শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪ | ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
অর্থনীতি

‘হেলথকেয়ার হিরোস’দের ওয়ালটনের সংবর্ধনা

অনলাইন ডেস্ক
২৬ ডিসেম্বর ২০২০

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মহামারির সময়ে জীবন বাজি রেখে রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদানকারী ‘হেলথকেয়ার হিরোস’দের ত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ বিশেষ সংবর্ধনা দিয়েছে দেশের ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটন গ্রুপ।

শুক্রবার (ডিসেম্বর ২৫) বিকালে রাজধানীতে ওয়ালটন করপোরেট অফিসে ‘হেলথকেয়ার হিরোস’দের সম্মাননা জানায় ওয়ালটন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনা করা হয়। এরপর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী ১৫৯ জন চিকিৎসকসহ নার্স ও সকল স্বাস্থ্যকর্মীদের ত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে উপস্থিত সকলেই দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, বিশিষ্ট চিকিৎসক ড. আজাদ খানসহ আমন্ত্রিত চিকিৎসক, নার্স ও ওয়ালটনের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ।

করোনাকালিন সম্মুখযোদ্ধা সকল চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞাস্বরূপ অনুষ্ঠানে ৩০ জন চিকিৎসক ও ৫ জন নার্সকে ওয়ালটনের পক্ষ থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রত্যেককে দেয়া হয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ওয়ালটন ওয়াশিং মেশিন। এছাড়া, করোনাকালিন কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী দুই চিকিৎসকের পরিবারকে ১ লক্ষ টাকা করে দেয়া হয়।

ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম বলেন, সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে নিজের জীবন বাজি রেখে করোনাভাইরাস মহামারির বিভিষীকাময় পরিস্থিতি মোকাবিলা করছেন  দেশের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৫৯ জন চিকিৎসক। তাদের এই আত্মত্যাগ সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। আর তাই প্রাতিষ্ঠানিক দায়বদ্ধতা থেকেই দেশের সকল চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানানোর উদ্দেশ্যেই ‘হেলথ কেয়ার হিরোস’ সংবর্ধনার এই উদ্যোগ। আজকের সংবর্ধনা প্রাপ্ত চিকিৎসকরা হচ্ছেন প্রতীক মাত্র। তাদের মাধ্যমে করোনা মহামারি মোকাবিলায় সম্মুখযোদ্ধা দেশের সকল চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ত্যাগের প্রতি বিশেষ সম্মান জানাচ্ছে ওয়ালটন।’

করোনায় মোকাবিলায় জীবন বাজি রেখে দায়িত্বপালন করা চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ত্যাগের প্রতি সম্মান জানিয়ে সংবর্ধনা প্রদান করায় ওয়ালটনকে ধন্যবাদ দেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। ওয়ালটনকে অনুসরণ করে অনেক প্রতিষ্ঠানই এই ধরণের উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। 

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, করোনা সংক্রমণের শুরুতেই সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে ওয়ালটন। চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সাংবাদিকদের মধ্যে বিনামূল্যে বিপুল পরিমাণ প্রোটেকটিভ স্যুট, মেডিক্যাল মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, হেড কভার ও স্যু-কভার, সেফটি গগলস ইত্যাদি ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম বা পিপিই সরবরাহ করেছে ওয়ালটন। করোনা লকডাউনের সময় ওয়ালটন প্লাজা ও পরিবেশকদের মাধ্যমে দেশের সর্বত্র খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে তিন কোটি টাকা অনুদান প্রদানের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনকেও অর্থ সহায়তা দিয়েছে ওয়ালটন। প্রত্যেক কর্মীর চাকরির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি লকডাউনের শুরুতেই প্রত্যেককে প্রফিট বোনাস বাবদ প্রায় সাড়ে ২৫ হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছে।

ওয়ালটনের কাছ থেকে সংবর্ধনাপ্রাপ্ত চিকিৎসকরা হচ্ছেন- বাংলাদেশ আর্মড ফোর্সেস, ঢাকা হাসপাতালের কনসালটেন্ট ফিজিসিয়ান জেনারেল মেজর জেনারেল (ডা) মো. আজিজুল ইসলাম, ঢাকা সিএমএইচ এর কমান্ডেন্ট ব্রিগ. জেনারেল অধ্যাপক ডা তৌফিকুল হাসান সিদ্দিকী, ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিন বিভাগের উপদেষ্টা বিশেষজ্ঞ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অধ্যাপক (ডা.) মো. মাসুদুল আলম মজুমদার, পালমোনোলজি বিভাগের লে. ক. (ডা.) এ কে এম ফাইজুল হক এবিপি, এসপিপি, পালমোনোলজির উপদেষ্টা বিশেষজ্ঞ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (ডা.) মো. আজিজুর রহমান, ঢাকা কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ও অ্যানেসথেসিয়োলজি অ্যান্ড আইসিইউ বিভাগের প্রধান ডা. শাহজাদ হোসেন, পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (ডা.) জামিল আহমেদ, ঢাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি’র (বিএসএমএমইইউ) ইন্ট্যারনাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ আরাফাত, হেপাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নিল), ইন্ট্যারনাল মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. তানভীর উল ইসলাম ও সহকারী অধ্যাপক ডা. নাজমুল হাসান, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সুদীপ রঞ্জন দেব, অধ্যাপক ডা. মুজিবুর রহমান, অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির, অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ রোবেদ আমিন, পেডিয়াট্রিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সায়ীদা আনোয়ার, চট্টগ্রাম ফিল্ড হসপিটাল, চট্টগ্রামের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া, মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. উজ্জল মল্লিক, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রো লিভার ইন্সটিটিউট অ্যান্ড হাসাপাতাল, ঢাকা’র পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফারুক আহমেদ, কুয়েত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ সরকারি হাসপাতাল উত্তরা, ঢাকা সার্জারি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. সাদিয়া সাইমিন সিদ্দিকা, ইন্সটিটিউট অব এপিডমায়োলজি, ডিজেজ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ (আইডিসিআর) মহাখালি, ঢাকা পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন, সেন্ট্রাল পুলিশ হাসপাতাল, ঢাকা ডেপুটি ডিরেক্টর ও সুপারিন্টেন্ডেন্ট অব পুলিশ ডা. মো. এমদাদুল হক, বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজ, ঢাকা’র মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. তারেক আলম, সিলেট কিডনী ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. জিয়াউদ্দিনের পক্ষে জেনারেল সেক্রেটারি আলী রেজা চৌধূরী, ইব্রাহীম কার্ডিয়াক হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউট, ঢাকা’র ভাসকিউলার সার্জারি বিভাগের প্রধান সহযোগি অধ্যাপক ডা. এসএমজে সাকলায়েন রাসেল, বগুড়া টিএমএসএস হসপিটালের পরিচালক মো. আব্দুল বাশার ভুঁইয়া, বাংলাদেশ পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড ট্রেইনিং সেন্টার, সাভারের মেডিক্যাল অফিসার মো. মোরশেদ, র‌্যাব ফোর্সেস হেডকোয়ার্টার্স উত্তরা, ঢাকা’র অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেল (অপারেশন) কর্নেল তোফায়েল মুস্তফা সরওয়ার বিপিএম, পিএসসি।

ওয়ালটনের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেয়া নার্সদের মধ্যে রয়েছেন- স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিমান বন্দর হেলথ ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র স্টাফ নার্স নাসরিন খানম, ঢাকা সিএমএইচের ক্রিটিক্যাল কেয়ার সেন্টারের সিনিয়র নার্স মেজর (এএফএনএস) ক্রইফুর মংগচু খায়াং সুপ, ঢাকা এমএইচ শমরিতা হসপিটাল অ্যান্ড মেডিক্যাল কলেজের ল্যাব টেকনিশিয়ান এম এ কুদ্দুস আকন্দ, ঢাকার টিবি হসপিটাল শ্যামলীর সিনিয়র স্টাফ নার্স জাবেদা ভূঁইয়া, ঢাকা স্যার সলিমুল্লাহ মেক্যিাল কলেজের সিনিয়র স্টাফ নার্স নাসরিন আক্তার।

অনুষ্ঠানে করেনাভাইরাসের আক্রান্ত হয়ে মৃতুবরণকারী বাংলাদেশ পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড ট্রেইনিং সেন্টার, সাভারের মেডিক্যাল অফিসার মরহুম ডা. রাশেদ সরওয়ার আলম এবং বগুড়া টিএমএসএস হসপিটালের মেডিসিন ইউনিট বিভাগের প্রধান মরহুম অধ্যাপক ডা. একেএম মাসুদুর রহমানের পরিবারকে ১ লাখ টাকা করে দেয়া হয়।

পদ্মা সেতুতে পর্যটন শিল্পের পথ প্রসারিত হলো
১৯ কোটি টাকা খরচে ট্যুরিস্ট বাস কিনছে সরকার

আপনার মতামত লিখুন