শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪ | ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
জাতীয়

বিএনএনআরসি’র উদ্যোগে কমিউনিটি মিডিয়া ফেলোদের ভার্চুয়াল ওরিয়েন্টেশন

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৬ জুন ২০২০

কমিউনিটি মিডিয়ায় তৃণমূল পর্যায়ের যুব ও যুব নারীদের  অংশগ্রহণের মাধ্যমে সামাজিক বৈষম্য দূরীকরণ এবং করোনা সংকট মোকাবেলায় স্থানীয় পর্যায়ে সরকারি ত্রাণ ও চিকিৎসা সেবায় ও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে  দলিত ও অনগ্রসর সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর সুবিধা প্রাপ্তির প্রক্রিয়ায় যুক্ত করার  লক্ষ্যে বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও এন্ড কমিউনিকেশন (বিএনএনআরসি)  স্থানীয় পর্যায়ে সম্ভাবনাময় দলিত যুব ও যুব নারীদের জন্য ১০ মেয়াদে ফেলোশিপ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।

ফ্রি প্রেস আনলিমিটেড-এর সহায়তায় পরিচালিত এ কর্মসূচির আওতায় দেশের ১১টি কমিউনিটি রেডিও সম্প্রচারভুক্ত  এলাকার মোট ২৪ জন দলিত ও অনগ্রসর সম্প্রদায়ের  যুব ও যুব নারী  এবং তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধি স্থানীয় কমিউনিটি রেডিও’র সাথে যুক্ত হয়ে কমিউনিটি মিডিয়া সাংবাদিকতায় দক্ষতা অর্জন করছে।

ফেলোশিপকালীন ( জুন-আগস্ট ২০২০) ফেলোরা  তাদের নিজ নিজ  সম্প্রদায়ের অধিকার সুরক্ষা ও জীবনমান উন্নয়নে সরকারি ত্রান ও চিকিৎসা সেবা ও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায়  বরাদ্দকৃত সুবিধা  সম্পর্কে  কমিউনিটি রেডিও ও সোশ্যাল মিডিয়া তথা ফেসবুকে অডিও-ভিজ্যুয়াল প্রতিবেদন প্রচার করার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর ও সংস্থার সাথে নিয়মিত  যোগাযোগ ও ফলো-আপের মাধ্যমে উক্ত  জনগোষ্ঠীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করবেন ।

সে মেমাতাবেক  কমিউনিটি মিডিয়া সাংবাদিক হিসেবে ফেলোদের কার্যক্রম  সম্পাদনে জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে  ১৫-১৬জুন, ২০২০ দুইদিন ব্যাপী  একটি অনলাইন ওরিয়েন্টেশন কোর্স  অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালাটি ভার্চুয়াল তথা জুম মিটিং-এর মাধ্যমে ঢাকা থেকে পরিচালিত হয়েছে।  কর্মশালায়  ২৪ জন ফেলো, ১১ জন মেন্টর ও বিএনএনআরসি’র কর্মকর্তাসহ মোট ৪২ জন অংশগ্রহণ করেন। 

অংশগ্রহণকারী ফেলো এবং  সংশ্লিষ্ট কমিউনিটি রেডিও স্টেশন হলো- মো. মাজেদ আলী, মো. সোহেল আহমেদ (জুলি) মো. শহীদুল ইসলাম ও মোঃ শাকিল আহমেদ, (রেডিও পদ্মা, রাজশাহী ), মো:রেজাউল করিম ( রেডিও নলতা, সাতক্ষীরা), নাসরিন জাহান রিয়া (রেডিও লোকবেতার, বরগুনা); ঐশি দাশ  এবং তমা মজুমদার (রেডিও সাগরগিরি, সীতাকুন্ড); মোসা: ফাতিমা তুজ জোহরা ও মো. আজিম আলী (রেডিও মহানন্দা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ); মো. তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী, হানিফা খাতুন ও সিনথিয়া ইসলাম ( রেডিও মুক্তি, বগুড়া); রিমা আক্তার, মোঃ সাইদুর রহমান ও মোঃ মাইনুল ইসলাম (কৃষি রেডিও, বরগুনা); ফুলাল ও সংগীত লিন্ডা  (বরেন্দ্র রেডিও, নওগাঁ); জেসমিন বেগম ও শারমিন বেগম (রেডিও মেঘনা, ভোলা); শোভা রানী ও সুজন চন্দ্র দাস ( রেডিও সারাবেলা, গাইবান্ধা) এবং মৌসুমী দাস ও মিনহাজুল ইসলাম (রেডিও বড়াল, রাজশাহী)। 

দুদিন ব্যাপী উক্ত ভার্চুয়াল কর্মশালায় ফেলোশিপ কার্যক্রমের লক্ষ্য- উদ্দেশ্য  এবং বিগত ৯টি ব্যাচের সার্বিক ফলাফল তুলে ধরার পাশাপাশি বাংলাদেশের দলিত ও অনগ্রসর সম্প্রদায়ের বর্তমান পরিস্থিতি, সমস্যা ও চ্যালেঞ্জসমূহ, সমস্যা মোকাবেলায় কমিউনিটি মিডিয়া সংবাদকর্মী তথা  কমিউনিটি সম্প্রচারকারী হিসেবে ফেলোদের ভূমিকা, সামাজিক নিরাপত্তা ও করোনা ইস্যুতে রেডিও সাংবাদিকতা, করোনাত্তোর সংকটকালীন  দলিত ও অনগ্রসর সম্প্রদায়ের আর্থ-সামাজিক,  চ্যালেঞ্জ ও সংকট মোকাবেলায় স্থানীয় সরকারের গৃহীত সেবামূলক কার্যক্রম তাদের অন্তর্ভুক্তিকরণ,  নিউজ রিপোর্টিং-এর মাধ্যমে কার্যকরী ভাবে কমিউনিটি মবিলাইজেশন এবং করোনা পরবর্তী উন্নয়ন ইস্যুতে দলিত ও অনগ্রসর সম্প্রদায়ের যোগসূত্র স্থাপনের কলা-কৌশল  এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (বিশেষ করে ফেসবুক)-এর সঠিক ব্যবহারে মাধ্যমে ইস্যু ভিত্তিক রেডিও নিউজ ও অনুষ্ঠান প্রচারের কলা-কৌশল বা কারিগরি দিকসমূহ নিয়ে আলোচনা করা হয়। 

উল্লেখিত বিষয়সমূহে আলোচক হিসেবে অংশগ্রহণ করেন  মিস. তামান্না রহমান , সমন্বয়কারী, বিএনএনআরসি; মিস. বনানী বিশ্বাস, সেক্রেটারি, দলিত উইমেন ফেডারেশন;  মি. আমীন আল রশীদ, কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এডিটর, রংধনু টিভি ; মি. মার্ক মানস সাহা, সমন্বয়কারী, বিএনএনআরসি, মিস শাহনাজ শারমীন, চিফ রিপোর্টার, নাগরিক টিভি এবং জাহাঙ্গীর আহমেদ, সহ. সমন্বয়কারী, ওয়েব এন্ড সোস্যাল মিডিয়া,  বিএনএনআরসি। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিএনএনআরসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এএইচএম বজলুর রহমান। 

কমিউনিটি মিডিয়ায় দলিত যুব ও যুব নারীদের ফেলোশিপ কার্যক্রমটি টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-১০ (অসমতা হ্রাসকরণ) অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। 

উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে এই কর্মসূচির আওতায় দেশের মোট ১৮টি কমিউনিটি রেডিওতে বিভিন্ন মেয়াদে ৯টি ব্যাচে সর্বমোট ১৫৯ জন স্থানীয় যুব ও যুব নারী সাংবাদিকতায় ফেলোশিপ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ১১২ জনই এসেছে দলিত সম্প্রদায় থেকে।

ফেলোশিপ কার্যক্রমের মাধ্যমে  ফেলোরা  সংবাদ প্রতিবেদন প্রচার ও নিয়মিত  যোগাযোগ ও ফলো-আপের মাধ্যমে স্থানীয় ক্ষমতা কাঠামোকে প্রভাবিত করার মাধ্যমে এ পযর্ন্ত  সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায়  দলিত ও অনগ্রসর সম্প্রদায়ের মোট ৩৩১৪ জন মানুষের জন্য  সর্বমোট ২,৭১,৮৯,৮০০ টাকা মূল্যমানের সুবিধা প্রাপ্তিতে সহায়তা করেছে।  

চরের অবহেলিত মানুষের পরমাত্মীয়
ওয়ালটন ফ্রিজ কিনে মিলিয়নিয়ার হলেন গাজীপুরের দর্জি ওয়াজেদ

আপনার মতামত লিখুন