সোমবার, ০৬ মে ২০২৪ | ২২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
অর্থনীতি

করোনাকালে উদ্যোক্তাদের ভরসা 'উই', অনেকে লাখপতি

মো. মোস্তফা (দীপু)
১০ জুলাই ২০২০
উই এর প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট নাসিমা আক্তার নিশা এবং উই এর উপদেষ্টা রাজিব আহমেদ

উই এর প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট নাসিমা আক্তার নিশা এবং উই এর উপদেষ্টা রাজিব আহমেদ

দেশের অর্থ দেশে রাখতে দেশীয় পণ্যের চাহিদা বাড়াতে এবং দেশীয় পণ্যের উদ্যোক্তাদের বিশ্বের দরবারে পরিচিত করাতে বর্তমানে সবচেয়ে সফল ও জনপ্রিয় প্লাটফর্ম 'উই'। 'একমতে একপথে উই চলে এক সাথে' এই স্লোগানে দেশী পণ্যের ই-কমার্সের সবচেয়ে বড় প্লাটফর্ম উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম (উই) গ্রুপের সদস্য প্রায় চার লাখ।

সম্প্রতি উই এর ৩ লক্ষ সদস্য সেলিব্রেশনে ভার্চুয়াল লাইভে যুক্ত হয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।

বাংলাদেশের ই-কমার্স সাইট আরো বেশি শক্তিশালী এবং সমৃদ্ধশালী হয়েছে উই এর  প্লাটফর্ম এর মাধ্যমে। আর এর পেছনে যাদের অবদান ও অক্লান্ত পরিশ্রম অনস্বীকার্য এবং যাদের কথা না বললেই নয় তারা হলেন, উই এর প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট নাসিমা আক্তার নিশা এবং ই-ক্যাব এর সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, উই এর উপদেষ্টা ও সার্চ ইংলিশ এর প্রতিষ্ঠাতা রাজিব আহমেদ। তাদের সবসময় সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে গ্ৰুপের ম্যানেজিং ও‌ ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যগণ।

এই দুই গুনীজনের হাত ধরে বাংলাদেশের হাজার হাজার তরুণ উদ্যোক্তা পেয়েছে তাদের কাজের স্বীকৃতি। দেশের করোনা সংকটকালীন সময়ে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম  ব্যক্তিরা যখন চাকুরিচ্যুত ও বেকার হয়ে ঘরে বসে আছে ঠিক তখনই উই এর মত প্লাটফর্মে নারী উদ্যোক্তারা খুঁজে পেয়েছেন তাদের আয়ের পথ। ঘরে বসেই অনলাইনে কেনা‌ বেচার মাধ্যমে তাদের উপার্জনের কাজটা যে সহজ করে দিয়েছে উই। যেটা তাদের দৈনন্দিন জীবনের অস্বচ্ছলতা কাটাতে দারুন ভাবে সহযোগিতা করেছে।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে নাসিমা আক্তার নিশা 

শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের প্রাচীন ঐতিহ্য যেগুলো প্রায় বিলুপ্তির পথে সেগুলো আবার নতুন করে ফিরে আসছে দেশী পণ্যের উদ্যোক্তাদের হাত ধরে উই এর প্লাটফর্মে। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে উই ই সবচেয়ে বড় প্লাটফর্ম যেখানে সার্চ করলে যে কোনো পণ্য সম্পর্কে খুব সহজেই ধারণা পাওয়া যায় এবং অরডার ও করা যায়।

কী নেই উইতে? আছে প্রায় হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী জামদানি, বিলুপ্তপ্রায় তাঁত শিল্প, ফিরে এসেছে কুমিল্লার বিখ্যাত খাদি‌, মিরপুরের বেনারসী।

এমনকি বাংলাদেশের চামড়া ও পাটশিল্পের উদ্যোক্তাদের ও দেখা মিলবে উই তে। উই এর মাধ্যমে তারা‌ নিয়ে আসছে নতুন নতুন সব‌ আন্তর্জাতিক মানের ডিজাইনিং পণ্য।

আরো আছে উদ্যোক্তাদের হাতে তৈরি গরু ও খাসির মাংসের আচার, কলিজার আচার, কাঁটা ছাড়া ইলিশের আচার, শুঁটকির আচার, ছাতুর লাড্ডু, বগুড়ার দই, নাটোরের কাঁচাগোল্লা, টাঙ্গাইলের চমচম, সাতক্ষীরার শতরঞ্জি, রাজশাহীর সিল্ক, সিলেটের চাসহ হোম মেইড যেকোনো স্বাস্থ্যকর খাবার, রেডি টু কুক মাছ-মাংস-সবজি।

সুখবর হচ্ছে, দেশের ই-কমার্স ইন্ডাস্টির ৬০ শতাংশই এখন মেয়েদের দখলে। উই এমন একটি প্লাটফর্ম যেখানে পাওয়া যাবে ছোট, বড়, মাঝবয়সীসহ সকল বয়সের উদ্যোক্তা। উই এর এখন পর্যন্ত সর্ব কনিষ্ঠ উদ্যোক্তাটি দশম শ্রেণীর ছাত্রী।

উইতে রয়েছে উদ্যোক্তাদের জন্য বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ এর পাশাপাশি ই-কমার্স নিয়ে বিস্তারিত শেখার সুযোগ এবং ট্রেনিং এর স্বীকৃতি হিসেবে দেওয়া হয় সনদপত্র। যা একজন উদ্যোক্তাকে আরো বেশি উদ্যেমী করে তুলে।

বাংলাদেশে উই ই একমাত্র ই-কমার্স সাইট যা শুধু মাত্র দেশীয় পণ্য ‌এবং দেশী‌ পণ্যের উদ্যোক্তাদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। উই এর উদ্যোক্তাদের দেশীয় পণ্যের ক্রেতা এখন সমগ্ৰ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। বিদেশে থাকা বাংলাদেশের প্রবাসীরাও এখন নিশ্চিন্তে বিদেশে বসে এই দেশে থাকা তাদের পরিবার পরিজনদের জন্য উই থেকে দেশীয় পণ্য অর্ডার করছেন প্রতিনিয়ত। এতে করে দেশীয় পণ্যের চাহিদা যেমন বাড়ছে তেমনি দেশের টাকা ও দেশেই থাকছে।

উই উদ্যোক্তাদের দক্ষ করে তোলার পাশাপাশি নতুন উদ্যোক্তাদের ও সাহস এবং অনুপ্রেরণা দিয়ে যাচ্ছে নিরলস ভাবে।

উই যেভাবে একজন নতুন উদ্যোক্তাকে পথ দেখায় তা হলো, শুধুমাত্র উই গ্ৰুপে রেগুলার এক্টিভ থেকে প্রত্যেকটি পোস্ট মন দিয়ে পড়ে গঠনমূলক মন্তব্য করে যেতে হবে। বহু উদ্যোক্তারা এই ভাবে ৩ মাস রেগুলার এক্টিভ থাকার পর তাদের আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

সবচেয়ে মজার বিষয় হলো উই তে কিছু সেল করতে অথবা ক্রয় করতে কাউকে কোনো ধরনের কমিশন দিতে হয় না। সম্প্রতি বেশ কয়েকজন উদ্যোক্তা লাখপতির ঘরে নাম ও লিখেয়েছেন উই তে সেল করে।

এমপি একরামের সহায়তায় ঢাকায় ৫ শতাধিক হতদরিদ্রের মাঝে খাবার ও মাস্ক বিতরণ
পরিবার পরিকল্পনা মিডিয়া ফেলোশিপ পেলেন সমকালের জাহিদ

আপনার মতামত লিখুন