মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪ | ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
জাতীয়

ইটস হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন : জীবন পরিবর্তনের এক যুগ পূর্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক
০৭ জুন ২০২২

ইটস হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন (আইএইচএফ)-এর প্রধান কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠানটির ১২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়। এই অসাধারণ একটি মুহূর্তের সহভাগী করার জন্য প্রতিষ্ঠানটির পার্টনার, স্টেকহোল্ডার, পুরোনো ও নতুন সকল সদস্যদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। 

একইসাথে দেশের বিভিন্ন জেলায় আইএইচএফ-এর ৮ স্কুল শাখায় সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও হাতেখড়ি যুবপ্রশিক্ষণ প্রকল্পের প্রশিক্ষণার্থী ও অন্যান্য মাঠকর্মীদের নিয়ে একযোগে উদযাপন করা হয় ১২ বছরের এই আনন্দঘন মুহূর্ত। এছাড়াও, আইএইচএফ-এর অন্যতম 'প্রতিভা' নামক নারীর ক্ষমতায়ন প্রকল্পের সকল প্রশিক্ষণার্থী নারীদের নিয়ে দিনটি জাঁকজমকভাবে পালন করা হয়। একযুগ পূর্তিতে আইএইচএফ তার সকল সমর্থক, সদস্য এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন যাদের সমর্থন, উত্সাহ ও সহযোগিতা ছাড়া এতগুলো বছর পেরিয়ে জীবন পরিবর্তনের নতুন একটি দিগন্তে পৌঁছানো কখনোই সম্ভব ছিল না। 

রাজধানীর মহাখালী ডিওএইচএস-এ আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন  আইএইচএফ -এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মো. আদনান হোসেন। আয়োজনে তিনি তার বক্তব্যের মাধ্যমে সংগঠনটির বিগত ১২ বছরের যাত্রার অসাধারণ অভিজ্ঞতাগুলো তুলে ধরেন। সেইসাথে আইএইচএফ সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত  ভিডিও-এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি কিভাবে এতগুলো বছর ধরে বিভিন্ন প্রোগ্রাম ও প্রজেক্ট পরিচালনা করে আসছে তা উপস্থাপনা করা হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সকল অতিথিদের নিয়ে কেক কেটে ১যুগ পূর্তির এই স্মরণীয় দিনটি উদযাপন করা হয়। সবশেষে অতিথিদের মধ্যে মতবিনিময়ের মাধ্যমে আনন্দঘন অনুষ্ঠানটির সমাপ্তি হয়। এই বিশেষ দিনটিকে কেন্দ্র করে, আইএইচএফ জীবন পরিবর্তনের ১২ বছরের এই অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে একটি ম্যাগাজিন প্রকাশ করেছে। 

বিগত ১২ বছর ধরে, বিভিন্ন প্রতিকূলতার মাঝেও আইএইচএফ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিশুদের  জন্য মানসম্পন্ন শিক্ষা আরো বেশি সহজলভ্য করার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে। 

ইট্স হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন (আইএইচএফ) একটি নিবন্ধিত অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিশুদের বিনামূল্যে মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে তাদের ভবিষ্যতকে উন্নত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে, সারা বাংলাদেশে আইএইচএফ ৮টি স্কুল রয়েছে যার মধ্যে রয়েছে 'লার্নিং ডিসএবল' শিশুদের জন্য একটি বিশেষ স্কুল এবং পথশিশুদের জন্য একটি ডিজিটাল মোবাইল স্কুল, যেখানে বিনামূল্যে শিক্ষার পাশাপাশি সহপাঠ্যক্রমিক, পাঠক্রমবহির্ভূত শিক্ষা, বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা, স্বাস্থ্যকর খাবার  প্রদান করা হয়। বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্তে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিশুদের জন্য শিক্ষাকে সহজলভ্য করার লক্ষ্যে, আইএইচএফ শুধুমাত্র শহর বা গ্রামেই নয়, রংপুরের কোলকোন্দ চর এলাকাতেও একটি স্কুল পরিচালনা করছে যেখানে শিশুদের জন্য আশেপাশে আর কোনো স্কুল নেই। 

২০১০ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে, আইএইচএফ বাংলাদেশে প্রায় ২০০০ জনেরও বেশি শিশুর জন্য বিনামূল্যে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ তৈরী করেছে। এসব এলাকার শিশুরাও যাতে তাদের স্বপ্ন দেখার সাহস করতে পারে, এজন্য আইএইচএফ স্কুলের পাঠ্যক্রম সাঁজানো হয়েছে ইনক্লুসিভ করে এবং শিশুদের শেখানোর ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিক শিক্ষাপদ্ধতির পাশাপাশি ব্যবহার করা হচ্ছে ইন্টারেক্টিভ বিভিন্ন পদ্ধতির। প্রতিষ্ঠানটির মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রকল্প 'অঙ্কুর' এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং স্বাস্থ্যকর খাবার কর্মসূচির মাধ্যমে নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ নিশ্চিত করে আসছে। এছাড়াও আইএইচএফ এর প্রতিটি স্কুলে শিশুদের পাঠ্যক্রম বহির্ভূত কার্যক্রম যেমন: খেলাধুলা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, বিজ্ঞান মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে অংশগ্রহণের জন্যও উৎসাহিত করা হয়।

শিশুদের স্কুলে আগ্রহী করার জন্য এবং শিশুশ্রম থেকে দূরে রাখার জন্য, প্রতিষ্ঠানটি এর 'প্রতিভা' নামক জীবিকা কর্মসূচী প্রকল্পের মাধ্যমে এই শিশুদের মায়েদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরী করেছে যার মাধ্যমে নারীরা বিনামূল্যে সেলাই এবং কারুশিল্পের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে নিজেরাই স্বাবলম্বী হতে পারে। সেন্টার ফর ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট (সিএফওয়াইডি) নামে আরেকটি যুব উন্নয়ন প্রোগ্রাম রয়েছে যার মাধ্যমে বাংলাদেশের যুবসমাজ ব্যক্তিগত এবং পেশাদারী দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে জনশক্তি হিসেবে দেশকে তুলে ধরার জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও পরামর্শের সুযোগ পাচ্ছে।  

এই প্রোগ্রামগুলোর মাধ্যমে, আইএইচএফ ১ যুগ ধরে কাজ করে চলেছে জীবন পরিবর্তনের এক অসাধারণ অঙ্গীকার নিয়ে। 

দক্ষিণ কোরিয়ায় ওয়ালটনের রিসার্চ সেন্টার চালু
শেষ হলো অপেক্ষা, পাওয়া যাচ্ছে ভিভো এক্স৮০ ৫জি

আপনার মতামত লিখুন