তি ক্রেতা ও পরিবার সুরক্ষা নীতির’ আওতায় বিশেষ আর্থিক সহায়তা পেয়েছে আরও ৫ গ্রাহক পরিবার। এসব পরিবারের বাকি কিস্তির টাকাও মওকুফ করেছে ওয়ালটন প্লাজা কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি পরিবারগুলোর ৫ জন সদস্যের মৃত্যু হওয়ায় এ সুবিধা পেয়েছেন তারা।
পরিবারের পক্ষ থেকে সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট ওয়ালটন প্লাজার আর্থিক সহায়তা গ্রহণ করেছেন চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার মৃত ক্রেতা সাকিব উদ্দীনের বাবা মো. ইলিয়াস, সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার মৃত ক্রেতা কামাল পারভেজের ভাই আশিক মিয়া, গাজীপুর কালিয়াকৈরের মৃত ক্রেতা মোসলেম উদ্দীনের স্ত্রী রোজিনা বেগম, রাজধানী ঢাকার ধলপুরের গ্রাহক পরিবারের সদস্য মৃত আনোয়ারা বেগমের স্বামী মনির হোসেন এবং ঢাকার লালবাগের মৃত ক্রেতা মোসা. সীমা’র মা মঞ্জু বেগম।
উল্লেখ্য, কিস্তিতে পণ্য কেনা গ্রাহকদের জন্য ‘কিস্তি ক্রেতা ও পরিবার সুরক্ষা নীতি’ সুবিধা দিচ্ছে ওয়ালটন প্লাজা। এর আওতায় দেশের যেকোনো ওয়ালটন প্লাজা থেকে কিস্তিতে পণ্য ক্রয়কারীদের কিস্তি সুরক্ষা কার্ড দেওয়া হচ্ছে। কিস্তি চলমান অবস্থায় ক্রেতার মৃত্যু হলে পণ্যমূল্যের ভিত্তিতে ৫০ হাজার থেকে ৩ লাখ এবং তার পরিবারের কোনো সদস্য মারা গেলে ২৫ হাজার থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত সহায়তা দিচ্ছে ওয়ালটন প্লাজা। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পণ্যের অনাদায়ী কিস্তির টাকা সমন্বয়ের পর অবশিষ্ট টাকা ক্রেতা বা তার পরিবারকে দেওয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৪ ডজন ক্রেতাকে এই আর্থিক সহায়তা দিয়েছে ওয়ালটন প্লাজা।
বৃহস্পতিবার (১৮ মে, ২০২৩) সাতকানিয়া এবং ছাতক ওয়ালটন প্লাজায় আনুষ্ঠানিকভাবে মো. ইলিয়াস এবং আশিক মিয়ার হাতে ৫০ হাজার করে টাকা দেন ওয়ালটনের কর্মকর্তারা। পৃথকভাবে আয়োজিত এসব অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাতকানিয়া পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ জোবায়ের, কাউন্সিলর আরাফাত উল্লাহ, ওয়ালটনের চিফ ডিভিশনাল অফিসার শফিকুল আজাদ, ডিভিশনাল ক্রেডিট ম্যানেজার (ডিসিএম) হুমায়ুন কবির হিমু এবং মাকসুদ আলমসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
অপরদিকে, মঙ্গলবার (১৬ মে) পৃথক দুই অনুষ্ঠানে হরিণহাটি ও সায়েদাবাদ ওয়ালটন প্লাজা থেকে ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেন যথাক্রমে রোজিনা পারভীন এবং মনির হোসেন। এছাড়া গত শনিবার চকবাজার ওয়ালটন প্লাজায় ৫০ হাজার টাকার আর্থিক সুবিধা তুলে দেওয়া হয় মঞ্জু বেগমের হাতে। এসব অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটনের ডিসিএম সুমন চন্দ্র বসাক, রিজিওনাল সেলস ম্যানেজার আসিফ উন নবী ও আব্দুল মজিদ, রিজিওনাল ক্রেডিট ম্যানেজার মীর মোহাম্মদ ইয়াদ আলী ও আরিফুর রহমানসহ ওয়ালটনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাগণ।
জানা গেছে, নিজ নিজ এলাকার ওয়ালটন প্লাজা থেকে ওয়ালটনের এলইডি টিভি, পানির পাম্প, ফ্রিজার ও মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য কেনেন এসব গ্রাহক। পণ্য কেনার পর অসুস্থতাজনিত কারণে তারা মারা যান। গ্রাহকের মৃত্যুতে অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে ওয়ালটন। মওকুফ করা হয়েছে বাকি কিস্তির সব টাকা। দেওয়া হয়েছে বাড়তি আর্থিক সুবিধা।
রোজিনা বেগম জানান, চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি তারিখে ওয়ালটন প্লাজা থেকে কিস্তিতে ওয়ালটনের একটি স্মার্ট এলইডি টিভি কিনেছিলেন তার স্বামী। টিভি কেনার পর এপ্রিলের ৪ তারিখে ক্যান্সারে অসুস্থ হয়ে তার স্বামী মারা যান। ওয়ালটন থেকে কেনা টিভির কিস্তির টাকা পরিশোধ করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছিলেন তিনি।
রোজিনা বলেন, কিস্তিতে টিভি কেনার একদিন পর আমার স্বামীর মৃত্যু হলে বিষয়টি ওয়ালটন প্লাজায় জানাই। তারা আমাকে কিস্তির টাকা মওকুফ করে দেন। এছাড়া, নগদ আর্থিক সহায়তাও দিয়েছেন। ওয়ালটনের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।
আর্থিক সহায়তা গ্রহণ করে মো. ইলিয়াস বলেন, আমি আমার ছেলেকে হারিয়েছি। তাকে তো আর পাবো না। কিন্তু, ওয়ালটন প্লাজা কিস্তির টাকা মওকুফের পর যে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে, তা আমার পরিবারের অনেক কাজে আসবে। এই সহায়তার কথা আমি কখনো ভুলব না।
সাতকানিয়া পৌর মেয়র মো. জোবায়ের বলেন, সব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সবার আগে তার নিজেদের প্রোফিট বিবেচনা করে। ওয়ালটন এখানে ব্যতিক্রম। তারা ব্যবসার পাশাপাশি ক্রেতাদের নানা সুবিধা দিয়ে থাকে। কিস্তি ক্রেতা সহায়তা নীতি ওয়ালটনের এমনই একটি দারুণ উদ্যোগ। অন্যসব কোম্পানির জন্য তা অনুকরণীয় হতে পারে। এসব উদ্যেগ হাতে নেওয়ার জন্য ওয়ালটন কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ।
আপনার মতামত লিখুন