শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ঘুরে আসি

বর্ষণে সৈকত সেজেছে অপরূপ সাজে

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৩ জুন ২০২২

এবার বৈশাখ মাসের শুরু থেকেই চলছে অনিয়মিত বর্ষণ। আম-কাঁঠাল পাকা গরমের মধ্যেও শীতল হয়েছে প্রকৃতি। সৈকতের প্রকৃতিও সেজেছে অপরূপ সাজে। আর এমন রূপ উপভোগ করতেই পর্যটন রাজধানী কক্সবাজারে নিয়মিত অবস্থান করছেন হাজারো পর্যটক। সাড়ে ৪ শতাধিক হোটেল-মোটেল-রিসোর্টে কমবেশি পর্যটক রয়েছে বলে জানিয়েছেন সি-নাইট গেস্ট হাউজের ব্যবস্থাপক শফিক ফরাজী। ভোর থেকে সূর্যাস্থ পর্যন্ত লাবণী-সুগন্ধা-কলাতলী পয়েন্টে থাকছে লোক সমাগম। 

আগত পর্যটকদের সেবা নিশ্চিতে সর্তক অবস্থায় দায়িত্ব পালন করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। পর্যটক হয়রানি রোধে পর্যটন স্পটগুলোতে বসানো সিসিটিভি ক্যামেরায় নজর রাখা হচ্ছে সর্বক্ষণ। দ্রুত সাধারণ চিকিৎসা ও খাবার পানির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে সমুদ্র সৈকতে। বর্ষণের সময় যেহেতু সৈকত উত্তাল থাকে, সেহেতু গোসল করাকালীন বিপদাপন্ন পর্যটকদের রক্ষার্থে সর্তক অবস্থায় রয়েছেন লাইফগার্ড কর্মীরা। পাশাপাশি পর্যটকদের সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়ে মাইকিং করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম। 

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বাজালিয়া থেকে আসা পর্যটক দম্পতি মুহাম্মদ মামুন ও সমিরা আকতার বলেন, করোনা পরিস্থিতিসহ নানা কারণে দীর্ঘ দিন কোথাও যাওয়া হয়নি। সিজনে কক্সবাজারে আবাসনসহ সবকিছুতেই খরচ বেশি পড়ে। ভিড়ে বিরক্ত হতে হয়। তীব্র গরম কিংবা বর্ষণের সময় পর্যটক সমাগম কম থাকে। আবার বর্ষণের কালে মেঘলা আকাশ সৈকতকে ভিন্ন রূপ এনে দেয়। থাকে শীতল। এ কারণে বৃষ্টিতেই কক্সবাজার বেড়াতে এসেছি স্বপরিবারে।  

সুগন্ধা বিচ খাদ্য ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম বলেন, সূর্যাস্ত দেখতে প্রতিদিনই পর্যটকরা সৈকতে আসেন। শীত মৌসুমে এ যাত্রা বাড়ে। গরম ও বৃষ্টির দিনে এটি কমে যায়। পর্যটন ব্যবসায়ীরা এ সময়ে অকর্মন্য থাকে। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে বৃষ্টিতেও কিছু প্রকৃতি প্রেমী পর্যটক সৈকতে বেড়াতে আসেন। গত পক্ষকাল ধরে থেমে থেমে বর্ষণেও পর্যটক উপস্থিতি সৈকতের বালিয়াড়িকে সতেজ রেখেছে। 

 কলাতলীর হোটেল মোহাম্মদীয়া গেস্ট হাউজের ব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম বলেন, গ্রীষ্ম ও বর্ষা মৌসুমে স্বাভাবিকের চেয়ে রুম ভাড়া কম রাখা হয়। যারা ভিড় পছন্দ করেন না, তারা বুদ্ধি করে বৃষ্টির সময় বেড়াতে চলে আসেন। 

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার সৈয়দ মুরাদ ইসলাম বলেন, বর্ষণের মাঝেও কমবেশি পর্যটক রয়েছে। আগত পর্যটকদের নিরাপত্তায় জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত হোটেল-মোটেল জোনে টহলে রয়েছে।  

তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইসের পরিচালক আবদুল কাদের মিশু বলেন, করোনাকালে খুবই দুরবস্থা পার করেছে পর্যটনের আবাসনসহ সব প্রতিষ্ঠান। এখন পর্যটন মৌসুম নয়, এরপরও নানা ক্যাটাগরির কমবেশি পর্যটক কক্সবাজারে আসছেন, এখনও রয়েছে। 

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান বলেন, কন্ট্রোল রুম, পর্যবেক্ষণ টাওয়ারসহ পুরো সৈকতে পুলিশের নজরদারির আওতায় রয়েছে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, পর্যটন রাজধানী হিসেবে খ্যাত কক্সবাজারে সারাবছর সমানতালে পর্যটক থাকুক সেটাই সরকারের লক্ষ্য। তা নিশ্চিত করতেই কাজ করছে প্রশাসন। এখন পর্যটক উপস্থিতি কম, কিন্তু সামনের দিনে সব ঋতুতেই সমান্তরালে পর্যটক থাকবে সেটাই আমাদের আশা। আগতদের নিরাপত্তায় সেবা দিতে আমরা প্রস্তুত।

সরকারি স্বীকৃতির পর প্রাণবন্ত গুলিয়াখালী সি-বিচ
ট্যুরিস্ট বাসে হাজার টাকায় পদ্মা সেতু ভ্রমণের সুযোগ

আপনার মতামত লিখুন