এয়ার টিকিটের দাম বৃদ্ধিতে পর্যটনে নেতিবাচক প্রভাব

আকাশ পথে টিকিটের অতিরিক্ত দাম বৃদ্ধিতে পর্যটন খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ট্যুরিজম ব্যবসায়ীরা বলছেন, হঠাৎ করে ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে সব এয়ারলাইন্সের টিকিটের দাম বৃদ্ধির কারণে পর্যটক অর্ধেকে নেমে এসেছে। ফলে করোনার পর ঘুরে দাঁড়ানো পর্যটন খাতে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনা মহামারীতে ব্যাপক লোকসানে পড়া পর্যটন শিল্প ঘুরে দাঁড়ানোর মুহূর্তে যখন তারা আশার আলো দেখছেন ঠিক তখনি টিকিটের উচ্চমূল্য আবারো এ খাতকে ঝুঁকিতে ফেলেছে। তাদের ধারণা এমন চলতে থাকলে সামনের সময়ে ট্যুরিজম চাঙা হয়ে ওঠার পরিবর্তে স্থবির অবস্থায় পড়তে পারে।
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন বলছে, করোনা লকডাউনের পর কক্সবাজারসহ দেশের কিছু পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেয়ার পর পর্যটকদের আগ্রহে তারা ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছিলেন। কিন্তু সব ফ্লাইটের টিকিটে অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধিতে পর্যটক দিন দিন কমছে। ব্যবসা চাঙার সময়ে এমন অবস্থায় তাদের মধ্যে আবারো লোকশানের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তাদের মতে, টিকিটের এমন দাম বৃদ্ধি না হলে ব্যবসা ঘুরে দাঁড়াতে আর খুব সময় লাগত না। কারণ ইতোমধ্যে এ খাত চাঙা করতে সরকার একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে।
ট্যুরিজম বোর্ডের একজন কর্মকর্তা জানান, বিগত ১০ বছরে পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে সরকার কিছু যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে। এতে করে পর্যটকদের জন্য নতুন সুযোগ সুবিধা সৃষ্টির সাথে কর্মসংস্থানও বেড়েছে। এর মধ্যে শুধু কক্সবাজারে তিনটি পর্যটন পার্ক তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। এগুলো হলো সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক, নাফ ট্যুরিজম পার্ক এবং সোনাদিয়া ইকো ট্যুরিজম পার্ক। এতে করে প্রতি বছরে বাড়তি ২০০ কোটি মার্কিন ডলারের অর্থনৈতিক কার্যক্রমের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়া প্রায় ৪০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এর বাইরে দেশে আন্তর্জাতিক মানের পাঁচ তারকা হোটেল স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। আগামী ২ থেকে ৩ বছরের মধ্যে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেটসহ অন্যান্য এলাকায় প্রায় নতুন ১০টি পাঁচ তারকা হোটেল হবে। এতে আরো প্রায় ১০ হাজারের মতো প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান তৈরি হবে।
কক্সবাজারের নাফ নদীর মোহনায় চালু হচ্ছে বিশ^মানের পর্যটন কেন্দ্র। প্রায় ৫০ কোটি মার্কিন ডলার বাংলাদেশী প্রায় চার হাজার ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ এই মেগা প্রজেক্টের কাজ ইতোমধ্যে অনেকদূর এগিয়েছে। প্রকল্পটি বাস্থবায়নে তদারকি করছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা)।
বেজার মতে, নাফ ট্যুরিজম পার্কে প্রায় ১২ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। পার্কটিতে পাঁচ ও তিন তারকা হোটেল, জিমনেসিয়ামসহ অ্যাপার্টমেন্ট, রিসোর্ট, বিনোদন পার্ক, লাইভ এন্টারটেইনমেন্ট থিয়েটার ও মিউজিয়াম, মেগা শপিংমল, সিনেমা হল, বোলিং সেন্টার, ঘূর্ণায়মান রেস্তোরাঁ, ওয়াটার স্পোর্টস বিচ, গলফ ক্লাব, কেবল কার, নদী ভ্রমণ, মিউজিক্যাল ওয়াটার ফাউন্টেইন, মসজিদ, অফিস ভবন, পাওয়ার প্ল্যান্টসহ অন্যান্য অবকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধা স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন