রোববার, ০৫ মে ২০২৪ | ২২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ইভেন্ট

ভ্রমণকে আরও আরামদায়ক করছে গোযায়ান

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৪ মার্চ ২০২২

বিগত দুই বছরের টানা বিধিনিষেধ এবং লকডাউনের পরে জীবন ধীরে ধীরে গতিতে ফিরে যাচ্ছে। দেশ বিদেশের মহামারি সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আশপাশে ভ্রমণের আমেজ আবার ছড়িয়ে পড়েছে চারিদিকে। তবে ভ্রমণ ব্যাপারটা মহামারির কারণে মাঝে বেশ অনিশ্চিত হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ভ্রমনপিপাসুদের সার্বক্ষণিক পরিবর্তনশীল চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিত্যনতুন সব সমাধান দিয়ে যাচ্ছে ট্রাভেল বুকিং কোম্পানি গোযায়ান। কিছুদিন আগেই প্রতিষ্ঠানটি ব্যবহারকারীদের কাছে নিয়ে এসেছে তাদের নতুন রূপ। নতুন লোগোর সঙ্গে তারা আগামী প্রজন্মের পর্যটকদের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি আনার প্রতিজ্ঞাও এনেছেন।

বিদেশ ঘুরতে যাওয়ার ব্যাপারটা বিগত ২০২০ সালে ছিল প্রায় অসম্ভব। মহামারির জন্য মানুষের জীবন ও জীবিকা উভয়ই প্রভাবিত হয়েছে। কয়েক ট্রিলিয়ন ডলার মূল্যের পর্যটন শিল্প রাতারাতি থমকে দাঁড়িয়েছিল এই মহামারির কারণে। অথচ অত্যন্ত কঠিন সময়ের মধ্যেও গোযায়ান-এর কার্যক্রম বেড়েছে প্রায় ১০ গুণ। শুধুমাত্র তৎকালীন চাহিদার ওপর মনোযোগ দেওয়াতেই প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে এতদূর আসা সম্ভব হয়। লকডাউনের মধ্যে কোম্পানিটি শুধুমাত্র জরুরি ভ্রমণ আরও নিরাপদ করার ওপর জোর দেয়। টিকেট বুকিংয়ের জন্য যেহেতু ঝামেলা নিয়ে লাইনে দাঁড়াবার প্রয়োজন পড়বে না, তাই গোযায়ান থেকে বুকিংয়ের প্রক্রিয়াটি এখন বেশ নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ।

ধীরে ধীরে লকডাউনে শিথিল হওয়া শুরু করলে, আবারও ভ্রমণ শুরু হয়। তবে তখনও জীবনধারা পুরোপুরি সচল হয়ে ওঠেনি। ভ্রমণ পূর্বকালীন প্রক্রিয়াটা ছিল বেশ কষ্টদায়ক। তাই অল্প দূরত্বের মধ্যে শহরের আশপাশের হোটেল এবং রিসোর্টগুলোর চাহিদা তখন তুঙ্গে। কক্সবাজার, সাজেক ইত্যাদি জনপ্রিয় ট্যুরিস্ট গন্তব্যগুলো তখনও বিধিনিষেধে আবদ্ধ হওয়ায় শহরের কাছাকাছি নিরিবিলি পরিবেশে কিছুটা সময় কাটাতে মানুষ বেশি ইচ্ছুক ছিল। গোযায়ান এই চাহিদা শুরু থেকেই বুঝতে পেরে নিজেদের সেইভাবে প্রস্তত করেছে। আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের পর তারা মনোনিবেশ করে আভ্যন্তরীণ ফ্লাইট এবং হোটেলের দিকে। বন্ধ হওয়ার পথের কিছু স্থানীয় ব্যবসা গোযায়ানের কল্যাণে আবার প্রাণ ফিরে পায়। ডিজিটাল জগতে উপস্থিতির খাতিরে তাদের প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসার লাভও বাড়তে থাকে। আভ্যন্তরীণ ভ্রমণের অনেক খুঁটিনাটি সমস্যাই আমরা ভুলে থাকি। সেইসব সমস্যাকেও সমাধান করার উদ্যোগ নেয় গোযায়ান। সব রকমের ভ্রমণের সমস্যার জন্য তাদের প্রযুক্তিগত সমাধান বের করে সামগ্রিকভাবে ভবিষ্যতের ভ্রমণকে একটি উন্নত রূপদান করছে।

সময়ের সঙ্গে খুলে গেল আন্তর্জাতিক ভ্রমণের রাস্তা। বাস, ফ্লাইট, হোটেল এবং ট্যুর- চারটি সেবা নিয়ে কাজ করতে থাকা গোযায়ান এই সুযোগে নতুন উদ্যমে সেবাগুলো উন্নয়নের কাজে লেগে পড়ে। উদ্ভাবনের প্রতিশ্রুতি অনুসরণে নতুন নতুন সেবা দেখা যেতে লাগল গোযায়ানের প্ল্যাটফর্মে। ভ্রমণ বীমা, গো-সেফ, কভিড টেস্ট ইত্যাদি সব সুবিধাই তাদের প্ল্যাটফর্মে পাওয়া যায়। বেশির ভাগ দেশেই এই সময়ে বিশাল প্রক্রিয়া পার হয়ে ভিসা বানানোর প্রয়োজন হয়। এসব সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যেই গোযায়ান ভ্রমণ বীমা সেবা চালু করে। ভ্রমণকারীদের নিরাপত্তা রক্ষার্থে মাত্র ১০ টাকার ইনস্যুরেন্স কিনেই এক লাখ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পেতে পারবে যেকোনো গ্রাহক। বিদেশ ভ্রমণে কভিড হওয়ার ক্ষেত্রেও এই নীতি প্রযোজ্য। এছাড়াও সরকার অনুমোদিত ল্যাবগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে কোম্পানিটি বিদেশি ফ্লাইটের টিকিট কেনার সঙ্গে সঙ্গে কভিড টেস্ট কেনা সম্ভব করে। সব দেশের নতুন নতুন বিধিনিষেধের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য শুরু হয় তাদের গো সেফ প্রোগ্রাম। দৈনন্দিন এবং সর্বমোট করোনা কেস, বিদেশ ভ্রমণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ইত্যাদি সবই পেয়ে যাবেন তাদের ওয়েবসাইটে।

উদ্ভাবনের প্রতিশ্রুতি অনুসরণে কোম্পানিটি আরও দূর দূরান্তে গেছে। নতুন সব ভাবনা বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে এনে গেছে বিগত কয়েক বছর ধরেই। সাম্প্রতিক তারা বিদেশ ভ্রমণের প্রক্রিয়াটা আরও সহজ করতে যোগ করেছেন বাড়তি কিছু সেবা। বাংলাদেশে যা আগে সম্ভব ছিল না, তা এখন সম্ভব এই সেবার মাধ্যমে। আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে ওঠার আগেই এখন গ্রাহকরা নিজেদের সিট পছন্দ করে নিতে পারবেন। এছাড়াও আছে অতিরিক্ত ব্যাগেজ নেওয়া, ফ্লাইটে খাবার পছন্দ করা ইত্যাদি সুযোগ সুবিধা। বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের মাত্র পাঁচ শতাংশ নিয়ে কাজ করেই তারা ইতোমধ্যে একটি বিদেশি কোম্পানি অধিগ্রহণ করতেও সক্ষম হয়েছে। বর্তমানে কোম্পানির লোগো বদলে একটি উৎসুক পাখির ছায়াচিত্র যোগ করেছেন কোম্পানির নামের সঙ্গে। তাদের প্রতিনিয়ত উদ্ভাবনের কৌতূহলের সূচক এই পাখিটি। ভবিষ্যতে আরও অনেক নতুন উদ্ভাবন বাংলাদেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দেবার আশা দিয়েছেন তারা।

প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল ভ্রমণের রাজ্যে স্থির থাকার কোনো সুযোগ নেই। সমসাময়িক প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে তারা বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে বিভিন্ন পরিবর্তন এনেছে, ভবিষ্যতেও আনবে। সমগ্র পর্যটন সমস্যার জন্য তারা একটি সামগ্রিক সমাধান হয়ে দাঁড়াবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে। ভ্রমণের বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গেই, বিবর্তিত হবে গোযায়ানও।


৫০ বছরের ভাঙন এলাকা এখন পর্যটন কেন্দ্র
চট্টগ্রাম-নেপাল সরাসরি ফ্লাইট চালু এপ্রিলে

আপনার মতামত লিখুন