শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
গাঁও গেরাম

সম্ভাবনাময় পর্যটন মুহুরী প্রজেক্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০

ফেনীর সোনাগাজীর মুহুরী প্রজেক্ট পর্যটনশিল্পের এক অপার সম্ভাবনাময় স্থানের নাম। নদীর পাড়ে সবুজ বনানী ঘেরা মায়াবী পরিবেশ। বঙ্গোপসাগরের উপকূলে চিত্তাকর্ষক এ নৈসর্গিক শোভা ও মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে শীতসহ সারা বছর ভ্রমন পিপাসু মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে এখানে বেড়াতে আসেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১৯৮২ সালে প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সেচ প্রকল্পটি নির্মিত হয়। এ প্রকল্পের ৪০ গেট বিশিষ্ট রেগুলেটর ও ক্লোজার ড্যাম রয়েছে। এর ৫০০ গজ দূরে অবস্থিত দেশের প্রথম বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র। যা ৬ একর ভূমির উপর ৯ কোটি টাকা ব্যায়ে ২০০৫ সালে স্থাপন করা হয়। এর ৫ কিলোমিটার দক্ষিণে নির্মিত হচ্ছে দেশের সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক অঞ্চল। শীতকালে অতিথি পাখির আগমন ও তাদের কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠে এই এলাকা। পর্যটকদের পদভারে সরগরম হয়ে উঠে এই এলাকাটি। প্রকৃতির টানে যে আসে তাকেই মুগ্ধ করবে এখানকার প্রকৃতি। নদীর পানিতে সূর্যদোয় ও সূর্যাস্তের নয়নাভিরাম দৃশ্য পর্যটকদের আকৃষ্ট করে ধারুন ভাবে। এই সেচ প্রকল্প এলাকায় চারপাশে রয়েছে সবুজের সামরোহ। নদীতে নৌকার সারি, মাছ ধরা ও নৌকা ভ্রমণের দৃশ্য ভ্রমণ পিয়াসী মানুষদের আকৃষ্ট করে।

এখানে পর্যটকদের নিরাপত্তা জোরদার করতে স্থাপন করা হয়েছে পুলিশ ফাঁড়ি। মুহুরী নদীতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ভাসমান মাচ চাষ, নদীতে জাল ফেলে জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য, দেশের প্রথম বায়ু বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্র, পরিকল্পিতভাবে মাছ চাষ, ডেইরী ফার্ম, ব্যক্তিগত পর্যায়ে নার্সারী ও এগ্রো খামারসহ ইত্যাদি চোখ জুড়ানো দৃশ্য মনে রাখার মত। জীবন জীবিকার তাগিদে খেটে খাওয়া মানুষদের হরেক রকম জীবন কর্মের দৃশ্যও দেশের অন্য অঞ্চলের মানুষের থেকে একটু ভিন্ন। নদীতে জাল ফেলে নোনা পানিতে ভেসে চিংড়ি পোনা সংগ্রহের দৃশ্যে সবার নজর কাটবে। প্রকৃতি আর মানুষের ভালবাসায় আতিথিয়তায় যে কোন পর্যটকের কোমল মনে সমাদৃত থাকবে বহুকাল। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর পর্যটন কেন্দ্র বা নগরী হিসেবে গড়ে উঠার কথা থাকলেও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বা ব্যক্তিগত উদ্যোক্তাদের সদিচ্ছার অভাবে কাঙ্খিত পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠেনি। গড়ে উঠেনি হোটেল মোটেল ও বিলাসবহুল দোকান পাট। প্রকৃতির টানে ছুটে আসা পর্যটকদের হৃদয় কাটলেও থাকা খাওয়ার সুব্যবস্থার অভাবে অনেককে নিরাশ হতে হয়। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় আধুনিক একটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠলে সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় হতো বলে স্থানীয়দের দাবি। দরকার মানসন্মত থাকা ও খাওয়ার হোটেল। বেশি দরকার এলাকাবাসীর সহযোগী মনোভাব যা দেশ-বিদেশের পর্যটকদের ভ্রমণে অসুবিধা বা অস্বস্তি দূর করতে সহায়ক হবে।

এছাড়া পরিবহনের সংখ্যা ও মানবৃদ্ধি, পর্যটন কেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, এলাকা ও স্থাপনাগুলো মনোরম ভাবে সাজানো ও রক্ষণাবেক্ষণ, সোনাগাজী ও চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে মানুষের যাতায়াত সহজ করা ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রে উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ সোনাগাজীর এ পর্যটন শিল্পকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে। আর পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটাতে পারলে এখানে অনেক কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।

এ বিষয়ে ফেনী-৩ আসনের সাংসদ সদস্য লে: জে: (অব:) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী জানান, সরকারি ভাবে পর্যটন কেন্দ্র ঘোষণা এবং অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ডিও লেটার প্রদান করা হয়েছে। আমরা খুব শ্রীগই মুহুরী প্রকল্প এলাকাকে পর্যটন এলাকা হিসাবে ঘোষণা করবো।

সোনাগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন জানান, অপার সম্ভাবনাময় এলাকাটি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ার পাশাপাশি এলাকার বেকার লোকদের কর্মসংস্থানেরর সুযোগ সৃষ্টি হতো। প্রতিদিন প্রকল্প এলাকায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শত শত লোক ও প্রতিষ্ঠান মুহুরী পজেক্ট এলাকার প্রাকৃতিক মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে আসেন।

গ্রন্থমেলায় উদয় হাকিমের নতুন বই ‘রহস্যময় আদম পাহাড়’
‘রহস্যময় আদম পাহাড়’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করলেন অর্থমন্ত্রী

আপনার মতামত লিখুন