বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
জাতীয়

সব খুললেও খুলছে না পর্যটন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

অনলাইন ডেস্ক
১০ আগস্ট ২০২১

খুলে যাচ্ছে সব, বন্ধই থাকছে বিনোদন ও পর্যটন। ‘গ্যাদারিং হয়’ বলে খোলা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। যদিও ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) হিসাবে জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত এ খাতটি করোনার শুধু দ্বিতীয় ঢেউয়েই ২০ হাজার কোটিরও বেশি টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছে। আর চাকরি হারিয়ে বেকার হাজার হাজার মানুষ। আবার যারা পর্যটনকেন্দ্রগুলোকে উপজীব্য করে ব্যবসা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন, তাদের অবস্থাও বেহাল।

অনেকে পেশা বদল করেও মানিয়ে উঠতে পারছেন না। ফলে কঠিন এক সময়ের দিকে এগোচ্ছে পর্যটনশিল্প ও তার সঙ্গে জড়িতদের ভাগ্য বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার ঘোষিত সর্বাত্মক লকডাউন উঠে যাচ্ছে ১১ আগস্ট থেকে। এমন কথা জানা গেলেও পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়ার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ঘোষণা আসেনি। তাই অপেক্ষার প্রহর গুণতে হবে ভ্রমণ পিপাসুদের।

গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রায় সবকিছু খোলার কথা জানালেও তিনি বলেন, বিনোদনকেন্দ্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও জমায়েত বন্ধই থাকছে। বন্ধ থাকবে।

যদিও এর আগে গত রোববার পর্যটন না খোলার বিষয়ে আভাস দেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। ওদিন সচিবালয়ে পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, না, মনে হয় না। পর্যটন কেন্দ্রগুলো মনে হয় এই মুহূর্তে খুলছে না। এটা আরও পরে।

অথচ আজ থেকে ঠিক দুমাস আগে ১০ জুন ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব) জানিয়েছিল তাদের সমস্যার কথা। তুলে ধরেছিল করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাবে বেশ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প। যা টাকার অঙ্কে ২০ হাজার কোটিরও বেশি।

এক সংবাদ সম্মেলনে সেদিন টোয়াব জানায়, করোনাভাইরাসের প্রথম ঢেউয়ের পর বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প অভ্যন্তরীণ পর্যটনের মাধ্যমে কিছুটা ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার প্রচেষ্টায় ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। গত বছরের করোনার কারণে পর্যটনের সঙ্গে জড়িতদের সবার ক্ষতির পরিমাণ ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি। এ সময় শুধু টোয়াব সদস্যদের ক্ষতি হয়েছে পাঁচ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। আর চলতি বছরের মার্চ থেকে সবকিছু স্থবির হওয়ায় পর্যটন খাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়ছে। চলমান পরিস্থিতি আগামী ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত বাড়ানো হলে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকার বেশি হতে পারে।

টোয়াব সভাপতি ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের গভর্নিং বডি সদস্য মো. রাফেউজ্জামান বলেছিলেন, পর্যটন এখন বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম শিল্প। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। ২০১৯ সালের জিডিপিতে পর্যটন ৪ দশমিক চার শতাংশ অবদান রেখেছিল। তিনি আরও বলেছিলেন, মহামারীর কারণে পর্যটন খাতকে গত বছর প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার লোকসান গুণতে হয়েছে। এ শিল্পে জড়িত প্রায় ৪০ লাখ মানুষ এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে। অনেকেই হতাশ হয়ে অন্য ব্যবসায় চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে। আমরা টোয়াবের পক্ষ থেকে গত বছর করোনা মহামারীর শুরু থেকেই ট্যুর অপারেটর ও পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত সবার জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়ে আসছি, যা আজও সফলতার মুখ দেখেনি।

যে কারণে খুলছে না

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব ড. খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন, ১১ আগস্ট থেকে ধীরে ধীরে বিধিনিষেধ শিথিল করা হচ্ছে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিনোদন ও পর্যটন কেন্দ্র খোলার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক শেষে সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন সচিব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ সভায় অংশ নেন। বিনোদন ও পর্যটনকেন্দ্র খুলে না দেওয়ার বিষয়ে সচিব বলেন, বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে গ্যাদারিং বেশি হয়। এ কারণে পারমিশন দেওয়া হয়নি।

শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার পেলো ওয়ালটন
পর্যটন নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে চায় জর্ডান

আপনার মতামত লিখুন