শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
ঘুরে আসি

পর্যটনের নতুন সম্ভাবনা ‘চরবিজয়’

স্টাফ রিপোর্টার
০৫ জানুয়ারি ২০২১

বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে উঠেছে বিশাল সম্ভাবনা নতুন আর এক দিগন্ত। প্রায় পাঁচ হাজার একর আয়তন নিয়ে জেগে ওঠা এ চরটি পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণে অবস্থিত। লাল কাঁকড়ার অবাধ ছুটোছুটি আর অতিথি পাখির কলকাকলি। দিগন্ত জোড়া আকাশ আর সমুদ্রের নীল জল রাশি আছড়ে পড়ছে কিনারায়। এছাড়া সাদা গাংচিলের দল এদিক-ওদিক উড়ে যাচ্ছে।

চরটি ইতোমধ্যে দৃষ্টি কেড়েছে পর্যটকদের। জেগে ওঠা চরটির নাম ‘চরবিজয়’ রাখা হলেও গভীর সাগরে মাছ ধরারত জেলেদের কাছে ‘হাইরের চর’ নামে পরিচিত। প্রতিদিনই আগত পর্যটকরা ছুটে যাচ্ছে এক নজর দেখতে। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে এ চর ভ্রমণে এক নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে বলে জানিয়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,পর্যটকদের নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় ভ্রমণের সম্ভাব্যতা নিশ্চিত করতে ২০১৭ সালে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন, কুয়াকাটা পৌর প্রশাসন, টুরিস্ট পুলিশ, নৌ-পুলিশ, হোটেল মালিক সমিতি ও পর্যটন ব্যবসায়ীরা চর বিজয় পরিদর্শন করে। ওই সময় ম্যানগ্রোভ প্রজাতির বাগান সৃজনের জন্য প্রায় ২ হাজার গোল, ছইলা, কেওড়া ও সুন্দরী গাছের চারা রোপণ করা হয়।

মানুষের খুব একটা বিচরণ নেই তাই শীতে এ চরটিতে সমাগম ঘটে লক্ষাধিক অতিথি পাখির। তবে সঠিক তদারকিতে তৈরি হবে একটি বাসযোগ্য নতুন সমভূমি। যাকে ঘিরে কুয়াকাটার পর্যটন শিল্পে তৈরি হবে আরেক ভিন্ন মাত্রা। এমন সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন সংশ্লিষ্ট অনেকে।

চরটি ঘুরে এসে পর্যটক মাসুদ রানা বলেন, চারদিকে সাগরের অথৈই পানি। এরই মাঝে আকাশ আর মাটির সাথে মিতালী তৈরি করেছে বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে ওঠা নতুন চর বিজয়। এ যেন প্রকৃতির এক নান্দনিক সৌন্দর্য। এখানে যে কেউ আসলেই ভালো লাগবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট এ্যাসোসিয়শন কুটুম’রসহ সভাপতি হোসাইন আমির বলেন, সৈকত থেকে টুরিস্ট বোট নিয়ে এ চর বিজয়ে মাত্র দেড় ঘণ্টায় পৌঁছানো যায়। বর্ষা মৌসুমের ছয় মাস চরটি হাঁটু পানিতে ডুবে থাকে। শীত মৌসুমে ধু ধু বালু নিয়ে জেগে উঠে। এ সময়ে তিন/চার মাসের জন্য অস্থায়ী বাসা তৈরি করে মাছ শিকার এবং শুটকি প্রক্রিয়াজাত করেন জেলেরা।

কুয়াকাটা ইলিশ পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, আগত বেশির ভাগ পর্যটকের এখন আকর্ষণ চর বিজয় ভ্রমণ। এতে পর্যটন ব্যবসায়ীরা হচ্ছেন লাভবান। আর পর্যটকরা পাচ্ছেন এক ভিন্ন এডভেঞ্চার বিনোদন।

মহিপুর বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম বলেন, চরটিতে বনায়ন করার পরিকল্পনা রয়েছে। এর আগেও গোল, ছাইলা, কেওয়া ও সুন্দরী গাছের চারা রোপণ করা হয়েছিলো বলে জানিয়েছেন তিনি।

কুয়াকাটা টুরিস্ট পুলিশ জোনের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার এম এম মিজানুর রহমান জানান, কুয়াকাটায় ভ্রমণে আসা পর্যটক টুরিস্ট বোর্ড নিয়ে সমুদ্রের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান নৌ-ভ্রমণে যায়। তবে পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে আমাদের টুরিস্ট পুলিশ সর্বদা কাজ করে যাচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক বলেন, চর বিজয় পর্যটকদের জন্য সুন্দর দর্শনীয় স্থান। ইতোমধ্যে বনায়ন করার জন্য বনবিভাগ ও পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য টুরিস্ট পুলিশের সাথে কথা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তিনি।

পদ্মায় ভ্রমণতরী উদ্বোধন
সাদা পাথর পর্যটন কেন্দ্রে ভ্রাম্যমান ডাস্টবিন স্থাপন

আপনার মতামত লিখুন