সরকারকে ২ লাখ পিস করোনা চিকিৎসার ওষুধ দিল রেডিয়েন্ট

করোনাভাইরাসজনিত রোগের (কোভিড-১৯) এখন পর্যন্ত নিশ্চিত কোনো ওষুধ নেই। তবে থেমে নেই চিকিৎসক ও গবেষকেরা। ধনী-গরিব সব দেশ হন্যে হয়ে করোনার ওষুধ খুঁজছে। নিরন্তর গবেষণা হচ্ছে কার্যকর ওষুধ তৈরির জন্য। পরীক্ষামূলক ওষুধ তৈরিও হচ্ছে। এ থেকে পিছিয়ে নেই বাংলাদেশের অন্যতম ওষুধ কোম্পানি রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস। বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় যেসব ওষুধ পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে, সেসব ওষুধই তৈরি করছে দেশীয় এই ওষুধ কোম্পানি। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসজনিত রোগ কভিড-১৯ চিকিৎসায় সহায়ক ভূমিকা রাখছে ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন। সরকারকে বিনামূল্যে এ ওষুধ সরবরাহ করেছে রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস।
বুধবার ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের (ডিজিডিএ) মাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুদান হিসেবে দুই লাখ এক হাজার ৬০০ পিস হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ট্যাবলেট হস্তান্তর করে রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস।
রাজধানীর মহাখালীতে ডিজিডিএ কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমানের কাছে ওষুধগুলো হস্তান্তর করেন রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসরুর আহমেদ। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির বিপণন বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. আশরাফুল আলমসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে আশরাফুল আলম বলেন, কভিড-১৯ মোকাবেলা সব দেশের জন্যই চ্যালেঞ্জিং। যেকোন দেশেই সরকারের একার পক্ষে এতো বড় একটি সংকট মোকাবিলা করা কঠিন। এ উপলদ্ধি থেকেই রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। রেডিয়েন্টে প্রদত্ত ওষুধ করোনাভাইরাস প্রতিরোধ যুদ্ধে কিছুটা হলেও সহায়ক হবে বলে আমাদের বিশ্বাস। উন্নত বিশ্বে যেসব ওষুধ কোভিড-১৯-এর চিকিৎসায় কার্যকরভাবে ব্যবহৃত হবে, তার সব কটি এ দেশের মানুষের জন্য রেডিয়েন্টে প্রস্তুত করবে। দেশের এই সংকটময় মুহূর্তে আমাদের জনগণের জন্য কার্যকরী ওষুধ সরবরাহ রাখতে আমরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করছি।
দেশে কভিড-১৯ সংক্রমণ শুরুর পর থেকে এটি প্রতিরোধে রেডিয়েন্ট নানা উদ্যোগ চালিয়ে যাচ্ছে বলে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ জানানো হয়। এসব উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে দেশব্যাপী চিকিৎসকদের মাঝে ছয় হাজার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সরঞ্জাম (পিপিই) ও পাঁচ হাজার উন্নতমানের মাস্ক বিতরণ এবং চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মাঝে প্রায় ২০ হাজার হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ।
উল্লেখ্য, কভিড-১৯ মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে গোটা বিশ্ব। উন্নত, উন্নয়নশীল, স¦ল্পোন্নত- সবধরনের দেশই এ ভাইরাসের কবলে দিশেহারা। এ পর্যন্ত ভাইরাসটির সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে দুই শতাধিক দেশ ও অঞ্চলে।
কিন্তু এখনো পর্যন্ত এ ভাইরাসজনিত রোগ নিরাময় বা প্রতিরোধে নির্দিষ্ট কোন ওষুধ ও প্রতিশেধক আবিষ্কৃত হয়নি। তবে দু-একটি ওষুধ কভিড-১৯ চিকিৎসায় ফলদায়ক হয়েছে বলে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন। এর মধ্যে একটি ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন। এছাড়া ইবোলা ভাইরাস প্রতিরোধে ২০১৪ সালে আবিষ্কৃত হয়েছিলো ফেভিপিরাভির।
এটিও কভিড-১৯ চিকিসায় কাজে দিচ্ছে বলে বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। এর ধারাবাহিকতায় দেশীয় প্রতিষ্ঠান হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন উৎপাদন শুরু করেছে। সরকারকে সরবরাহের পাশাপাশি অনুমোদন সাপেক্ষে ওষুধটি বাজারে ছাড়া হবে বলে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানাননো হয়। এছাড়া আগামী মাস থেকে কোম্পানিটি ফেভিপিরাভির উৎপাদনও শুরু করবে বলে জানা গেছে।
আপনার মতামত লিখুন