রাতে ভুতুড়ে পরিবেশ কুয়াকাটা সৈকতে
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার সাগরকন্যাখ্যাত কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ঘড়ির কাঁটায় রাত ঠিক ১০টা বাজলেই সব আলো নিভে যায়। মুহূর্তেই ভুতুড়ে অন্ধকারে পরিণত হয় পর্যটন নগরী সাগর সৈকতের বিচ এলাকা। ট্যুরিস্ট পুলিশ মাইক নিয়ে অভিযান চালায় দোকান বন্ধের। ফলে দোকান বন্ধে ব্যস্ত হয়ে পড়ে ব্যবসায়ীরা। চাপা ক্ষোভ নিয়ে হোটেল- মোটেলে ফিরতে শুরু করে পর্যটকরা। রাতের কুয়াকাটায় এ চিত্র দেখা যায়। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করে পর্যটকসহ ফিশ ফ্রাই ও ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা।
জানা যায়, এমনিতেই সন্ধ্যার পর লোডশেডিংয়ের কারণে বিদ্যুতের ভেল্কিবাজি দেখতে হয়। তারপরও যতটুকু সময় বিদ্যুৎ থাকে সেময় দোকানপাট বন্ধ করে দেয়া হয়। কয়েক সপ্তাহ ধরে রাত ১০টা বাজলেই সৈকতের বিচ পয়েন্টের ফিস ফ্রাই এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়।
রাত ১০টা বাজতেই মাইকিং করে দোকান বন্ধ করতে বলে ট্যুরিস্ট পুলিশ। দোকান বন্ধ করতে দেরি হলে তাদের রোষানাল পড়তে হয় ওইসব ব্যবসায়ীকে। করোনাভাইরাসের কারণে ২ বছর পর্যটন এলাকার সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। এখন সেই ধকল কাটিয়ে ওঠার সময়। অথচ রাত ৯ থেকে ১০টার দিকে বিচে পর্যটকদের ভিড় বাড়তে শুরু করে। আর ঠিক সেই সময়ে সাগর পাড়ের দোকানগুলোর বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করা হয়। তাদের অভিযোগ, অনেক পর্যটকের এখানে এসে পৌঁছতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। তারা যে সময়ে বিচে আসতে শুরু করে ঠিক ওই সময় বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে তাদের লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে।
ঢাকা থেকে আগত মনি বলেন, অনেক আশা নিয়ে কুয়াকাটা এসেছিলাম। কিন্তু এখানকার অবস্থা দেখে মনটা ভেঙে গেছে। তৃপ্তি নিয়ে খাওয়াটাও শেষ করতে পারলাম না। এত কম সময়ে বিচ এলাকায় বিদ্যুৎ বন্ধ করার কোনো মানে হতে পারে না। ভোলা থেকে আগত পর্যটক মো. হাসান ও সঞ্জিব বলেন, আমরা দুই বন্ধু একদিনের জন্য কুয়াকাটা এসেছি। মাত্র এসে পৌঁছেছি। ফিস ফ্রাই খাবার ইচ্ছে ছিল কিন্তু বিদ্যুৎ বন্ধ হওয়ায় তা খেতে পারছি না। ট্যুরিস্ট পুলিশ সবাইকে বন্ধ করতে বলছে।
এ বিষয়ে কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র মো. আনোয়ার হাওলাদার বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে বিচ এরিয়ায় সারারাত দোকান খোলা রাখা উচিত। এতে পর্যটকরা স্বাচ্ছন্দ্যে আনন্দ করতে পারবে।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিচালক হাসনাইন পারভেজ বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য আমাদের জনবল কম থাকায় রাত ১০টায় সৈকতের ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়।
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, যতক্ষণ পর্যটক থাকবে ততোক্ষণ বিদ্যুৎ থাকবে। বিদ্যুৎ বন্ধ করার কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। বিষয়টি আমি দেখবো।
আপনার মতামত লিখুন