শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
জাতীয়

লাউয়াছড়ায় মাত্রাতিরিক্ত পর্যটক: হুমকিতে বন ও বন্যপ্রাণী

নিজস্ব প্রতিবেদক
২০ জুলাই ২০২২

ঈদ উৎসবসহ বিভিন্ন উৎসবে মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে মাত্রাতিরিক্ত পর্যটকের সমাগম ঘটে। পর্যটকদের সাথে যানবহান ও হই হুল্লোড়ে ভরপুর হয়ে উঠে নিরব, নিস্তব্ধ বন। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে লাউয়াছড়া বন ও বনে বসবাসরত বন্যপ্রাণী।

গত ১০ জুলাই কোরবানির ঈদের তিনদিনে ৩ হাজার ৬৫ জন পর্যটক লাউয়াছড়া ভ্রমণ করেছেন। এর বাইরে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, বন বিভাগ, গাইড, সংবাদকর্মী, স্থানীয় বাসিন্দাসহ সংশ্লিষ্ট আরো অনেকেই রয়েছেন। এরপরও অন্যান্য সময়ের তুলনায় এই ঈদে বন্যাসহ নানা কারণে তুলনামূলক কম পর্যটক রয়েছেন বলে বনবিভাগ জানিয়েছে।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, লাউয়াছড়া উদ্যানে সচরাচরই পর্যটকের ব্যাপক উপস্থিতি থাকে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে কিছুটা বেশি লক্ষ্য করা যায়। তবে ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবের ছুটিতে মাত্রাতিরিক্ত পর্যটক সমাগম ঘটে। সাথে বিপুল সংখ্যক যানবহান ও হই হুল্লোড় দেখা যায়। দলবদ্ধভাবে বনে পর্যটকদের হই হুল্লোড়, চেঁচামেচি, ঢিল ছোড়াছুড়ির ঘটনাও ঘটে। এতে বনের শান্ত পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে। বন্যপ্রাণীর অবাধ চলাচলে বাঁধাগ্রস্ত হয়ে পড়ে।

গত ১০ জুলাই ঈদের দিন ১১ জন বিদেশীসহ ৩৪৩ জন পর্যটক, ঈদের পরদিন ৭ জন বিদেশী সহ ১৫১২ জন ও তৃতীয় দিন ১২ জুলাই ১ হাজার ২শ’ ১০ জন পর্যটকের উপস্থিতি ঘটে। ১ হাজার ২শ’ ৫০ হেক্টর আয়তনের এই বনে প্রতিনিয়ত অত্যধিক পর্যটকের কারণে বন্যপ্রাণী হুমকির মুখে রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন। তবে এর বাইরেও স্থানীয় খাসিয়া সম্প্রদায়, বনবিভাগ, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসহ বিভিন্ন বিভাগের লোকদের উপস্থিতি সচরাচরই থাকছে।

লাউয়াছড়া উদ্যানে বিরল প্রজাতির উল্লুকসহ বিভিন্ন ধরণের বন্যপ্রাণীর অবাধ বিরচণ রয়েছে। তবে পুরাতন গাছ বিলীন, সড়কপথ, রেলপথ, বৈদ্যুতিক লাইন, শিকারীদের অপতৎপরতা, বনের আশপাশে লেবু-আনারস বাগানসহ নানা কারণে প্রাণীর মৃত্যু ও ঝুঁকি বেড়েছে।

লাউয়াছড়া জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আহাদ, স্থানীয় বাসিন্দা সাজু মারচিয়াঙ বলেন, লাউয়াছড়া বনে অত্যধিক পর্যটকের কারণে হুমকির মুখে বন্যপ্রাণী। তাছাড়া ঈদ উৎসবে পর্যটকের যে পরিমাণ ঢল নামে তাতে বনের ক্ষতি ছাড়া কোন উপকার হচ্ছে না। তারা আরও বলেন, বানর, হনুমানসহ সচরাচর যেসব বন্যপ্রাণী গাছে গাছে লাফালাফি করে মানুষের হইহুল্লোড় ও চেচামেচির কারণে সেগুলো দুরে সরে যায়। এভাবে প্রাণীর অবাধ চলাচলে বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে।

লাউয়াছড়া বনরেঞ্জ কর্মকর্তা মো. সহিদুল ইসলাম বলেন, ঈদুল ফিতরের তুলনায় কুরবারিন ঈদে গত তিনদিনে কিছুটা কম পর্যটকের উপস্থিতি ছিল। তবে এই পরিমাণ পর্যটকও লাউয়াছড়া বন ও বন্যপ্রাণীর জন্য ক্ষতির কারণ। তিনি বলেন, বনের মধ্যে প্রাণী নিরব, নিস্তব্ধ পরিবেশে চলাফেরা করতে ভালো পায়। অত্যধিক পর্যটকের কারণে তাদের খাবার দাবার ও চলাফেরায় বিঘ্ন দেখা দেয়।

টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণে পর্যটকদের মানতে হবে ১০ নির্দেশনা
ভিভোর ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতায় সেরা বাংলাদেশ

আপনার মতামত লিখুন