বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সীমানার ওপারে

এভারেস্টের পথে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ দল

ডেস্ক রিপোর্ট
০৪ জানুয়ারি ২০২২

প্রায় ৭০ বছর আগে এডমন্ড হিলারি ও শেরপা তেনজিং নোরগে এভারেস্টের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জয় করেন। এরপর কমপক্ষে দশ হাজার মানুষ তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে এই চূড়ায় ওঠার চেষ্টা করেন। এদের মধ্যে কৃষ্ণাঙ্গ হাতেগোনা কয়েকজন এবং আমেরিকা থেকে কৃষ্ণাঙ্গ মাত্র একজন। আগামী মে মাসে 'ফুল সার্কেল এভারেস্ট এক্সপিডিশন' ব্যানারে নয়জন দক্ষ কৃষ্ণাঙ্গের দল এবার এই তথ্যকে বদলাতে চলেছেন।

৫৮ বছর বয়সী দলপ্রধান ফিলিপ হেন্ডারসন এই অভিযাত্রার শ্লোগান দিয়েছেন, 'প্রথমে এভারেস্ট অভিযাত্রা, তারপর সবকিছু'। ৩০ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন হেন্ডারসন পূর্বে এমন সব অভিযাত্রায় যোগ দিয়েছেন, যেখানে একমাত্র কৃষ্ণাঙ্গ ছিলেন তিনিই। তিনি এভারেস্ট আরোহনকে বৈচিত্র্যময় করে তুলতে এবং পরবর্তী শেরপাদের অনুপ্রেরণা দিতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছেন। অন্যান্য অভিযাত্রিক দলের মতো, নয় সদস্যের এই দলকেও পরবর্তী কয়েকমাস নানা অনুশীলন, তহবিল সংগ্রহ এবং পর্বত অভিযাত্রার জগতে তাদের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য প্রতিনিধিত্ব করতে হবে।

সিয়াটলের অধিবাসী রোজমেরি সাল বলেন, ''যখনই আমি পর্বত আরোহন নিয়ে কথা বলতে যাই, আমাকে বলা হয় 'কৃষ্ণাঙ্গরা এটা করেনা'। এর মাধ্যমে স্বভাবতই একটি আলাদা ছাঁচীকরণ হয়। তবে, এই ধারণার পরিবর্তন আবশ্যক। এভারেস্টের চূঁড়ায় কৃষ্ণাঙ্গদের এই অভিযানের মাধ্যমে এই ধারণাতে পরিবর্তন আসবে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কালোদের বিচরণ ইচ্ছাকৃতভাবেই সংকুচিত করা হয়। এডমন্ড হিলারি যখন এভারেস্ট জয় করেন তখন অধিকাংশ কৃষ্ণাঙ্গই ভোটাধিকার বঞ্চিত ছিলেন। এই অভিযানের মাধ্যমে আমরা দেখাতে চাই যে, আমরাও পারি''।

হেন্ডারসনের মতে দলটি স্বতন্ত্রভাবে গঠিত হয়েছে। তবে, তিনি দলের নিউক্লিয়াস এবং পরামর্শদাতা হিসাবে থাকবেন। অন্যান্য সদস্যদেরকেও যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানান তিনিই। এটি হেন্ডারসনের দ্বিতীয় অভিযাত্রা। ২০১২ সালে প্রথমবার অভিযান পরিচালনা করেও ব্যর্থ হয়েছিলেন তিনি। সাল এবং হেন্ডারসন ছাড়াও দলের অন্যান্য সদস্যরা হলেন, কলোরাডো হাই স্কুলের শিক্ষক এডি টেলর (৩১), ফ্লোরিডার কোরাল ক্লিফস ক্লাইম্বিং জিমের মালিক এ্যাবি ডিওন (৪৫), ন্যাশনাল আউটডোর লিডারশিপ স্কুলের ফিল্ড প্রশিক্ষক জেমস কাগাম্বি (৬০), মানোয়া আইনু(২৫), সিয়াটেলের ফ্রেড ক্যাম্পবেল (৩৭) , সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক ডেমন্ড মুলিনস (৪০),  টমাস মুর (৩৭), এবং কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ আদিনা স্কট (৪১)। 

দলটিতে পরিবেশ বিশেষজ্ঞ এবং একাধিকবার তানজানিয়ার কিলিমানজারো পর্বত, আলাস্কার ডেনালিচ পর্বত জয়ের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন আরোহী রয়েছেন। প্রয়োজনীয় সকল দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও এভারেস্টের ২৯ হাজার ফুট জয়ের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের দরকার আছে। দলের প্রতিটি সদস্যই এখন প্রশিক্ষণে ব্যস্ত রয়েছেন। কেননা প্রতিবছর গড়ে ৫ জন দুঃসাহসীক অভিযাত্রী এখানে প্রাণ হারান।

দক্ষতা, অদম্য মনোবল এবং ইচ্ছা এভারেস্ট জয়ের অন্যতম নিয়ামক। তবে, পর্যাপ্ত তহবিল সংগ্রহ করা এভারেস্ট পর্বত আরোহনের পথে অন্যতম বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। ইতিহাস সৃষ্টিকারী এই নয় সদস্যের দলকে পারকিন্স কোয়ে, হেস্ট্রা, নর্থ ফেস, অসপ্রে প্যাকস, স্মার্টউল, এমএসআর এবং গ্রিনিং ইয়ুথ ফাউন্ডেশনের মতো ব্রান্ডগুলো স্পন্সর করবে।

সূত্র: দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট

ইতিহাস-ঐতিহ্য সমৃদ্ধ রতনপুর জমিদার বাড়ি
বিজয়ের ৫০ বছরে তাজিংডং বিজয়

আপনার মতামত লিখুন