শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
জাতীয়

যুক্তরাজ্যের গবেষণা

ধূমপান ছাড়তে ভেপিং সবচেয়ে কার্যকর

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৮ এপ্রিল ২০২১

যুক্তরাজ্যের ধূমপায়ীরা ধূমপান ছাড়ার ক্ষেত্রে ক্রমেই অধিকহারে ভেপিংয়ের ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠছেন।গেল বছর দেশটিতে ধূমপান ছেড়েছেন এমন ব্যক্তিদের প্রায় এক তৃতীয়াংশই ভেপিংয়কে ধূমপান ছাড়ার মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছেন।

যুক্তরাজ্যের পাবলিক হেলথ ডিপার্টমেন্টের (পিএইচই) গবেষণায় চিত্র উঠে এসেছে। লন্ডনের কিংস কলেজ পাবলিক হেলথের হয়ে এই গবেষণা পরিচালনা করেছে। সম্প্রতি দেশটির সরকারি ওয়েবসাইটে গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। পিএইচইর স্বাস্থ্য সেবা উন্নয়ন বিষয়ক পরিচালক জন নিউটন বলেন, যুক্তরোজ্যে এখনো মৃত্যু ও অসুস্থতার অন্যতম কারণ ধূমপান। ২০১৯ সালে দেশটিতে প্রায় ৭৫ হাজার লোক মারা গেছেন ধূমপানের কারণে। 

নিউটনের মতে, ধূমপান পুরোপুরি ছাড়তে পারলে সবচেয়ে ভালো। তবে তা সম্ভব না হলে বিকল্প হিসেবে ভেপিংকে বেছে নেওয়াই সঠিক সিদ্ধান্ত হবে। কেননা, তারা এখন পর্যন্ত সাত দফায় গবেষণা পরিচালনা করেছেন ভেপিং নিয়ে। প্রতিবারই দেখেছেন ধূমপান ছাড়ার সবচেয়ে কার্যকর উপায় ভেপিং। ২০১৭ সালে প্রায় ৫০ হাজার ধূমপায়ী ভেপিংয়ের সহায়তায় ধূমপান সফলভাবে ধূমপান ছেড়েছেন। 

২০২০ সালে সর্বশেষ গবেষণায় দেখা গেছে, নিকোটিন নির্ভর ভেপিংকে ধূমপান ছাড়ার সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। গেল বছর ইংল্যান্ডে ধূমপান ছেড়েছেন এমন ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ ২৭ দশমিক দুই শতাংশ ভেপিংয়ের সহায়তা নিয়েছেন। আর ১৮ দশমিক দুই শতাংশ ধূমপায়ী নিকোটিকযুক্ত প্যাচ বা চুইংগামের সাহা্য্য নিয়েছেন। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যের ককরেন টোবাকো অ্যাডিকশন গ্রুপ বিভিন্ন দেশের ৫০টি গবেষণা পর্যালোচনা করে গবেষকেরা বলছেন, ধূমপান ছাড়তে নিকোটিকযুক্ত প্যাচ বা চুইংগামের তুলনায় ভেপিং বেশি কার্যকর।

এর আগে ২০১৫ সালে পাবলিক হেলথ অব ইংল্যান্ড তাদের সবচেয়ে সাড়া জাগানো গবেষণায় দেখেছে, সাধারণ সিগারেটের তুলনায় ভেপিং ৯৫ ভাগ কম ক্ষতিকর। এই পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস ধূমপান ছাড়ার জন্য ভেপিং ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছে। এর অংশ হিসেবে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালের দোকানগুলোতে ভেপিং বিক্রি হচ্ছে। সর্বশেষ গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৯ সালে ভেপিংয়ের সাহায্যে ধূমপান ছাড়ার সফলতার হার ছিল ৫৯ শতাংশ, বছর গড়াতে ২০২০ সালে এই সফলতার হার ৭৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। 

লন্ডনের কিংস কলেজের টোব্যাকো অ্যাডিকশন বিভাগের অধ্যাপক অ্যান ম্যাকনেইল এই গবেষণার প্রধান ছিলেন। তাঁর মতে, ২০৩০ সালের মধ্যে যুক্তরাজ্যকে ধূমপানমুক্ত করতে অন্যতম সহায়ক হবে ভেপিং। তবে এটা নিয়ে এখনো অনেকের মাঝে ভুল ধারণা রয়েছে।  ম্যাকনেইল বলেন, ভেপিং নিয়ে সচেতনা বাড়াতে আরও প্রচারণা দরকার। আর মনে রাখতে হবে, ভেপিং শুধু তাদের জন্য যারা ধূমপান ছাড়তে ইচ্ছুক, অধূমপায়ীদের জন্য নয়। ধূমপান ছাড়ার ক্ষেত্রে ভেপিং ব্যবহারে বিশ্বের সর্বাধুনিক স্বাস্থ্যসেবা কাঠামোর এই গবেষণা এবং পদক্ষেপ কী বার্তা দেয়? বাংলাদেশ এর থেকে কী বার্তা পেতে পারে? 

দেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাজ্যের অভিজ্ঞতা থেকে স্পষ্ট, বাংলাদেশেও তামাক এবং তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার হ্রাসের ক্ষেত্রে, ধূমপানের হার হ্রাসের ক্ষেত্রে কার্যকর উপায় হতে পারে ভেপিং। কারণ, বাস্তবে এর সহায়ক ভূমিকা ইতিমধ্যে প্রমাণিত।

‘বিশ্বে ডিজিটাল ইকোনমিতে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবে ওয়ালটন’
ফোন করলেই ঘরে পৌঁছে যাবে ওয়ালটন পণ্য

আপনার মতামত লিখুন