শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
জাতীয়

ওয়ালটন প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম স্মরণে সভা ও দোয়া

 নিজস্ব প্রতিবেদক
১৭ ডিসেম্বর ২০১৯

বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদন শিল্পের পথিকৃৎ ওয়ালটন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এস এম নজরুল ইসলামের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ওয়ালটন গ্রুপের করপোরেট অফিসে স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিল হয়। এছাড়া ওয়ালটনের মিরপুর মিডিয়া অফিস, কারখানা ও দেশব্যাপী সব ওয়ালটন প্লাজা ও সংশ্লিষ্ট অফিসে  আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

করপোরেট অফিসে স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখেন ওয়ালটন গ্রুপের পরিচালক এস এম রেজাউল আলম, এস এম মনজুরুল আলম, নির্বাহী পরিচালক এস এম জাহিদ হাসান, তানভীর রহমান সজিব, এমদাদুল হক সরকার, নজরুল ইসলাম সরকার।

সভায় এস এম রেজাউল আলম তার বাবার আত্মার মাগফিরাত কামনায় সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন।

তিনি বলেন, ছোটবেলায় শুনেছি যাদের বাবা-মা নেই তারা অসহায়। আমি চিন্তা করতাম আমার তো বাবা-মা আছেন। কিন্তু বাবাকে হারিয়ে এখন বুঝতে পারি আমার কিছুই নেই। বাবার জন্য সবাই দোয়া করবেন।

ওয়ালটনের অগ্রযাত্রা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা ব্যতিক্রমী বিশেষ কিছু কাজ করেছি। দেশে-বিদেশে ওয়ালটনের নাম শোনা মাত্রই সবাই সম্মান করে। বিদেশে বাংলাদেশকে এক সময় চিনত না। দেশের নাম সবার কাছে পৌঁছে দিতে আমরা চেষ্টা করেছি। ওয়ালটন বাংলাদেশে যে কিছু একটা করে তা পৃথিবীর ৭০০ কোটি মানুষের মধ্যে প্রযুক্তি নিয়ে যারা কাজ করে তারা জানেন।

স্মৃতিচারণ করে এস এম মনজুরুল আলম বলেন, দাদুর সঙ্গে আমাদের জেনারেশনের মধ্যে আমিই বেশি টাইম স্পেন্ড করছি। ফজরের নামাজ পড়ে দাদু লাউডলি কোরআন শরীফ পড়তেন। ছোটবেলা থেকে দেখে এসেছি তিনি এভাবে কোরআর শরীফ পড়তেন। যদিও শেষের দিকে এসে তিনি ডাক্তারের পরামর্শে আস্তে আস্তে কোরআন পড়তেন।

তিনি আরো বলেন, হাসপাতালে উনার সঙ্গে থাকতাম। একরাতে উনার হাতে স্যালাইন চলছিল। উনি ওয়াশরুমে যাবেন। কিন্তু দেখলেন আমি ঘুমিয়ে আছি। আমার ঘুম ভাঙলে কষ্ট হবে ভেবে তিনি আমাকে ডাকলেন না। নিজে নিজে হাতের স্যালাইন খুলে ওয়াশরুমে গেলেন। এ কারণে রুম থেকে ওয়াশরুম পর্যন্ত রক্ত পড়েছিল। কিন্তু তিনি আমার বা আমাদের কষ্ট হোক তা চাইতেন না।

এস এম জাহিদ হাসান বলেন, তিনি জীবনের শেষ সময়ে এসেও প্রতিষ্ঠানকে ভুলেননি। প্রতিষ্ঠান কোন দিকে যাচ্ছে, লাভ হচ্ছে নাকি লোকসান হচ্ছে, আমরা ঠিকমতো কাজ করতে পারছি কি না, নিয়মিত বেতন পাই কি না- এটাও আমার সঙ্গে দেখা হলেই জানতে চাইতেন। তাহলে বুঝতেই পারছেন, একটা মানুষের যখন স্বাভাবিক জ্ঞান অনেকটাই বিলুপ পেয়েছে, অনেক স্মৃতি মনে রাখতে পারছেন না তখনও তিনি আমাদের কথা মনে রেখেছেন। আমরা তাকে ভুলে যাইনি, তার প্রমাণ আমাদের সবার এখানে উপস্থিতি। আমরা তার মাগফিরাতের জন্য দোয়া করব।

তিনি বলেন, তার কোনো চাহিদা ছিল না। বাংলাদেশে ইলেক্ট্রিক্যাল ও ইলেক্ট্রনিক্স জগতের পাইওনিয়র হওয়া জন্য তিনি আমাদের পথ দেখিয়েছেন। আপনারা জানেন ওয়ালটন বাংলাদেশের এক নম্বর ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য। এখন গ্লোবাল পাঁচটি ব্র্যান্ডের একটি ব্র্যান্ড হওয়ার জন্য আমরা চেষ্টা করছি।

তানভীর রহমান সজিব বলেন, কাজের ব্যস্ততার কারণে চাচাকে খুব বেশি পাইনি। শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তি হিসেবে তিনি সব জায়গায় পরিচিত। এখনো তাকে সবাই এক নামে চেনেন। আমরা যদিও বড় হয়েছি এখন, উনার পরিচয়ে এখন আমাদের চলতে হচ্ছে। তিনি এখানে যেমন সম্মানীয় ছিলেন আল্লাহর কাছেও যেন এমন সম্মানীয় হন সে দোয়া সবাই করবেন।

এমদাদুল হক সরকার বলেন, তিনি আত্মীয় স্বজনদের প্রতি খুব আন্তরিক ও যত্নশীল ছিলেন। ওয়ালটনের একটা ক্যালেন্ডার ছাপানো হলেও তিনি ছোট বোনের বাসায় গিয়ে দিয়ে আসতেন।

নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, উনি খুব পরিশ্রমী ছিলেন। তাকে আদর্শ মেনে আমরা কাজ করে যাব।

মিরপুরে মিডিয়া অফিসে দোয়া মাহফিল : এদিকে এস এম নজরুল ইসলামের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে মিরপুরে মিডিয়া অফিসে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বক্তব‌্য রাখেন ওয়ালটনের নির্বাহী পরিচালক (পিআর অ‌্যান্ড মিডিয়া) মো. হুমায়ুন কবীর, রাইজিংবিডির উপদেষ্টা সম্পাদক উদয় হাকিম, ওয়ালটনের মিডিয়া উপদেষ্টা এনায়েত ফেরদৌস, রাইজিংবিডির সম্পাদক মো. নওশের আলী, প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা মিলটন আহমেদ প্রমুখ।

এছাড়া ওয়ালটনের কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং দেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডি ডটকমের সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশের ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদন শিল্পের পথিকৃৎ ওয়ালটনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এস এম নজরুল ইসলাম ২০১৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর ইন্তেকাল করেন। কর্মজীবনে অত্যন্ত সফল ব্যক্তিত্ব আলহাজ এসএম নজরুল ইসলাম ৭ মে, ১৯২৪ সালে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার গোসাই জোয়াইর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম এস এম আতাহার আলী তালুকদার এবং মাতার নাম মোসাম্মৎ শামছুন নাহার। দেশের মানুষের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যে ইলেকট্রনিক্স পণ্যসামগ্রী পৌঁছে দিতে ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠা করেন রেজভী অ্যান্ড ব্রাদার্স, সংক্ষেপে আরবি গ্রুপ। পরবর্তীতে তা নাম বদলে হয়ে যায় ওয়ালটন গ্রুপ।

আন্দোলনের জের, বিপর্যস্ত পর্যটন
চীনে হয়ে গেলো আন্তর্জাতিক পর্যটন উৎসব

আপনার মতামত লিখুন