বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ইভেন্ট

পর্যটক হারাতে বসেছে বাঁশখালী ইকোপার্ক

শিব্বির আহমদ রানা, বাঁশখালী
২০ জানুয়ারি ২০২২

দক্ষিণ চট্টগ্রামের নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপর্ব সমন্বয় বাঁশখালী ইকো-পার্কের স্বচ্ছ লেকের সৌন্দর্য ঢাকা পড়েছে টোপাপানায়।

ইকোপার্কের বামের ছড়া ও ডানের ছড়ার স্বচ্ছ লেকটি টোপাপানায় ছেয়ে যাওয়ায় চিরচেনা সৌন্দর্য হারিয়েছে। ফলে এখানকার মাছ ও অন্যান্য জীব-বৈচিত্র্য হুমকির মুখে। পার্কের ঝুলন্ত সেতুটিও জরাজীর্ণ। সেতুর একপাশ দেবে গেছে। যে কোনো সময় ভেঙে গিয়ে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। ইতোমধ্যে বেশকিছু পাটাতন ভেঙে গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঝুলন্ত সেতুটি এখন মরণফাঁদ। সু-উচ্চ পাহাড়, মনজুড়ানো সবুজের ছায়াঘেরা গাছগাছালি, সন্ধ্যায় বন্যপ্রাণীর হাকডাক, বামের ও ডানের ছড়া লেকের স্বচ্ছ জলরাশি, সু-উচ্চ পর্যবেক্ষণ টাওয়ারসহ সব মিলিয়ে অপর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নয়নাভিরাম অভয়ারণ্য বাঁশখালী ইকো-পার্ক।

এখানে পর্যটকদের আকর্ষণ করার মতো রয়েছে অজস্র প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সংমিশ্রণ। বিকালের গোধূলিতে লেকের সৌন্দর্যে মন ভরে যায়। সে লেকে এখন টোপাপানার রাজত্ব।

সরকারি দীর্ঘ ছুটির দিনে, সপ্তাহের শুক্রবারে দেশর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ভ্রমণ করতে আসে ভ্রমণবিলাসই লোকজন। এমনিতেই নিত্যদিন দর্শকের আনাগোনায় মুখরিত থাকে পার্কটি। কোটি টাকা ব্যয়ে পার্কে বাঁধ নির্মাণ করা হলেও পার্কের সৌন্দর্য বর্ধনের মতো কোনো কাজ দৃশ্যমান হয়নি। সেই অবধি পর্যটক শূন্য হয়ে পড়ে বাঁশখালী ইকোপার্ক।

দর্শকের আনাগোনা আগের চেয়ে কম হলেও বার্ধক্যজনিত ঝুলন্ত সেতুটির প্রধান ফটকে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে লেখা আছে ১০ জনের অধিক যাত্রী উঠা নিষেধ। সরেজমিনে গিয়ে সেতুর বেহাল দশাটি চোখে পড়ে। কয়েকটি গাছের পাটাতন ভেঙ্গে গিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়েছে লোহার অ্যাংল। পাটাতন সংযুক্ত অ্যাঙ্গেল ধরেছে মরিচা। পর্যটকের জীবন ঝুঁকির ও মরণ ফাঁদের আরেক নাম যেন বাঁশখালী ইকোপার্কের ঝুলন্ত সেতুটি।

ইকোপার্কের সর্ব্বোচ্চ পর্যবেক্ষণ টাওয়ারের গোড়া থেকে মাটি সরে গেছে। অল্পসংখ্যক দর্শনার্থী টাওয়ারে উঠলে টাওয়ারটি নড়াচড়া করে। ঝুঁকির কবলে এ টাওয়ার যে কোন সময় দুর্ঘটনায় কারণ হতে পারে।

রাজশাহী থেকে আসা এক পর্যটক রবিউল আলম বলেন, আমি বাঁশখালীতে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করি। বিনোদনের জন্য বিকালে বাঁশখালী ইকোপার্কে এসেছি। ইকোপার্কেও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কথা জেনেছি নানা প্রমাণ্য চিত্র ও খবরের কাগজে। কিন্তু এসে দেখি বর্ণিত সে সৌন্দর্য এখন আর নেই। স্বচ্ছ লেকের জল টোপাপানায় ছেঁয়ে গেছে। দেখেই মনে হলো যেন একটি বর্জ্যওে স্তুপ।

তিনি বলেন, এখানে বন্যপ্রাণীর খাঁচা থাকলে আরও ভালো দেখাতো। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি কৃত্রিম সৌন্দর্যের সমন্বয় থাকলে পার্কটি আরও নান্দনিক হয়ে উঠতো। ঝুঁকিপূর্ণ ঝুলন্ত সেতুটি সংস্কার করা না হলে যে কোনো সময় মারাত্মক দুর্ঘটনার মতো ঘটনা ঘটে যেতে পারে বলে জানান ওই দর্শনার্থী।

জলদী অভয়ারণ্য রেঞ্জের কর্মকর্তা ও বাঁশখালী ইকোপার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিছুজ্জমান শেখ জানান, ইকোপার্কের সংস্কারের জন্য আমরা চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পার্কেও সংস্কারের জন্য বিভিন্ন সময় অবগত করেছি। সম্পতি পার্কের বামের ও ডানের ছড়া লেক টোপাপানায় ছেঁয়ে যাওয়ার দৃশ্যটি নজরে এসেছে। ইসগেট চালু করলে টোপাপানা চলে যাবে। তবে শীঘ্রই এ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া পার্কের সামগ্রিক অবকাঠামোগত সংস্কারের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের হাতছানি মেদাকচ্ছপিয়া উদ্যানে
ঘরে আসুন কান্তজিউ মন্দির থেকে

আপনার মতামত লিখুন