বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ঘুরে আসি

জেনে নিন যে দশ কারণে ইরান ভ্রমণ করবেন !!

অনলাইন ডেস্ক
২১ অক্টোবর ২০১৯

বিশ্বে বর্তমানে ১৯৬টি দেশ রয়েছে। এসব দেশে রয়েছে মন জুড়ানো অসংখ্য পর্যটন কেন্দ্র। সঙ্গত কারণেই আপনাকে সীমিত সময়ে বেশি বেশি জায়গা ভ্রমণ করতে হবে। তাই আকর্ষণীয় পর্যটন গন্তব্য বাছাই করতে জানা বেশ গুরুত্বপূর্ণও বটে। এমনকি সবচেয়ে ভ্রমণপটু ব্যক্তিদেরও ভালো নির্বাচক হতে হবে। সুতরাং ভ্রমণের জন্য কেন অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ইরানকে বেছে নেবেন চলুন তা দেখে নেওয়া যাক। বিশেষ করে যখন ইরানি পর্যটনের বিরুদ্ধে নেতিবাচক কিছু সংবাদ ও মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হচ্ছে তখন আপনাকে এই বিষয়গুলো জানা বেশ জরুরি। ইরানকে সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্যটন গন্তব্য হিসেবে কেন বেছে নেবেন নিচে তার দশটি কারণ তুলে ধরা হলো। যা আপনাকে সন্দেহাতীতভাবে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে।

১। ইরানিদের আতিথিয়েতা আপনাকে মুগ্ধ করবে: ইরানে বহুলপ্রচলিত একটা কথা আছে যে, ‘‘অতিথিকে ক্ষোদা ভালোবাসেন’’। পারস্য সংস্কৃতিতে সত্যিকারে এমনটাই বিশ্বাস করা হয়। পর্যটক হিসেবে গেলে তাদের সেই প্রথাগত আতিথিয়েতা আপনাকে অন্যরকম অনুভূতি এনে দেবে। বিদেশিদের প্রতি ইরানিদের সেই মহানুভবতা যে কাউকে সহজেই অভিভূত করবে। তারা তাদের দেশে অতিথিদের বেশ উষ্ণভাবেই স্বাগত জানাতে ভালোবাসেন। ইরান ভ্রমণে এই বাড়ি, সেই বাড়ি থেকে আতিথিয়েতার আমন্ত্রণ পাবেন। যা আপনাকে রীতিমতো অবাক করবে।

২। অন্যতম সাশ্রয়ী খরচের পর্যটন গন্তব্য ইরান: যেমন স্বল্প খরচে ইরান ভ্রমণ করতে পারবেন। তেমনি এখানে প্রচুর পরিমাণে খরচ করার বহু জায়গা আছে। তাই স্বামর্থ থাকলে সীমাহীনভাবে খরচ করতে পারেন। আপনি চাইলে তিনশ বছরের প্রাচীন বিলাসবহুল প্রাসাদে থাকতে পারেন। আবার চাইলে ‘ব্যাকপ্যাকিং’ ও ‘হিচহাইকিং’ পর্যটক হয়ে স্বল্প খরচে ভ্রমণ সারতে পারেন। তবে যেটিই বেছে নেননা কেন একই ধরনের অন্যান্য যে কোনো দেশের তুলনায় আপনি কম খরচে ইরান সফর শেষ করতে পারবেন।

উল্লেখ্য, ‘ব্যাকপ্যাকিং’ হচ্ছে কম খরচে স্বতন্ত্র ভ্রমণের একটি মাধ্যম; পাবলিক পরিবহন ব্যবহার করা, একদম সস্তা হোটেলে থাকা, যা ইচ্ছে তা-ই খাওয়া। সব ধরনের পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নেয়া একজন ব্যাকপ্যাকার্সের বৈশিষ্ট। আর সাধারণত রাস্তায় কোন চলন্ত গাড়িকে আঙ্গুলের ইশারায় থামিয়ে সেই গাড়িতে বিনামূল্যে ভ্রমণ করাকেই হিচহাইক বা হিচহাইকিং বলা হয়। এই ধরনের ভ্রমণের সুযোগ বাংলাদেশে না থাকলেও ইরানের মতো বিভিন্ন জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্যের দেশে রয়েছে।

৩। এক ভ্রমণে সব মৌসুমের অভিজ্ঞতা লাভের সুযোগ: ভৌগলিকভাবে ইরান বৈচিত্র্যময় এক ভূমি। এক সফরে এসে এখানে আপনি বিভিন্ন আবহাওয়া উপভোগ করার সুযোগ পাবেন। আপনি আলবোরজ পর্বতের ঢালে স্কিইং উপভোগ করতে পারবেন। আবার একইদিনে অভ্যন্তরীণ কোনো ফ্লাইট ধরে পারস্য উপসাগরের রোদেলা সৈকতে কিছু সময় উষ্ণতা উপভোগ করতে পারেন।

৪। সময় মতো ভ্রমণ করতে পারবেন: সুপ্রাচীন ইতিহাসের সাথে ইরানের নাম সবসময়ই অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। দেশটির ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান, পৌরাণিক কথা, আখ্যান যে কোনো পর্যটককে মুগ্ধ করে। উত্তরপূর্ব শিরাজ প্রদেশের অসাধারণ প্রাচীন শহর পারসেপোলিস থেকে শুরু করে প্রাচীন মানববসতিসহ দেশটির সকল দর্শনীয় স্থান দেখে বিস্মিত হবেন আপনি।

৫। লোভনীয় বিভিন্ন ফারসি খাবার এনে দেবে অন্য রকম তৃপ্তি: ইরান ভ্রমণে জীবনযাত্রায় অন্যরকম একটা দিন যুক্ত করতে পারেন। আর সেটা করতে পারেন নতুন নতুন খাবারের স্বাদ আস্বাদনের মাধ্যমে। পারস্য রন্ধনশালায় এসে খাবারের পরিপূর্ণ তৃপ্তি লাভ করতে পারবেন যা কখনও ভোলার নয়। কারণ এখানে রয়েছে অসংখ্য বৈচিত্র্য রকম স্বাদ ও রুচির খাবার। যার প্রত্যেকটি একে অপরের চেয়ে স্বাদ ও গন্ধে সম্পূর্ণ ভিন্ন।

৬। ইরান বাস্তবিকপক্ষে নিরাপদ: পশ্চিমা বিভিন্ন মিডিয়ায় ইরানকে নেতিবাচকভাবে চিত্রায়িত করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু বাস্তবে তার সম্পূর্ণ বিপরীত। বিশ্বে পর্যটকদের জন্য ইরান অন্যতম নিরাপদ দেশ। এটা কেবল ফাঁকা বুলি নয়, চাক্ষুস তার প্রমাণ পাবেন। ইরান ভ্রমণ করা যে কোনো পর্যটকই দেশটির নিরাপত্তা ব্যবস্থায় অবিভভূত হোন।

৭। সহজ ও কম খরচে যাতায়াত সুবিধা: ইরানের ন্যায্যত অতি-উন্নত, সস্তা পরিবহন ব্যবস্থা রয়েছে। সেইসাথে রয়েছে প্রশস্ত সড়ক ব্যবস্থা। ফলে খুব সহজেই ট্রেন বা বিমানে এক স্থান থেকে অপর স্থানে ভ্রমণ করতে পারেন।

৮। অবিশ্বাস্য বৈচিত্র্যময় পর্যটন গন্তব্যের দেশ ইরান: প্রায় সব ধরনের পর্যটককে কোনো না কোনো ভাবে আকৃষ্ট করতে সক্ষম ইরান। আপনি যদি সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে ইরান আপনার জন্য হবে স্বর্গ। আপনি যদি শিল্পে আগ্রহী হোন তাহলে এখানকার মনোমুগ্ধকর স্থাপত্য ও জাদুঘর আপনাকে আনন্দিত করে তুলবে। আর প্রকৃতপ্রেমীদের জন্য ইরানে রয়েছে সেরা সেরা শ্বাসরুদ্ধকর কিছু প্রাকৃতিক আকর্ষণ।

৯। কাল্পনিক চিত্রকে হার মানায় ফারসি উদ্যান ও প্রাচীন সব শহর: ইরানে বিশ্বের অন্যতম দৃষ্টিনন্দন মনোরম শহর দিয়ে যদি হেঁটে যান। অথবা স্বপ্নময় ফারসি উদ্যানে বসে কিছুটা শান্তময় সময় কাটান। আপনার নিজেকে অতি প্রাচীন উপকথার অংশ মনে হবে। তবে ইরানের বিভিন্ন প্রাচীন শহরকে আধুনিকভাবে দৃষ্টিনন্দন রূপে রূপান্তর করা হয়েছে। এখানে এখনও অনেক প্রাচীন স্থান ও স্থাপনা রয়েছে যেগুলোকে তার অনন্য রূপে সংরক্ষণ করা হয়েছে।

১০। সম্পূর্ণ ভিন্ন এক দেশ: মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য যে কোনো দেশের চেয়ে ইরান সম্পূর্ণ ভিন্ন। একবার আপনি এখানে আসলে এই দেশকে নিজের করে নিতে পারবেন। গ্যারান্টি দিয়ে বলা যায়, আপনার ইরান ভ্রমণ হবে সবচেয়ে মূল্যবান একটা সফর।

নাইক্ষ্যংছড়িতে ট্যুরিস্ট স্পট পরিদর্শনে পর্যটন প্রতিমন্ত্রী
কবে আসেছে ই-পাসপোর্ট?

আপনার মতামত লিখুন