বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
জাতীয়

অভিনব কৌশলে শতাধিক দোকান চুরি করে পুলিশের জালে তারা

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
০৭ জুলাই ২০২০

তারা প্রায় একশ দোকান চুরি করেছে। টার্গেট মোবাইল ও বিকাশ দোকান। পুরো দেশ ঘুরে ঘুরে চুরি করে তারা। প্রথমে মহিলা দিয়ে দোকান রেকি করে, তারপর চুরি করে। অবশেষে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটনের বাকলিয়া থানা পুলিশের জালে চোরাই মোবাইল সহ ধরা পড়েছে তারা। 

বাকলিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন পিপিএম বলেন, সংঘবদ্ধ বিকাশ ও মোবাইল ফোন চোর চক্রের এক মহিলা সদস্যসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে বাকলিয়া থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃত চোরদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা চট্টগ্রামসহ সমগ্র বাংলাদেশের বিভিন্ন বিকাশ ও মোবাইল দোকানের শতাধিক চুরির সাথে জড়িত। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে বিকাশ ও মোবাইল ফোন চুরির অভিনব কৌশল সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. রাজু রাসেল (২৬), মো. আল আমিন (২০), নাসরিন আক্তার পলি (৩২), মহরম আলী (২২), মো. সিরাজ (২৪)। তাদের সহযোগী অপরাপর আসামী মো. রুবেল (২৪), মো. ফয়সাল ফরহাদ (২২), মো. সোহেলসহ (২৫) আরও ৪-৫ জন পলাতক রয়েছে। 

গ্রেফতারকৃত চোরদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করে, তারা ইতিপূর্বে চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে, শপিং মলে ও দোকানে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় শতাধিক চুরির ঘটনা সংঘটিত করে। চুরির ঘটনায় সর্বপ্রথম চোর চক্রের মহিলা সদস্য ক্রেতা সেজে অথবা অন্য কোন উপায়ে যে দোকান চুরি করা হবে সে দোকানের পরিস্থিতি, আশপাশের পরিবেশ ও দোকানের অবস্থান, গমনাগমনের রাস্তা ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করে আসে। অতপর পরিস্থিতি অনুযায়ী পরিকল্পনা করে এবং অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে সিএনজিযোগে টার্গেটকৃত দোকানের কাছে গিয়ে কয়েকজন দোকানের বাহিরে অবস্থান নেয় এবং আশেপাশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে। চোর দলের মধ্যে একজন টার্গেটকৃত দোকানের সার্টার/তালা ভাঙ্গে, অপর একজন দোকানের ভিতরে ঢুকে ৪/৫ মিনিটের মধ্যে মূল্যবান মোবাইল এবং ক্যাশ বাক্স হতে নগদ টাকা-পয়সা চুরি করে দ্রুত সময়ে সিএনজিযোগে  ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। চুরির জন্য তারা বিশেষ করে ভোর বেলার সময়কে বেছে নেয়। তারা উপরোক্ত কায়দায় চট্টগ্রাম মহানগরীর সানমার ওশান সিটি, রিয়াজ উদ্দিন বাজার, তামাককুন্ডি লেইন, শাহ আমানত মার্কেট সহ বাংলাদেশের  বিভিন্ন জেলার মার্কেট চুরি করেছে মর্মে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। গত ৬ জুলাই সকাল সাড়ে ১১টায় বাকলিয়া থানা পুলিশ গোপন সংবাদ সূত্রে জানতে পারে, বাকলিয়া থানাধীন তুলতলীস্থ ডুবাই অলার কলোনীতে আসামী নাসরিন আকতার পলির ভাড়া ঘরে ৭-৮ জন লোক চোরাই মোবাইল ফোন নিজেদের হেফাজতে রেখে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে সমবেত হয়েছে। প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে টিম বাকলিয়ার অফিসারগণ ধৃত আসামী নাসরিন আক্তার পলি (৩২) এর ভাড়া ঘর বাকলিয়া থানাধীন তুলতলীস্থ ডুবাই অলার কলোনীতে আসামীর খাটের নীচ হতে আসামী  নিজ হাতে বের করে দেওয়া ৩৬টি মূল্যবান এন্ড্রয়েট মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয় এবং ঘটনাস্থল হতে আসামী নাসরিন আক্তার পলি, রাজু, রাসেল, আল আমিনদের গ্রেফতার করা হয়।  পরবর্তীতে তাদের দেওয়া তথ্য মতে তাদের অপরাপর সহযোগীদের বাকলিয়া থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মহরম আলী ও সিরাজদ্বয়কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পলাতক আসামীসহ অজ্ঞাতনামা আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। গ্রেফতারকৃত ও পলাতক আসামীগণ উক্ত চোরাইকৃত মোবাইল ফোন সমূহ কর্ণফুলী থানাধীন সেন্টার ইত্যাদি শপিং কমপ্লেক্স মার্কেটের ২য় তলার জাম্বু মোবাইলের দোকান হতে চুরি করার কথা স্বীকার করে। গ্রেফতারকৃত চোর চক্রের ৫ জন সদস্যকে যথাযথ নিয়মে আদালতে প্রেরণ করলে আসামী মো. আল আমিন (২০) মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরোয়ার জাহানের আদালতে অপরাধের দায় স্বীকার করে।

আসামিদের কাছ থেকে ৩৬টি মূল্যবান নতুন এন্ড্রুয়েট বিভিন্ন মডেলের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়, যার মূল্য অনুমানিক তিন লক্ষ টাকা।

অগ্রণী ব্যাংকের নতুন দিগন্তের উম্মোচন
কক্সবাজারকে বিশ্বমানের পর্যটন নগরী করতে কাজ করছে সরকার: গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী

আপনার মতামত লিখুন