শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
জাতীয়

কুয়াকাটা সৈকতের দৈর্ঘ্য বাড়লেও কমেছে প্রস্থ

ডেস্ক রিপোর্ট
১১ এপ্রিল ২০২২

দেশের সর্বদক্ষিণে পটুয়াখালীতে রয়েছে দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা। এই সৈকতের সীমানা জানতে চাইলে যে কেউ অনায়াসেই বলবে ১৮ কিলোমিটার (১১ মাইল) দৈর্ঘ্য ও ৩ কিলোমিটার (১.১ মাইল) প্রস্থের সৈকত এটি। কারণ নব্বই দশক থেকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে এর যাত্রা শুরু। আর তখন থেকেই নির্ধারিত এই সীমানা।

সময়ের বিবর্তনে ভৌগোলিক পরিবর্তনের ফলে সেই সৈকতের দৈর্ঘ্য, প্রস্থের পরিবর্তন হয়েছে। শুধু যে ভৌগোলিক পরিবর্তন হয়েছে তেমনটা নয়; পর্যটকদের বিস্তৃত বিচরণও দৈর্ঘ্য বাড়াতে সহযোগিতা করেছে বলে অভিমত সংশ্লিষ্টদের।

১৯৯৩ সালে পর্যটন কেন্দ্র ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে সৈকতের দৈর্ঘ্য ১৮ কিলোমিটার নির্ধারণ করা হয়েছিল লেম্বুরবন থেকে গঙ্গামতির পয়েন্ট পর্যন্ত। তবে সেই সীমারেখা পার হয়ে কয়েক বছর আগেই সৈকতের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পশ্চিমে তিন নদীর মোহনা থেকে শুরু হয়ে পূর্বে রামনাবাদ মোহনা পর্যন্ত। যার আনুমানিক দৈর্ঘ্য প্রায় ২৫-৩০ কিলোমিটার।

তবে ঠিক তার উল্টোচিত্র প্রস্থের ক্ষেত্রে। কারণ প্রতি বছরের ঝড় জলোচ্ছ্বাস ও সমুদ্রের ঢেউয়ে পাড় ভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হয়েছে প্রায় ৩ কিলোমিটার প্রস্থের দুই-তৃতীয়াংশ।

সৈকতের ঝাউবন এলাকার ষাটোর্ধ্ব জেলে সিদ্দিক প্যাদা  বলেন, আমরা একসময় বাড়ি থেকে বের হয়ে তিন-চার কিলোমিটার হেঁটে সমুদ্র তীরে পৌঁছাইতাম কিন্তু এখন বাড়ির কাছে সমুদ্র। আস্তে আস্তে সৈকত ছোট হয়ে আসছে।

ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক) প্রেসিডেন্ট রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে বিচের আয়তন প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। কারণ জিরো পয়েন্ট থেকে দু’পাশে অর্থাৎ পূর্ব ও পশ্চিমের দৈর্ঘ্য ১৮ কিলোমিটার ছিলো তবে পর্যটকদের বিচরণ দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং দু’পাশে কয়েকটি ছোট ছোট খাল আগের থেকে ভরাট হয়ে সৈকতের সঙ্গে মিশে গিয়ে সৈকতের দৈর্ঘ্য বাড়িয়েছে।

কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন আনু বলেন, কুয়াকাটা সৈকতের দৈর্ঘ্য ১৮ কিলোমিটার বলা হলেও তা এখন ৩০ কিলোমিটারে গিয়ে পৌঁছেছে। কারণ এখন পশ্চিমে আন্ধারমানিক মোহনা থেকে পূর্বে রামনাবাদের মোহনা পর্যন্ত পর্যটকদের দর্শনীয় বিভিন্ন স্থান রয়েছে এবং সেসকল স্পটগুলোতে পর্যটকরা সবসময় আসে। এছাড়া পুরো জায়গাটাই এখন সৈকতের আওতাভুক্ত।

তবে প্রতি বছর সমুদ্রের ভাঙনের ফলে ছোট হয়ে গেছে প্রস্থ। প্রতিবছর সরকার সৈকত রক্ষার নামে অস্থায়ী পরিকল্পনা হাতে নিচ্ছে যাতে সৈকতের সৌন্দর্য বিলীন হচ্ছে।

কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হাওলাদার জানান, কুয়াকাটায় পর্যটকরা ঘুরতে এসে চর বিজয়, সোনার চর, ফাতরার বন, লেম্বুরবনসহ অনকগুলো স্পট ভ্রমণ করে। তবে পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ সি-বিচ। সেই সি-বিচ প্রতিনিয়ত ধ্বংস হচ্ছে।

তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন এই সৈকত একটি আন্তর্জাতিক মানের সৈকতে পরিণত করা। কিন্তু একটি টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ না করতে পারলে বা একটি পরিকল্পিত সৈকত সুরক্ষা পরিকল্পনা না করতে পারলে আন্তর্জাতিক মানের সৈকতে পরিণত করা সম্ভব না।

পর্যটককে মুগ্ধ করে ৩ গম্বুজ মসজিদ
ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি ২৩ এপ্রিল থেকে শুরু

আপনার মতামত লিখুন