শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
গাঁও গেরাম

পল্লী গ্রামে আলোর পথ দেখাচ্ছে হাবিবিয়া কুরআন শিক্ষা কেন্দ্র

আরিফুর রহমান, সুবর্ণচর(নোয়াখালী) প্রতিনিধি:
০৭ নভেম্বর ২০২২

গ্রাম বাংলায় প্রতিদিন সকালে মুসলিম শিশুদের কুরআন শিক্ষা দেওয়া হতো। ঘুম থেকে উঠেই ছোট ছোট শিশুরা কুরআন বুকে জড়িয়ে দল বেঁধে মক্তবে যেত। আগের মত এখন আর কঁচিকাঁচা শিশুদের কুরআন শিক্ষার জন্য মক্তবে যেতে খুব একটা দেখা যায় না। কালিমা আর আলিফ, বা, তা এর শব্দে মুখরিত হয়ে উঠে না জনপদ।  কোথাও কোথাও মক্তবগুলো রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এমনিতেই বন্ধ হয়ে গেছে। আবার কোথাও কোথাও যাও চালু আছে, সেগুলোতেও আগের মতো জৌলুস নেই। শিশুদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। নামে মাত্র চলে এসব কুরআন শিক্ষার পাঠশালা। তবে ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নোয়াখালীর সুবর্ণচরের পূর্ব চরবাটা গ্রাম। প্রত্যন্ত এই গ্রামের হাবিবিয়া এলাকায় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছেহাবিবিয়া কুরআন শিক্ষা কেন্দ্র

শুধু শিশু নয় গ্রামের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে কুরআন-সুন্নাহর শিক্ষা বিস্তারে ব্যাপক মিকা রাখছে এটি। শুদ্ধভাবে অর্থসহ পবিত্র কুরআন শিক্ষা দিয়ে আলোর পথ দেখাচ্ছে হাবিবিয়া কুরআন শিক্ষা কেন্দ্র। ০৭ই জুন ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত কুরআন শিক্ষা কেন্দ্র হাবিবিয়া কমপ্লেক্সে অবস্থিত। কুরআন সুন্নাহর অমীয় বানীর নির্ভুল জ্ঞান সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া এবং সে অনুযায়ী ব্যক্তি, পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আলোকিত জীবন গঠনের লক্ষ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব এটিএম আতাউর রহমান এটি প্রতিষ্ঠাতা করেন কুরআন শিক্ষা কেন্দ্র।


এর আগে পূর্ব চরবাটা গ্রামে গড়ে তোলা হয় অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান। একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে যাত্রা শুরু হয়ে এখন গ্রামে ভোকেশনাল কোর্স সহ হাইস্কুল বিএম সহ কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ছাড়া গ্রামে রয়েছে একটি মডেল মসজিদ পাঠাগার, একটি সমাজকল্যাণ পাঠাগার, মহিলা মসজিদ সহ সুদৃশ্য বিশাল জামে মসজিদ। বর্তমানে এসব প্রতিষ্ঠানের কারণে পুরো এলাকা আলোকিত। বর্তমানে গ্রামের ছোট ছোট ছেলেমেয়ে সহ বয়স্কদেরকে অর্থসহ শুদ্ধভাবে কুরআন শেখার সুব্যবস্থা করা হয়। প্রকৃতপক্ষে সমাজে সঠিকভাবে কুরআন শিক্ষা দেওয়ার ফলে বহু সামাজিক ব্যাধি, অসঙ্গতি, অনাচার বৈষম্য দূরীভূত হয়ে সমাজে সাম্য, ন্যায় বিচার   শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। কুরআন শিক্ষা কেন্দ্রকে পাঁচটি শ্রেণিতে বিভক্ত করে বর্তমানে  কুরআন শিক্ষা দানে অভিজ্ঞ চারজন শিক্ষক কর্তৃক পাঠদান করা হচ্ছে। প্রথম ধাপে অক্ষরজ্ঞান সহ কুরআন পড়তে পারা, দ্বিতীয় ধাপে আমপারা, তৃতীয় ধাপে পুরো কুরআন শুদ্ধভাবে পড়ানো হয়, ৪র্থ ধাপে পুরো কুরআন অর্থ সহ বুঝানো এবং ৫ম ধাপে কুরআন সুন্নাহর মৌলিক আদেশ-নিষেধ সমূহ অধ্যয়ন (যা প্রক্রিয়াধীন) সহ আধুনিক, সহজ পদ্ধতিতে কুরআন শিক্ষা প্রদান। কুরআন শিক্ষাকেন্দ্রের জন্য তৈরি করা হয়েছে আলাদা ভবন।


কুরআন শিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষক মো. আনিছুর রহমান বলেন, হাবিবিয়া কোরআন শিক্ষা কেন্দ্রে এলাকার ছেলেমেয়ে বয়স্করা বিনামূল্যে সঠিকভাবে কোরআন শিক্ষা গ্রহন করতে পারছেন। এলাকার অভিবাবকরাও এতে অনেক খুশি।


হাবিাবয়া কুরআন শিক্ষা কেন্দ্রর প্রতিষ্ঠাতা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব এটিএম আতাউর রহমান বলেন, এখানে প্রতিদিন প্রত্যুষে বয়স্ক শিশুদের জন্য কুরআন শিক্ষার ব্যবস্থা করেছি। গ্রামের মানুষ পবিত্র কুরআন শেখার মধ্য দিয়ে দিনের কাজকর্ম শুরু করেন এবং এশার পর কুরআনের ব্যাখ্যা সহ সুন্নাহ শিক্ষা দেয়া হয়। নোয়াখালীর সুবর্ণচরের প্রত্যন্ত পল্লী অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত এধরণের বহুমাত্রিক সার্বজনীন কুরআন শিক্ষা প্রদান প্রণালী সমগ্র বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে অনুকরণীয় পথিকৃৎ হিসেবে ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করি।

ডিপো ও ডিলারশিপ দিচ্ছে ভিসতা
বিক্রিতে মন্দা, বড় লোকসানে ওয়ালটন

আপনার মতামত লিখুন