শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সীমানার ওপারে

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পর্যটনের ধরন বদলে যাচ্ছে

ডেস্ক রিপোর্ট
০৫ জানুয়ারি ২০২২

ভ্রমণ সব সময়ই আনন্দের। বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ ও পরিদর্শনের ওপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে পর্যটনশিল্প। লোনলি প্ল্যানেট নামে একটি ভ্রমণ গাইড ভ্রমণকারীদের জন্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে সুন্দর ও আকর্ষণীয় স্থানগুলোকে তুলে ধরেছে।

তবে ২০২২ সালের সংস্করণটি কম ঝুঁকিপূর্ণ দেশের মানুষদের জন্য খুব একটা সুখবর নয়। আগে এই গাইডে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে সুন্দর স্থান ও বড় বড় শহর আট সপ্তাহের মধ্যেই ঘুরে দেখার বিষয়টি উল্লেখ ছিল। বিশেষ করে মন্দিরের শহর, গভীর জঙ্গল এবং বিভিন্ন দ্বীপ। করোনার থাবা ভ্রমণ তথা পর্যটনশিল্পকে ব্যাপকভাবে গ্রাস করেছে। এতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পর্যটননির্ভর অনেক দেশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

২০১৯ সাল ভ্রমণের জন্য স্বাভাবিক বছর ছিল। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পর্যটনশিল্প ৪ কোটি ২০ লাখের বেশি মানুষকে কর্মক্ষম করে তুলেছে। যা পুরো কর্মসংস্থানের শতকরা ১৩ ভাগ এবং জিডিপিতে শতকরা ১২ ভাগ অবদান রেখেছে।

এক্ষেত্রে ২০২০ সালে এসব অঞ্চলে পর্যটন কমে যাওয়ায় শতকরা ৮.৪ ভাগ জিডিপি কমে গেছে বলে জাতিসংঘের এক পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে। কিছু দেশ অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। থাইল্যান্ডের জিডিপি শতকরা ২০ ভাগ আসে পর্যটনশিল্প থেকে। দেখা গেছে, ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে শতকরা ৮৩ ভাগ কম ভ্রমণকারী থাইল্যান্ডে ভ্রমণ করেছে।

২০২১ সালে মহামারির কারণে অনেক ব্যবসায়ে দ্বিতীয় বছরে ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দেয়। এক্ষেত্রে থাইল্যান্ড পরীক্ষামূলকভাবে স্যান্ডবক্স নামে একটি ধারণার প্রবর্তন করে। ব্যাপারটি অত্যন্ত সাধারণ। করোনার টিকা নেওয়া সকল পর্যটককে একটি দ্বীপে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। ওই দ্বীপের অধিবাসীরা আগে থেকেই দুই ডোজ করে টিকা নিয়েছেন। কোয়ারেন্টাইন শেষ হওয়ার ১৪ দিন পর ভ্রমণপিপাসুরা দেশের যে কোনো স্থানে ভ্রমণে যেতে পারেন।

থাইল্যান্ডের একটি দ্বীপ ফুকেট। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের আওতায় প্রথমবারের মতো জুলাই মাসের ১ তারিখে দেশের বাইরে থেকে আগত পর্যটকদের ফুকেটে স্বাগত জানানো হয়। এর ঠিক এক সপ্তাহ পরই এক পর্যটকের করোনা শনাক্ত হয়।

পুরো দেশে করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ঢেউ বেশ ধৈর্যের সঙ্গেই মোকাবিলা করেছে থাই সরকার। ২০২১ সালের শেষের দিকে থাইল্যান্ড বেশ কিছু স্থান পর্যটকদের দেখার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়। ব্যাংককসহ অনেক জায়গায় পর্যটকরা কোয়ারেন্টাইনে না থেকেও ভ্রমণ করতে পারবেন।

অন্যান্য দেশগুলোও থাইল্যান্ডের স্যান্ডবক্স ধারণা বাস্তবায়ন করতে পারে। ২০২২ সালে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলো তাদের নিজেদের মতো করে থাইল্যান্ডকে অনুসরণ করবে। তারা তাদের দেশের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও জনপ্রিয় স্থানগুলো কিছু দেশের পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করবে।

ইন্দোনেশিয়া এই কাজটা অনেক সহজেই করবে। ইন্দোনেশিয়া আন্তর্জাতিকভাবে পর্যটকদের বিভিন্ন দ্বীপ ঘুরে দেখার জন্য উন্মুক্ত করে দেবে। এগুলোর মধ্যে ‘বালি’ দ্বীপ অন্যতম। যদিও এখানে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। অপরদিকে পর্যটকদের ফু কোয়ক দ্বীপে স্বাগত জানাবে ভিয়েতনাম। পর্বত ও জঙ্গলে ঘেরা বালুময় ফু কোয়ক দ্বীপটি অনেক আগে থেকেই পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়।

এদিকে নিজেদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দেশের ভেতরের ভ্রমণপিপাসুদের জন্য ল্যাংকাউয়িতে পরীক্ষামূলকভাবে এমন পদক্ষেপ নেবে মালয়েশিয়া। অন্য একটি দ্বীপে আন্তর্জাতিকভাবে আসা ভ্রমণপিপাসুদের জন্য ব্যবস্থা রাখা হবে। কম্বোডিয়ার সিয়েম রিএপের জন্যে স্যান্ডবক্স ধারণা বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে। সিয়েম রিএপ স্থলবেষ্টিত একটি অঞ্চল। এখানকার অ্যাংকর ওয়াটের মন্দিরগুলো পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় স্থান।

২০২২ সালে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টকে প্রতিরোধ করে এই অঞ্চলের যে কোনো স্থানে ভ্রমণপিপাসুদের স্বাগত জানানো হবে। এটা সবচেয়ে ভালো উদ্যোগ এমন নয়। তবে করোনা মহামারির দুই বছর পর এমন একটি উদ্যোগ ছিল নিঃসন্দেহে ভালো একটি সূচনা।

সূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট

নানিয়ারচরে একদিন
ওয়ালকার্টে ওয়ালটন পণ্যে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যছাড়, ফ্রি ডেলিভারি

আপনার মতামত লিখুন