বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সীমানার ওপারে

২০২২ সালে ভ্রমণে যে ২০টি এয়ারলাইন সবচেয়ে নিরাপদ

ডেস্ক রিপোর্ট
০৯ জানুয়ারি ২০২২

অতিমারির প্রভাবে ২০২১ সালে এভিয়েশন শিল্পে মন্দা অব্যাহত থাকায় বিভিন্ন দেশের এয়ারলাইনকে প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। বিশ্বে কোভিড-১৯ প্রথম শনাক্ত হওয়ার দুই বছর পরও ফ্লাইট ও যাত্রী সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক কম।

আকাশপথে যাতায়াতের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা বিষয়ক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতেই থাকে করোনাভাইরাস। এ কারণে বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ ২০ এয়ারলাইনের তালিকায় কয়েকটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে। প্রতিবছরের মতো এটি প্রকাশ করেছে এয়ারলাইন নিরাপত্তা ও বিমান পণ্য পর্যালোচনা ওয়েবসাইট এয়ারলাইন রেটিংস ডটকম। সারাবিশ্বের ৩৮৫টি বিমান সংস্থার বিভিন্ন দিক পরিমাপ করেছে অস্ট্রেলিয়া ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি। এর মধ্যে রয়েছে বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনা, গুরুতর দুর্ঘটনা, উড়োযানের বয়স, কোভিড-১৯ প্রটোকল ও পরিচালনা কার্যক্রমে নতুনত্ব।

এবারের তালিকায় শীর্ষে আছে এয়ার নিউজিল্যান্ড। ককপিটে নতুনত্ব আনা, পাইলটদের প্রশিক্ষণ প্রদান এবং খুব অল্প বয়সী উড়োযান বহরে রাখার সুবাদে এক নম্বর জায়গাটি দখল করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া তাদের ফ্লাইট পরিচালনা করতে গিয়ে তেমন গুরুতর কোনও ঘটনার জন্ম দেয়নি নিউজিল্যান্ডের পতাকাবাহী এই সংস্থা। 

এয়ারলাইন রেটিংস ডটকমের এডিটর-ইন-চিফ জিওফ্রে থমাসের ব্যাখ্যায়, ‘গত দুই বছর করোনার কারণে আকাশপথে যাত্রী কমে যাওয়ায় বিমান সংস্থাগুলোর জন্য ছিল প্রতিকূল।  যাত্রীসেবা প্রদানে আবারও ফেরার আগে পাইলটদের ব্যাপকভাবে পুনরায় প্রশিক্ষণ দেওয়ার ক্ষেত্রে এসব প্রতিষ্ঠানের পরিসর বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছেন এয়ারলাইন রেটিং সম্পাদকেরা। এয়ার নিউজিল্যান্ড এক্ষেত্রে সবার চেয়ে অগ্রগামী।’

গত চার দশকে পরিচালনা কার্যক্রমে নিরাপত্তার অগ্রগতিতে নেতৃত্ব দেওয়ার সুবাদে প্রশংসা কুড়িয়েছে এয়ার নিউজিল্যান্ড। বিভিন্ন উদ্যোগের মধ্যে ফ্লাইটের টার্ন টাইম (অবতরণের পর আবারও উড্ডয়নের জন্য তৈরি) উন্নীত করতে সম্প্রতি এই সংস্থা যুক্ত করেছে অ্যাসাইয়া অ্যাপ্রন এআই প্রযুক্তি। বিশ্বে এটি প্রথম ব্যবহার করা বিমান সংস্থার মধ্যে এয়ার নিউজিল্যান্ড অন্যতম। 

জিওফ্রে থমাস উল্লেখ করেন, ‘বিস্তৃত নিরাপত্তা কার্যক্রমের মধ্যে ক্ষুদ্র বিষয়েও নজর রাখার ক্ষেত্রে পারদর্শিতার প্রমাণ দিয়েছে এয়ার নিউজিল্যান্ড। এছাড়া চাপ সামলে কাজ করা কেবিন ক্রুদের প্রতি সংস্থাটি যত্নশীল।’

এবারের র‌্যাংকিংয়ে দুই থেকে পাঁচে আছে যথাক্রমে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইতিহাদ এয়ারওয়েজ, কাতার এয়ারওয়েজ, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস এবং টিএপি এয়ার পর্তুগাল।

লক্ষণীয় ব্যাপার হলো, শীর্ষ পাঁচের মধ্যেই নেই কোয়ান্টাস। অস্ট্রেলিয়ার পতাকাবাহী এই সংস্থা ২০১৪ থেকে ২০১৭ এবং ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সবচেয়ে নিরাপদ এয়ারলাইনের তালিকায় শীর্ষে ছিল। ২০১৮ সালে কাউকেই এক নম্বরে রাখেনি এয়ারলাইন রেটিংস ডটকম। এ বছর সাত নম্বরে নেমে গেছে কোয়ান্টাস। এর কারণ সংস্থাটির উড়োযানের বয়স এবং দুর্ঘটনা সামান্য বৃদ্ধি পাওয়া।

এমিরেটস ২০২১ সালে পাঁচ নম্বরে ছিল। কিন্তু সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ভিত্তিক এই সংস্থা এবারের তালিকায় নেমে গেছে ২০ নম্বরে। আমেরিকার সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইনস গতবার ১৩ নম্বরে থাকলেও এবার সেরা ২০-এ জায়গা পায়নি। সেরা ২০-এ থাকা দেশটির আলাস্কা এয়ারলাইনস (৮), হাওয়াইয়ান এয়ারলাইনস (১২), আমেরিকান এয়ারলাইনস (১৩), ডেলটা এয়ার লাইনস (১৮) ও ইউনাইটেড এয়ারলাইনস (১৯)। 

গত বছরের অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ার পার্থ শহর থেকে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেড অভিমুখী কোয়ান্টাসের একটি বোয়িং উড়োজাহাজকে জ্বালানির ভারসাম্যহীনতার কারণে দিক পরিবর্তন করতে হয়। এটি গুরুতর ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করেছে এয়ারলাইন রেটিংস ডটকম। অস্ট্রেলিয়ার বেসরকারি বিমান সংস্থা ভার্জিন অস্ট্রেলিয়া ও ভার্জিন আটলান্টিক আছেন ১০ নম্বরে।

ছয় নম্বরে রয়েছে ডেনমার্ক, নরওয়ে ও সুইডেনের পতাকাবাহী এসএএস তথা স্ক্যান্ডিনেভিয়ান এয়ারলাইনস। এশিয়ার বিমান সংস্থার মধ্যে তালিকায় আছে তাইওয়ানের ইভিএ এয়ার (৯) ও হংকংয়ের পতাকাবাহী ক্যাথে প্যাসিফিক এয়ারওয়েজ (১১)। এছাড়া জায়গা পেয়েছে জার্মানির রাষ্ট্রায়ত্ত লুফথানসা (১৪), ফিনল্যান্ডের পতকাবাহী ফিনএয়ার (১৫), নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রায়ত্ত কেএলএম রয়েল ডাচ এয়ারলাইনস (১৬) ও যুক্তরাজ্যের পতাকাবাহী ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ (১৭)।

এয়ারলাইন রেটিংস ডটকম বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ বাজেট এয়ারলাইনসের তালিকা প্রকাশ করেছে। শীর্ষ দশে আছে আমেরিকার অ্যালিজেন্ট এয়ার, ফ্রন্টিয়ার এয়ারলাইনস ও জেটব্লু, লন্ডনের ইজিজেট, অস্ট্রেলিয়ার জেটস্টার, আয়ারল্যান্ডের রায়ানএয়ার, ভিয়েতনামের ভিয়েতজেট এয়ার, মেক্সিকোর বোলারিস, কানাডার ওয়েস্টজেট এবং হাঙ্গেরির উইজ এয়ার। 

২০২২ সালের নিরাপদ ২০ এয়ারলাইন
১. এয়ার নিউজিল্যান্ড
২. ইতিহাদ এয়ারওয়েজ
৩. কাতার এয়ারওয়েজ
৪. সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস
৫. টিএপি এয়ার পর্তুগাল
৬. এসএএস
৭. কোয়ান্টাস
৮. আলাস্কা এয়ারলাইনস
৯. ইভিএ এয়ার
১০. ভার্জিন অস্ট্রেলিয়া/ভার্জিন আটলান্টিক
১১. ক্যাথে প্যাসিফিক এয়ারওয়েজ
১২. হাওয়াইয়ান এয়ারলাইনস
১৩. আমেরিকান এয়ারলাইনস
১৪. লুফথানসা
১৫. ফিনএয়ার
১৬. কেএলএম রয়েল ডাচ এয়ারলাইনস
১৭. ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ
১৮. ডেলটা এয়ার লাইনস
১৯. ইউনাইটেড এয়ারলাইনস
২০. এমিরেটস


উত্তর আমেরিকায় ওয়ালটন পণ্যের বাজার সম্প্রসারণে ড্যানবির সঙ্গে চুক্তি
স্কুবা ডাইভিং: সমুদ্রের তলদেশের অপার সৌন্দর্য্য

আপনার মতামত লিখুন