শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
জাতীয়

দুই বিমান আনতে বিদেশ যাচ্ছেন ৪৫ জন, ১০ জনের আনন্দ ভ্রমণ!

অনলাইন ডেস্ক
১৫ ডিসেম্বর ২০১৯

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বোয়িং কোম্পানি থেকে আরও দুটি ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ কিনেছে। এই দুটি উড়োজাহাজ আনার জন্যে ৪৫ সদস্যের একটি দল আমেরিকার সিয়াটলে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর মধ্যে কমপক্ষে ১০ জন যাচ্ছেন বিনা কারণে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ১৩ জন প্রকৌশলী, ৮ জন পাইলট, ১২ জন কেবিন ক্রু এবং সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশের (সিএএবি) দু’জন বিশেষজ্ঞ রয়েছেন এই দলে। উড়োজাহাজ দুটি নিয়ে আসার ক্ষেত্রে তাদের সবারই ভূমিকা রয়েছে।

অন্য যে ১০ জন উড়োজাহাজ আনার দলে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন তারা হলেন: অর্থ মন্ত্রণালয়ের দুজন কর্মকর্তা, আইন ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের দুজন কর্মকর্তা, বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান, সিএএবির চেয়ারম্যান, বেসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব এবং বেসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রণালয় ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দুজন জনসংযোগ কর্মকর্তা।

‘ভ্রমণের উদ্দেশ্য ছাড়া এই ১০ জনের আমেরিকা যাওয়ার কোনও কারণ নেই,’ মন্তব্য করেন বিমানের এক উচ্চ-পদস্থ কর্মকর্তা। একটি জাতীয় দৈনিকের কাছে বিমানের একাধিক কর্মকর্তা উড়োজাহাজ আনতে এতো কর্মকর্তার যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার সমালোচনা করেছেন। তাদের মধ্যে একজন বলেন, ‘তারা কি জনগণের টাকা খরচ করে পিকনিকে বা আনন্দ ভ্রমণে যাচ্ছেন?’

এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, ‘বিমানের উচিত জনগণের অর্থের অপব্যবহার না করা।’ বিমানের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সম্প্রতি বিমান পরিচালনা পর্ষদে ব্যয় কমানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু, এখন বোর্ডের সদস্যরাই যুক্তরাষ্ট্রে ব্যয়বহুল সফরে যাচ্ছেন।

বিমানের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল (অব) মুহাম্মদ এনামুল বারী ওই জাতীয় দৈনিককে বলেন, ‘নতুন উড়োজাহাজে সবাই ফেরত আসবেন। ফলে প্রতিনিধি দলের সদস্যদের ফিরতি যাত্রা হবে বিনামূল্যে।’ যাদের প্রয়োজন নেই এমন ১০ কর্মকর্তা কেনো যাচ্ছেন?- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘উড়োজাহাজগুলো কেনার প্রক্রিয়ায় অর্থ, আইন ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জড়িত ছিলেন।’

বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোকাব্বির হোসেন দাবি করেছেন, প্রতিনিধি দলে বিনা প্রয়োজনে কাউকেই অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়ের সচিব মহিবুল হক বলেন, ‘এর আগে চারটি ৭৮৭-৮এস উড়োজাহাজ আনতে এখনকার থেকে অনেক বেশি সদস্য গিয়েছিলেন।

প্রতিনিধি দলের সদস্যরা আগামীকাল (১২ ডিসেম্বর) থেকে ঢাকা ত্যাগ করা শুরু করবেন এবং দলের সর্বশেষ সদস্য যাবেন ১৭ ডিসেম্বর। প্রথম উড়োজাহাজটি ২১ ডিসেম্বর এবং দ্বিতীয়টি ২৪ ডিসেম্বর দেশে আসার কথা রয়েছে।

গত ১৭ নভেম্বর দুবাই উড়োজাহাজ প্রদর্শনীতে বিমান এবং মার্কিন বিমান প্রস্তুতকারী সংস্থা বোয়িং ঘোষণা করে যে দুটি ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার কিনেছে বিমান। প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি উড়োজাহাজ দুটির নাম দিয়েছেন ‘সোনার তরী’ এবং ‘অচিন পাখি’।

বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়ের সচিব মহিবুল হক দাবি করেছেন যে ২৯৮ আসনের ৭৮৭-৯এস বোয়িংয়ের প্রতিটি উড়োজাহাজের দাম প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার। তবে তারা এই মডেলের দুটি উড়োজাহাজ কিনছে প্রায় ২৮৪ মিলিয়ন ডলারে, যা অর্ধেকেরও কম।

উড়োজাহাজ দুটি তারা এতো কম দামে পেয়েছে কারণ, চীন ও আমেরিকার বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে চীনের হাইনান এয়ারলাইন্স এই প্রতিষ্ঠানের কাছে অর্ডার দিয়েও উড়োজাহাজ দুটি নেয়নি। ৭৮৭-৯এস ড্রিমলাইনার দুটি যুক্ত হলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মোট উড়োজাহাজ সংখ্যা হবে ১৮টি।

ফুঁসছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, যুক্তরাষ্ট্রসহ ৪ দেশের ভ্রমণ সতর্কতা
সুন্দরবন ঘিরে সাতক্ষীরায় পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনা

আপনার মতামত লিখুন