শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
জাতীয়

বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন

৬৬১ কোটি টাকার দুই প্রকল্প এখন ঝুলছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
১০ অক্টোবর ২০২১
২০০৮ সালে পর্যটন করপোরশেনের প্রধান কার্যালয় রাজধানীর বিজয় সরণি থেকে নেওয়া হয় মহাখালীর হোটেল অবকাশে। সেখান থেকে গত বছর কার্যালয়টি স্থানান্তর করা হয় আগারগাঁওয়ে অবস্থিত ১৫ তলাবিশিষ্ট নিজস্ব ভবনে

২০০৮ সালে পর্যটন করপোরশেনের প্রধান কার্যালয় রাজধানীর বিজয় সরণি থেকে নেওয়া হয় মহাখালীর হোটেল অবকাশে। সেখান থেকে গত বছর কার্যালয়টি স্থানান্তর করা হয় আগারগাঁওয়ে অবস্থিত ১৫ তলাবিশিষ্ট নিজস্ব ভবনে

কক্সবাজারের হোটেল প্রবালকে আন্তর্জাতিক মানের হোটেল হিসেবে গড়ে তুলতে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে পর্যটন করপোরেশন। প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে তিন বছর আগে। ৫০৩ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্পটির এখনো অনুমোদন মেলেনি। এর বাইরে বরিশালে একটি পর্যটনকেন্দ্র করতে ১৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে আলাদা একটি প্রকল্প পরিকল্পনা কমিশনে জমা রয়েছে। কিন্তু সেটিরও অনুমোদন মেলেনি। পর্যটন করপোরেশন বলছে, তাদের নেওয়া নতুন প্রকল্পের অনুমোদন না হওয়ায় পর্যটনের উন্নয়নে তারা কোনো পদক্ষেপও নিতে পারছে না।

জানা গেছে, প্রতিষ্ঠার পর থেকে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) মাধ্যমে সরকার পর্যটন করপোরেশনকে এ পর্যন্ত ২৮ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। ২০০৩-২০০৪ অর্থবছরের পর করপোরেশনকে কোনো ঋণ দেয়নি সরকার। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এডিপির মাধ্যমে পর্যটন করপোরেশন অনুদান পেয়েছে ২৬২ কোটি টাকা।

হোটেল-মোটেল নিবন্ধন করছে পর্যটন মন্ত্রণালয়: দেশে কেউ নতুন হোটেল, মোটেল কিংবা রেস্তোরাঁ করতে গেলে নিবন্ধন দিচ্ছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। অথচ এ কাজটি করার কথা পর্যটন করপোরেশনের। আবার এখন যেসব হোটেল–মোটেল রয়েছে, সেগুলো নবায়নও করছে মন্ত্রণালয়। কর্মকর্তারা বলছেন, যানবাহনের লাইসেন্স যেমন বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি বা বিআরটিএ দিয়ে থাকে, তেমনি হোটেল–মোটেলের নিবন্ধন দেওয়ার কথা করপোরেশনের। কিন্তু কাজটি তারা করতে পারছে না। এ খাত থেকে বাড়তি আয় করার সুযোগ রয়েছে করপোরেশনের।

বারবার ঠিকানা বদল: পর্যটন করপোরেশনের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৩ সালের ১ জানুয়ারি রাজধানীর মতিঝিলের ইসলাম চেম্বার থেকে। এরপর প্রধান কার্যালয় নেওয়া হয় সেগুনবাগিচায়। সেখান থেকে কুর্মিটোলা বিমানবন্দরের একটি ভবনে প্রধান কার্যালয় স্থানান্তর করা হয়। এরপর কার্যালয় স্থানান্তর করা হয় বিজয় সরণিতে। বিজয় সরণি থেকে ২০০৮ সালে করপোরশেনের প্রধান কার্যালয় নেওয়া হয় মহাখালীর হোটেল অবকাশে। সব শেষে প্রতিষ্ঠার ৪৮ বছর পর ২০২০ সালের অক্টোবরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নিজস্ব কার্যালয়ের ঠিকানা খুঁজে পায় করপোরেশন। নিজস্ব কার্যালয়ের জন্য তৈরি করা হয়েছে ১৫তলা বিশিষ্ট ভবন।

যত আয়ের পথ: পর্যটন করপোরেশন দেশি-বিদেশি যাত্রীদের জন্য ১৯৭৯ সাল থেকে দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোতে শুল্কমুক্ত কেনাকাটার দোকান (ডিউটি ফ্রি শপ) চালু করে। দেশের তিনটি বিমানবন্দরে পর্যটন করপোরেশনের এখন সাতটি শুল্কমুক্ত দোকান রয়েছে। এর মধ্যে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তিনটি, চট্টগ্রামের শাহ আমানত ও সিলেট বিমানবন্দরে দুটি করে চারটি। এসব দোকানের বেশিরভাগ সামগ্রী বিদেশ থেকে সরাসরি আমদানি করা হয়। এখান থেকে বড় একটি আয় হয় পর্যটন করপোরেশনের। এ ছাড়া পর্যটন খাতে প্রশিক্ষিত জনবল তৈরিতে ন্যাশনাল হোটেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (এনএইচটিটিআই) গঠন করা হয় ১৯৭৪ সালে। এই ইনস্টিটিউট থেকে এ পর্যন্ত প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ৫৫ হাজার জন। ২০১৯–২০ অর্থবছরে এনএইচটিটিআই থেকে আয় হয়েছে ৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। পর্যটন করপোরেশনের বড় আয় আসে মহাখালীর হোটেল অবকাশ থেকে। ২০১৯–২০ অর্থবছরে এ হোটেল থেকে ১৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা আয় হয়েছে। এ ছাড়া ওই অর্থবছর কক্সবাজার হলিডে কমপ্লেক্স থেকে আয় হয়েছিল ৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। চট্টগ্রামের মোটেল সৈকত থেকে আয় হয়েছে আট কোটি টাকা। এর বাইরে লিজ দেওয়া হোটেল–মোটেল ও রেঁস্তোরা থেকেও আয় আসে করপোরেশনের। একই সঙ্গে লিজ দেওয়া ১২টি বার থেকে আয় করে করপোরেশন।

ইউরোপে একদিনে রেকর্ড ২.৪৪ মি. ডলারের টিভি রপ্তানি ওয়ালটনের
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় চলছে সব

আপনার মতামত লিখুন