বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
অর্থনীতি

কুয়াকাটার পর্যটন নিয়ে নতুন করে পরিকল্পনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৬ জুন ২০২২

কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায়। এ কারণে এই সৈকত নিয়ে পর্যটকদের আলাদা আগ্রহ আছে। কিন্তু ভালো যোগাযোগব্যবস্থা না থাকায় কম পর্যটক যান। পদ্মা সেতু চালুর পর কুয়াকাটা হতে পারে তাদের অন্যতম গন্তব্য

কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায়। এ কারণে এই সৈকত নিয়ে পর্যটকদের আলাদা আগ্রহ আছে। কিন্তু ভালো যোগাযোগব্যবস্থা না থাকায় কম পর্যটক যান। 

পদ্মা সেতু চালু হওয়াতে পুরো দক্ষিণাঞ্চলে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হয়ে যাবে। থাকবে না কোনো ফেরি। দূরত্ব ঘুচবে সময়ের। ঢাকা থেকে সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটার দূরত্ব হবে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টার। এতে শুধু কুয়াকাটা নয়, বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনকেন্দ্রিক পর্যটন নতুন রূপে জেগে উঠবে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, শুধু কুয়াকাটা, সুন্দরবন নয়, শ্বাসমূলীয় বনাঞ্চল বরগুনার তালতলী উপজেলার টেংরাগিরি, শুভসন্ধ্যা, পাথরঘাটার হরিণঘাটা বন, সমুদ্রসৈকত, বরিশালের দুর্গাসাগর দিঘি, সাতলার শাপলাবিল, ভাসমান পেয়ারা বাজার, ভোলার চর কুকরিমুকরি, মনপুরা হবে পর্যটকদের নতুন গন্তব্য।

কুয়াকাটা হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরিফ বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর কুয়াকাটা রাজধানীর কাছাকাছি চলে আসবে। বেকুটিয়া সেতু চালু হলে খুলনার পর্যটকেরা এখানে আসবেন। তখন সারা বছর কুয়াকাটায় পর্যটকদের আনাগোনা থাকবে।

পর্যটন খাতের বিনিয়োগকারীরা বলছেন, পদ্মা সেতুর দ্বার উন্মোচনের মধ্য দিয়ে দেশের পর্যটন মানচিত্র পাল্টে যাবে। সুন্দরবনের প্রবেশদ্বার হবে কুয়াকাটা। রাজধানী থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব ৩৯৪ দশমিক ৭ কিলোমিটার। আর পদ্মা সেতু হয়ে রাজধানী থেকে কুয়াকাটার দূরত্ব ২৯৩ দশমিক ৭ কিলোমিটার। বরিশাল নগর থেকে দূরত্ব ১০৮ কিলোমিটার। ফলে ছুটির দিনে অনেকে আসবেন কুয়াকাটায়।

কুয়াকাটা থেকে অল্প সময়ে সুন্দরবনের আকর্ষণীয় স্থান—কচিখালী, কটকা সৈকত, জামতলা সমুদ্রসৈকত, সুন্দরবনসংলগ্ন সাগরে জেগে ওঠা দ্বীপ পক্ষীর চর, ডিমের চরে যাওয়া সহজ হবে। কুয়াকাটা থেকে কটকায় যেতে সময় লাগে মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টা। এখান থেকে সকালে গিয়ে কয়েক ঘণ্টা হরিণের সান্নিধ্যে কাটিয়ে সন্ধ্যায় ফিরে আসা যাবে।

কুয়াকাটার পশ্চিমে পর্যটকদের জন্য আকর্ষণী সুন্দরবন যেমন রয়েছে, তেমনি পূর্ব দিকে রয়েছে ভোলার চর কুকরিমুকরি, ঢাল চর, চর নিজাম ইত্যাদি দর্শনীয় স্থান। কুয়াকাটার গা ঘেঁষে রয়েছে ফাতরার চর, লাল কাঁকড়ার চর, শুঁটকিপল্লি, লালদিয়ার চর, চর বিজয়, ফকিরহাট, সোনার চর, ক্র্যাব আইল্যান্ড। এখানে একেক জায়গার প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য ভিন্ন।

ট্যুর অপারেটর ও পর্যটনের উদ্যোক্তারা বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে কুয়াকাটায় প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক পর্যটক আসবেন। এখান থেকে সুন্দরবন খুব কাছে। আশপাশে আরও অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। কুয়াকাটার সব হোটেল-মোটেল মিলে এখন প্রায় সাত হাজার পর্যটকের আবাসনের ব্যবস্থা রয়েছে। তবে এক দিনে এই সমুদ্রসৈকতে ২০ হাজার পর্যটক থাকার রেকর্ড রয়েছে। পর্যটকদের ভিড় সামলাতে শিগগিরই আবাসনসহ অন্যান্য সুবিধা বাড়াতে হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অনেক বড় বড় কোম্পানি কুয়াকাটায় ইতিমধ্যে জমিতে বিনিয়োগ করেছে। কেউ কেউ কাজও শুরু করেছে। অল্প দিনের মধ্যে বেশ কয়েকটি পাঁচ তারকা মানের হোটেলের নির্মাণকাজ শুরু হচ্ছে।

পাগমার্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলার্সের স্বত্বাধিকারী নজরুল ইসলাম বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর বাড়তি পর্যটকদের সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করা না গেলে বিপর্যয় তৈরি হবে। এ জন্য সরকার ও বন বিভাগকে সমন্বিত ও কার্যকর কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে।

মোংলার জেআরএস ট্যুরসের স্বত্বাধিকারী মো. ইমাদুল হাওলাদার বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর ঢাকা থেকে সরাসরি মোংলায় আসতে সময় লাগবে ৪–৫ ঘণ্টা। সময় বাঁচাতে মানুষ মোংলা হয়ে সুন্দরবন ভ্রমণে আগ্রহী হবে।

ই-প্লাজায় ওয়ালটন এসি কেনায় ২০ শতাংশ ফ্ল্যাট মূল্য ̈ছাড়
পাহাড়ে বৈষম্যহীন পর্যটন ব্যবস্থা গ্রহণে এখনই সময়

আপনার মতামত লিখুন