শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
দেখা থেকে লেখা

শ্যামদেশের অপূর্ব ‘চাও ফ্রায়া’ নদী

মার্জিয়া লিপি
০৫ এপ্রিল ২০২২

নির্ধারিত সময়ে থাই এয়ারলাইনসের পাখা মেলে দেয় নীল আকাশে। রোদ ঝলমলে আকাশের নীলের মাঝে সাদা রঙের পেঁজা তুলার মতো মেঘ ভেসে যায় দূর আকাশে। অনলাইনে দেখছিলাম ভ্রমণ শুরুর বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই কল্পনায় রং মিশিয়ে ব্যাংককের দর্শনীয় নানা ছায়াচিত্র।

অনেক আকর্ষণের ভিড়ে চাও ফ্রায়া নদীপারের এলাকাটি পৃথিবীজোড়া পর্যটকদের প্রিয় একটি গন্তব্য। চাওফ্রায়া জড়িয়ে থাকা শহরটিতে আছে অনেক মন্দির ও আশ্চর্য সব স্থাপত্য, আয়ুত্থায়া শহর, ব্যাং পা ইন সামার প্যালেস ও ওয়াট চাই ওয়াট্টানরমসহ এ রকম নানা কিছুর ঠিকানা।

চাও ফ্রায়া নদী ব্যাংককের বাণিজ্যপথ। নদীতে নৌকা বিহারেই শহরটিকে সবচেয়ে ভালোভাবে দেখা যায়। বিকেল থেকেই সেখানে জমতে শুরু করে দশনার্থীদের ভিড়। হই-হুল্লোড় লাইভ মিউজিক, ক্লাবিং, নাইট শপিং চলে গভীর রাত অবধি।

ব্যাংকক থেকে চাও ফ্রায়া নদীর ধারে গড়ে উঠেছে পর্যটন এলাকা এশিয়াটিক দ্য রিভারফ্রন্ট। পূর্বে ইস্ট এশিয়াটিক কোম্পানির ডক হিসেবে ব্যবহৃত হত এ ঘাট। ২০১১ সালে রিয়েল এস্টেট কোম্পানি টিসিসি ল্যান্ড এ স্থানটিকে বিনোদন ও পর্যটনের জায়গা হিসেবে গড়ে তোলার দ্বায়িত্ব নেয়। নতুন করে সংস্কার করে এই এলাকা পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।

১৯ শতকের গোড়ার দিকে সডেনমার্কের ইস্ট এশিয়াটিক কোম্পানি থাইল্যান্ডের প্রদেশ সিয়ামের সঙ্গে বাণিজ্য স্থাপনের জন্য এ ডক তৈরি করে। চাও ফ্রাও নদীকে কেন্দ্র করে এ কোম্পানি বাণিজ্য ঘাঁটি গড়ে তোলে। নদীর দুই কিনারে গড়ে ওঠে নয়ানাভিরাম বিভিন্ন স্থাপত্য। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্ব পর্যন্ত এখানেই বাণিজ্য চলে।

এশিয়াটিক স্কাই রাউন্ডে চড়ে রাধা চক্করের মতো চাও ফ্রায়া নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। এখনো নদীর ঘাটে ডেনিশ স্থাপনার মতোই বিভিন্ন ডেক আছে। নদীর পাড়ে কাঠের ডেকে হেঁটে বেরিয়ে নদীর দু’পাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর আলোকসজ্জায় চাও ফ্রায়ায় স্নিগ্ধ সন্ধ্যার রূপ যেন আলো ঝলমলে।

নৌকা বিহারেই রয়েছে ক্যালিপসো শো। এ শোতে থাইল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী নাচগুলো প্রদর্শন করা হয়। সব বয়সীদের জন্য রয়েছে নানা ধরনের রাইড। ইচ্ছে করলে সারাদিন কাটিয়ে দেওয়া যায় প্যালেস চত্বরে। চায়না টাউন পেরিয়ে চাও ফ্রায়া রিভার সাইডে।

নদীর মতো চাও ফ্রায়ার সমস্ত নগরের ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে রাজধানী ব্যাংককের ইতিহাসের সঙ্গে। চাও ফ্রায়া নদীর পূর্ব পাশ দিয়ে খাল খনন করে একটি কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করা হয়। ব্যাংকককে অভিহিত করা হয় ‘প্রাচ্যের ভেনিস’ নামে। পাশ্চাত্যের খ্যাতনামা অনেক লেখক চাও-ফ্রায়াকে দূর প্রাচ্যের অন্যতম প্রিয় জায়গা বলে অভিহিত করেন।

ব্যাংককের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে চাও ফ্রায়া নদী। নদীর একপাড়ে ওয়াট ফো আর অন্য তীরে ওয়াট অরুণ। অসম্ভব শৈল্পিক কারুকাজ জড়িয়ে রয়েছে মন্দিরের গায়ে গায়ে। সংস্কার কাজের জন্য বড় চূড়াটি ঢেকে রাখা হয়। বনসাই দিয়ে বিভিন্ন নকশা করে রাখা মন্দিরের বাইরের চত্বরটি।

সন্ধ্যায় বিভিন্ন সময় ধরে রিভারক্রুজ চলে দুই তলা একটা জাহাজের মতো। নির্ধারিত সিটে বসার পর যাত্রা শুরু করে ঘড়ির কাটা মেনে। কি নেই সেখানে- ক্যাফে, আলো ঝলমলে মার্কেট, লাইভ মিউজিক আর সঙ্গে বুফে খাবার। দু’পাশে রাতের ব্যাংকক দেখতে দেখতে জাহাজ এগিয়ে যায় রাজহংসীর মতো ডানা মেলে।

পুরো জল বিহারই যেনো রং-বেরঙের আলোর বুক চিড়ে এগিয়ে যায়। দু’পাশের স্থাপনার ঝলমলে আলোর প্রতিফলনে চারপাশকে মনে হয় স্বপ্নপুরী। চাওফ্রায়া নদীর বুকে আলো প্রায় দেড় ঘণ্টা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে আবার তীরে ভিড়ে। সেখান থেকে ব্যাংককের জ্যাম ঠেলে হোটেল পৌঁছাতে শরীরে টের পাই ক্লান্তির অবসাদ ।

এর মধ্যেই সুকুম্ভিতে একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে ‘রিভার ক্রুজের’ প্যাকেজ ট্যুরের ব্যবস্থা করা হয়। পাশের রেস্তোরাঁয় গিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম মাইক্রোবাসের জন্য। সন্ধ্যার আগেই মাইক্রোবাস আসলো। আমাদের সঙ্গে বেশ কয়েকজন ছিলেন। রাতের ঝলমলে শহর দেখতে দেখতে ড্রাইভার বিশাল ১৬ তলা বিশিষ্ট ‘কার পার্কিং’ এর ১৬ তলায় মাইক্রোবাসটি রাখলেন। সেখান থেকে একটি শপিংমলে তিনি আমাদের নিয়ে গেলেন।

তখন বিকেল ৫টা। ড্রাইভার আমাদের চারটি টিকেট দিয়ে বললেন ৭টার দিকে শপিংমলের পাশে অবস্থিত রিভার পোর্টে পৌঁছে যেতে। বেশ কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করলাম চারপাশ দেখতে দেখতে। ৭টার সময় পোর্টে চলে গেলাম। এরপর দেখলাম বিশাল আকারের একটি জাহাজ দাঁড়িয়ে আছে যার নাম ‘সিলভার মুন রিভারক্রুজ’।

রাতের আঁধারে নদীর উপরে সাদা আর নীল রঙের মিশেলে জাহাজটি ছিল অপূর্ব সুন্দর। সঙ্গে ছিল পুরো জাহাজ জুড়ে সাদাটে-নীলচে রঙের মরিচবাতি, যা সত্যিই মন ছুঁয়ে যায়। যেনো স্বপ্নের আলোর পথে আমি উঠছি। জাহাজটি তিনতলা বিশিষ্ট। তিনতলায় উঠে বসলাম। ওঠার সময় জাহাজের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কেবিন ক্রুরা আমাদের অভ্যর্থনা জানায়।

একদম কিনারের দিকে একটি টেবিল আমি আর সহকর্মী বেছে নিই। কিছুক্ষণের মধ্যেই জাহাজের ইঞ্জিনের শব্দে চারপাশের নিরবতা বিদীর্ণ হয়। কি যে ভালো লাগছিলো রাতের শহরটিকে জাহাজে করে দেখতে! এর আগে আমার কখনো শহরের মাঝখান দিয়ে এরকম পরিবেশে ‘রিভার ক্রুজ’ ভ্রমণের কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না।

নদীর দু’ধারেই আকাশচুম্বী অট্টালিকা আর আলো, মাঝখানে নদী।

বাইরের অট্টালিকাগুলোর আলো, জাহাজের সাদা-নীল আলো আর আকাশের চাঁদের আলো সব মিলিয়ে এ ছিল এক অন্যরকম ভালোলাগার অনুভূতি। জাহাজের ভেতরে লাইভ কনসার্টের আয়োজনও ছিল। গান শুনতে শুনতে পরিবেশটা উপভোগ করছিলাম। তবে আমার ভালো লাগছিল আলো-আঁধারের প্রকৃতিতে নদীর চারপাশের নাগরিক আয়োজন।

কিছুক্ষণের মধ্যেই খাবার নিয়ে যেতে বলা হয়। বুফে সিস্টেমের আয়োজনে ঐতিহ্যবাহী থাই খাবারের সঙ্গে মহাদেশীয় অনেক খাবারের সমারোহ। বাদাম সহকারে সালাদ, জাপানিজ স্যুশিসহ বেশ কিছু থাই খাবার প্লেটে তুলে নিই ডিনারের জন্যে। যদিও থাইল্যান্ডের থাই খাবারের স্বাদ আমাদের দেশের থাই খাবার থেকে একেবারেই ভিন্ন। ডিনারের সঙ্গে উপভোগ করছিলাম কনসার্টের সুর।

পাশ দিয়ে আরও অনেক জাহাজ আসা যাওয়া করছিল। ব্যাংককের অনেক বিখ্যাত জায়গাও দেখলাম। নদীর উপর দিয়ে বেশ কিছু বড় বড় রাস্তাসহ ব্রিজ ছিল। যখনই আমাদের জাহাজটির ব্রিজ অতিক্রম করার সময় হচ্ছিলো তখনই মাইক্রোফোনে সতর্ক করা হচ্ছিলো কেউ যাতে না দাঁড়ায়, সবাই যেনো বসে থাকে।

পুরো ব্যাংকক শহরে ঘুরিয়ে দু'ঘণ্টা পর জাহাজটি আমাদের আবার সেই শপিংমলের পাশে অবস্থিত পোর্টে নামিয়ে দেয়। স্কাই ট্রেনে ফিরে এলাম হোটেল সিয়াম আনান্তারায়। অসম্ভব সুন্দর একটি সন্ধ্যা কাটিয়ে ছিলাম আমরা।

এসব বৈচিত্রময় আয়োজনের জন্যে ভ্রমণ পিপাসুদের পছন্দের তালিকায় অন্যতম থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক। রোমাঞ্চকর ভ্রমণের জন্য থাইল্যান্ডের খ্যাতি বিশ্বজুড়ে। অনেক বড় বড় প্রসাদ-অট্টালিকার ভিড়, শপিং মল, আকাশ ছোঁয়া স্কাইট্রেনে চোখের পলকে শহরের একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটে চলা এসবই সেখানকার বৈশিষ্ট্য। শপিং করার জন্য সস্তা কিছু রাতের মার্কেটও রয়েছে ব্যাংককে।

কি নেই এই দেশে! আধুনিক শহরের আলোর ঝলকানি থেকে শুরু করে পাহাড়ের ভাজে ছোট্ট গ্রাম আর বিশাল সমুদ্রের ঢেউ এর গর্জন, বেলাভূমি, কোরাল দ্বীপ, ওয়াকিং স্ট্রিটে লাইফ ড্যান্স শো, মিউজিক শো, বার, স্ট্রিট ফুড আর ম্যাজিক শোসহ হরেক আয়োজন আছে এ রাজধানীর পথে প্রান্তরে।

নির্জন প্রকৃতি ভ্রমণ আর শহুরে হইহুল্লোর সব কিছুর সমাহারে ব্যাংকক সমৃদ্ধ। আর রয়েছে ট্রাফিক জ্যাম। এই একটি বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে ঢাকা শহরের মিল রয়েছে। পর্যটকদের আকর্ষণ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এ শহরের নানা প্রান্তের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে-

গ্র্যান্ড প্যালেস, সাফারি ওয়ার্ল্ড, ছাওফ্রায়ায় রিভার ক্রুজ, ওয়াট অরুন, ওয়াট ফ্রা কাইয়াগ, লুম্ফিনি পার্ক, বেঞ্চিকিতি পার্ক, চায়না টাউন, মাদাম তুসো মিউজিয়াম, শাখা নদীতে নৌকায় ভাসমান ফুল ও সবজির বাজার, আয়ুতাহায়া হিসট্রিক্যাল পার্ক ইত্যাদি ভ্রমণপিয়াসীদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে।

২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক রিজিওনাল কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয় থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি এ কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেন। ইউএসএইড বাংলাদেশ থেকে প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত প্রকল্প থেকে মোট ৮ জন প্রতিনিধি আমরা কনফারেন্সে প্রতিনিধিত্ব করি। সে উপলক্ষ্যেই প্রথমবারের মতো আমার ব্যাংককে যাওয়া।

দিনটা ছিল ২৭ অক্টোবর, সময়মত বিমানবন্দরে হাজির হই। থাই এয়ারলাইন্সের এ্যারোপ্ল্যান ছাড়ার সময় ছিল বাংলাদেশ সময়ে ১টা ৩০ মিনিট। থাই এয়ারলাইন্সে এয়ার হোস্টেসের হট ক্লিয়ার থাই স্যুপ আর গ্রেপস জুসের উষ্ণ আতিথেয়তা শেষ হতে না হতেই ব্যাংকক সুবর্ণভুমি এয়ারপোর্টে পৌঁছালাম। তখন সময় ছিল বিকাল ৫টা। বাংলাদেশ সময় তখন বিকাল ৪টা। আকাশে ভাসতে ভাসতে কখন যেন এক ঘণ্টার সময় গরমিল হয়ে যায়।

সূবর্ণভূমি বেশ বড় এয়ারপোর্ট। সুসজ্জিত সুবর্ণভূমির ঝলমলে আলোতে করিডোর পেরিয়ে পৌঁছে গেছি এক মাথা থেকে আরেক মাথায়। সুন্দর সাজানো, আধুনিক সব ব্যবস্থা। এয়ারপোর্টে ডলার বিনিময় মূল্য কিছুটা কম, থাই মুদ্রা ১ বাথের বিনিময় মূল্য ২.৮ বাংলাদেশি টাকা।

মোবাইল ফোনের সিম কিনতে গিয়ে কিছুটা সময় কেটে যায়। ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা সেরে কনফারেন্সে অংশ নিতে আসা সকলেই সাদা একটি মাইক্রো বাসে চড়ে বসলাম। গন্তব্য র্যাচাপ্রসংয়ের হোটেল আনান্তরা সিয়াম।

রাস্তায় কিছুটা যানজট রয়েছে। প্রথমবারের মতো আসা একসময়ের শ্যামদেশ আর বর্তমানে থাইদেশের রাজধানী শহর ব্যাংককে। চারপাশের সবকিছুকেই দেখছি অতি আগ্রহী বিমুগ্ধ দৃষ্টিতে। বিস্তৃর্ণ খোলা জায়গা রাস্তার দু’ধারে। পথে পথে অনেক বড় বড় শপিংমল। বহুতল প্রাসাদ আর বাণিজ্যিক ভবন সাজানো রয়েছে রাস্তার দুই পাশে।

ড্রাইভার চ্যাং শেন থাইল্যান্ডের স্থানীয় অধিবাসী। ইংরেজি ভাষায় তেমন সাচ্ছন্দ্য নয়; তবে আমাদের সঙ্গে কোনো রকমে ভাব বিনিময়ে হোটেল পৌঁছে দেয়। তখন প্রায় ঘড়ির কাটায় সময় রাত ৮টা। এয়ারপোর্ট সুবর্ণভূমি থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে পাতমে অবস্থিত কনফারেন্সের জন্য নির্ধারিত হোটেলটি।

আমাদের থাকার ব্যবস্থা পাঁচ তারকা খচিত হোটেল আনান্তারা সিয়ামে। আনান্তারার প্রবেশের পথেই রাখা ভেলভেটের মতো উজ্জ্বল জারুল রঙের অর্কিড। রংবেরঙের অর্কিডের দেশ থাইল্যান্ড। শহরটি শিল্প, সংস্কৃতি, ইতিহাস ও দৈব প্রকৃতির মিলিত রূপ। লবির বেগুনি রঙের অর্কিডের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে থাই পোশাকের ২জন গোলাপি চিবুকের মেয়ে অভ্যর্থনা জানায় আমাদের।

মোট চার দিনের বুকিং দেওয়া আছে হোটেল সিয়ামে। যদিও কনফারেন্স শেষের তিন দিন থেকেছিলাম সুকুম্বির হোটেল রিজেন্সিতে। থাইল্যান্ডে ঘুরতে এলে সাধারণত বাংলাদেশীরা সুকুম্বিতে অবস্থান করে। ৫০০/৬০০ বাথে হোটেল পাওয়া যায় এ এলাকায়। সহকর্মী রাজু আমাদের জন্য অনলাইনে হোটেল বুকিং করে রেখেছিল ১২০০ বাথে।

পাঁচ তারকায় থাকার পর পরবর্তী দিনগুলোতে সুকুম্বির হোটেলটিতে স্বাচ্ছন্দ্য ছিল অনেকটায় কম। খুব স্বাভাবিকভাবেই টাকার মানের সঙ্গে বৈভব আর স্বাচ্ছন্দ্য সম্পর্কিত। ব্যাংককের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ও মার্কেটে শপিং করতেই সময় চলে যায়। রাতটুকুই শুধু আমাদের হোটেলে থাকা।

ব্যাংককের প্রথম রাতে আমাদের তেমন কিছুই দেখার সুযোগ হয়নি। হোটেলে চেক ইন করে ডিনার শেষে শুধুমাত্র সিয়াম আনান্তারার থেকে বের হলাম পায়ে হেঁটে একনজরে শহরের রাতের সৌন্দর্য দেখার উদ্দেশ্যে। হোটেলের লবি থেকে সামনের দিকে তাকালেই স্কাই ট্রেনের স্টেশন র্যাচাপ্রসং।

সিয়ামের প্রবেশ পথের এপ্রোচ রোডে মাথার ওপরেই র্যাচাপ্রসং স্কাইওয়াক দেখে মনে হলো যাক যেখানেই যাই না কেন অনন্ত স্কাই ট্রেনে ফিরে আসতে পারবো হোটেলে। নিকটস্থ সিয়াম সেন্টার ও সিয়াম প্যারাগন মলগুলো রাত ১০টায় বন্ধ হয়ে যায়।

তবে রাতচাপ্রসং মোড়ে ইরাওয়ান মাজার কমপ্লেক্সে টুরিস্টদের ভীড় লেগেই থাকে। সপ্তাহ খানেক সময়ে দেখা ব্যাংকককে মনে হয়েছে যেন পর্যটকদের মনের মতো হওয়ার জন্যে চারপাশে পশরা মেলে নিজেকে সাজিয়ে রেখেছে।

লেখক: লেখক, গবেষক ও পরিবেশবিদ

এবার দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে নামলো ওয়ালটন
পর্যটনের উন্নয়নে শ্রীলঙ্কার অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর আহ্বান

আপনার মতামত লিখুন