সোমবার, ০৬ মে ২০২৪ | ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
অর্থনীতি

পর্যটনে সুবাতাস, বাড়ছে আয়

আবুল কালাম
২১ মার্চ ২০২২

পর্যটন খাতে সুবাতাস বইছে। করোনা মহামারী কমে আসার সাথে সাথে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে সম্ভাবনার এ খাত। গত তিন মাসে (ডিসেম্বর-ফেব্রুয়ারি) বেসরকারিভাবে এ খাতে অভ্যন্তরীণ আয় হয়েছে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা; যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৩০০ কোটি টাকা। তিন মাসে এ খাতে আয়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৩৪ শতাংশ। শুধু পর্যটন কর্পোরেশন আলাদাভাবে শুধু একটি খাতে ব্যবসা করেছে প্রায় চার কোটি টাকার।

অপর দিকে ট্যুরিজম বোর্ড বলছে, তারা এ খাতকে আরো এগিয়ে নিতে একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে। এগুলো বাস্তবায়ন হলে তা আয়ের বড়ো উৎস হিসেবে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখবে।

বাংলাদেশ ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন জানান, করোনা মহামারী কমে আসায় এখন তারা ঘুরে দাঁড়াচ্ছেন। গেল ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিন মাসে তারা এ খাতে অভ্যন্তরীণ পর্যটন থেকে আয় করেছেন প্রায় ৪০০ কোটি টাকা।

উল্লেখিত আয় তাদের প্রত্যাশার চেয়ে ৪০ শতাংশ কম মন্তব্য করে তিনি বলেন, বিগত তিন মাসে তাদের লক্ষ্য ছিল অভ্যন্তরীণ পর্যটন থেকে ১ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা করা। কিন্তু যে সময়ে ব্যবসা চাঙা হতে শুরু করেছে ঠিক সে সময়ে করোনা ফের বাড়তে শুরু করে। ফলে পর্যটন স্পটগুলোতে ঢল নামতে থাকা মানুষ অতঙ্কিত হয়ে পড়ে। যার কারণে ভরা মওসুমে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে হঠাৎ মানুষ কমতে শুরু করে। যার কারণে এ খাতে বড় উৎসের অন্যতম সুন্দরবনেও জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে চাঙা হয়েও আবার সঙ্কটে পড়ে ব্যবসা। ফলে নির্ধারিত লক্ষ্যের ৪০ শতাংশে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার ব্যবসা হলেও ৬০ শতাংশ ব্যবসা হয়নি।

বিগত দুই বছরের লোকসানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এবার তাদের প্রত্যাশা ছিল ব্যবসায় বিগত লোকসানের একটা বড় অংশ উঠে আসবে কিন্তু হয়নি। এভাবে ধাপে ধাপে যদি এ খাত হোঁচট খায় তবে বিগত ক্ষতি কাটাতে অনেক দিন সময় লাগবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

টোয়াবে ৭৭৫ সদস্যের সাথে অসংখ্য মানুষের জীবন জীবিকা জড়িয়ে আছে জানিয়ে তিনি বলেন, করোনায় তাদের অনেকেই রাস্তায় বসে গেছেন। কিন্তু এখন ধীরে ধীরে যদি তা থেকে বেরিয়ে না আসা যায় তবে সঙ্কট কাটানো কঠিন হবে।

পর্যটক এবং অর্থনৈতিক স্বার্থে সরকারের সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের যত পর্যটন স্পট রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পর্যটক কক্সবাজার সিলেট ও সুন্দরবনে যান। কিন্তু এসব স্পটে পর্যটকরা যাতে নির্ভিঘ্নে যেতে পারেন তার জন্য উন্নয়ন প্রয়োজন।

অপর দিকে পর্যটন করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা জিয়াউল হক হাওলাদার বলেন, পর্যটন খাতে এ বছর আশানুরূপ ব্যবসা হয়েছে। তার মতে, বিগত তিন মাসে পর্যটন করপোরেশন শুধু নিজেদের হোটেল মোটেল থেকে চার কোটি টাকার ব্যবসা করেছে।

ট্যুরিজম খাতে আশা জাগছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, চলমান অবস্থায় তারা আশাবাদী এ খাত আবার আগের অবস্থায় ফিরবে। কারণ গত কয়েক মাসে প্রতিটি স্পটে মানুষের ঢল এমন আশার সঞ্চার করেছে।

এ দিকে ট্যুরিজম বোর্ডের একজন কর্মকর্তা জানান, পর্যটন খাতকে উন্নয়নের শীর্ষে নিয়ে যেতে সরকার সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। তার মতে, ইতোমধ্যে মহাপরিকল্পনা ছাড়াও পর্যটন স্পটগুলোর কোথায় কি ঘাটতি রয়েছে তাও চিহ্নিত করা হয়েছে। তিনি জানান, এসব নিয়ে গঠিত কমিটি আলোচনা করে করণীয় ঠিক করেছে। কিছু কাজ শুরু হয়েছে আর কিছু প্রক্রিয়া চলমান। এগুলো শেষ হলে দেশের পর্যটনের চেহারা বদলে যাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

অবৈধ দখলে সৌন্দর্য হারাচ্ছে পর্যটন শহর রাঙামাটি
২০২২-কে ‘ইফিশিয়েন্ট ইয়ার’ ঘোষণা করলেন ওয়ালটনের সিইও গোলাম মুর্শেদ

আপনার মতামত লিখুন