শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
মতামত

পদ্মা বহুমুখী সেতু ঘিরে পর্যটন শিল্প

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া
১১ জুন ২০২২
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া

পদ্মা সেতু ঘিরে পর্যটনের বড় একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্য যে পর্যটন স্পটগুলো রয়েছে, সেগুলোর জন্যও নতুন সম্ভাবনা তৈরি হবে। কেননা, যোগাযোগের কারণে সুন্দরবন, বাগেরহাট ও কুয়াকাটায় যে হারে পর্যটকরা আগে যেত এখন পদ্মা সেতু হওয়ার ফলে আরও বেশি সহজে কম খরচে ও কম সময়ে ওই সব স্পটে পর্যটকরা যেতে পারবে। পাশাপাশি পদ্মার দুই পারেও নতুন নতুন স্পট তৈরি হবে। এখানকার মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেও পদ্মা সেতু বড় একটি ভূমিকা রাখবে।

দক্ষিণাঞ্চলে অনেক পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে, যা ভ্রমণপ্রেমীদের আকৃষ্ট করে থাকে। সুন্দরবন, কুয়াকাটা, ষাটগম্বুজ মসজিদের মতো অনেক পর্যটন কেন্দ্র ওই অঞ্চলের যাতায়াত ব্যবস্থার কিছুটা সীমাবদ্ধতার কারণে মানুষের কাছে অনাগ্রহের বিষয় ছিল। পদ্মা সেতুর মাধ্যমে এখন তা নাগালের মধ্যে চলে আসবে। এসব পর্যটন কেন্দ্রের অবকাঠামোগত উন্নয়ন সাধন করে তা থেকেও রাষ্ট্র প্রচুর অর্থ আয় করতে সমর্থ হবে। নানা দিক বিবেচনায় আমরা নিঃসঙ্কোচে বলতে পারি, স্বপ্নের পদ্মা সেতু বাংলাদেশের মানুষের অনাগত স্বপ্ন পূরণে সারথির কাজ করবে। এ দেশ নিজের অর্থায়নে এত বিশাল সেতু নির্মাণ করতে পারলে ধীরে ধীরে আরও অবকাঠামোগত উন্নয়ন নিজ অর্থেই সম্পন্ন করতে পারবে। পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন বাংলাদেশের জাতীয় মনোবল ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

পদ্মা সেতুর সুবিধা কাজে লাগিয়ে শিল্পকারখানা গড়ে উঠলে তা অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে। দেশের অর্থনীতিতে পদ্মা সেতুর ভূমিকা নিয়ে এর আগে বিশ্বব্যাংক বলেছিল, সেতুটি বাস্তবায়িত হলে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ১ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে যাবে। আর প্রতি বছর দারিদ্র্য নিরসন হবে শূন্য দশমিক ৮৪ ভাগ। এর মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার প্রায় ৬ কোটি মানুষের ভাগ্যে পরিবর্তন আনবে পদ্মা সেতু। কবি কৃষ্ণচন্দ্র ইনস্টিটিউট, খানজাহান আলী সেতু, খুলনা বিভাগীয় জাদুঘর, জাতিসংঘ পার্ক, দক্ষিণডিহি রবীন্দ্র কমপ্লেক্স, বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের মাজার, রূপসা নদী, শহীদ হাদিস পার্ক, সুন্দরবন, খানজাহান আলী কর্তৃক খননকৃত বড় দীঘি, খুলনা শিপইয়ার্ড, গল্লামারী স্মৃতিসৌধ ও বধ্যভূমি, জাহানাবাদ বনবিলাস চিড়িয়াখানা ও শিশু পার্ক, তিতুমীর, পিঠাভোগ, প্রেম কানন, বকুলতলা, মংলা পোর্ট, রাড়ুলী, রেলস্টেশনের কাছে মিস্টার চার্লির কুঠিবাড়ি, সেনহাটি, সোনাডাঙ্গা সোলার পার্ক ইত্যাদি ব্যাপক প্রসার ঘটার আশা করা হচ্ছে।

পদ্মা সেতু ঘিরে তৈরি হয়েছে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা। স্বপ্নের এই সেতু চালুর আগেই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিনই আসছে অসংখ্য মানুষ। ভ্রমণপিপাসু এসব মানুষের চাহিদা মেটাতে পদ্মার দুই পারের মানুষের যেন আন্তরিকতার কমতি নেই। আতিথেয়তার সবটুকু দরদ দিয়েই পর্যটকদের সেবা দিচ্ছেন তারা। আদি পেশা বদল করে মাওয়া-জাজিরার অনেকেই এখন পর্যটনকেন্দ্রিক নতুন ব্যবসা কিংবা অন্য পেশায় আত্মনিয়োগ করছেন। এদিকে সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ের পর্যটনের উদ্যোক্তারাও নতুন সেবা দেয়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন পদ্মা সেতু চালু হলে শুধু যোগাযোগই নয়, পর্যটনের পাশাপাশি শিল্প-বাণিজ্যেও অনেকদূর এগিয়ে যাবে এই এলাকার মানুষ। দেশী-বিদেশী পর্যটকদের অন্যতম পছন্দের স্পটে পরিণত হবে পদ্মা সেতু। পদ্মা সেতু ঘিরে দিনকে দিন বাড়ছে পর্যটনের অমিত সম্ভাবনা। বিশেষ করে গত মাসে দেশের সবচেয়ে বৃহৎ সেতুটি মাথা তুলে দাঁড়ানোর পর থেকেই প্রতিদিনই সেতুটি দেখতে ভিড় করছেন অসংখ্য মানুষ। সবার মধ্যেই একটি ইতিবাচক মনোভাবও তৈরি হয়েছে। তবে তাক লাগানো সেতুটির পর্যটন গুরুত্ব কাজে লাগাতে পরিকল্পিত উদ্যোগের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারই পরিপ্রেক্ষিতে পদ্মা সেতুকেন্দ্রিক পর্যটন শিল্প বিকাশের জন্য অনেক পরিকল্পনাও নিয়েছে সেতু বিভাগ।

পদ্মা পাড়ের অপরূপ সৌন্দর্য আকৃষ্ট করছে সব বয়সের মানুষকেই। মাওয়া-জাজিরায় সেতুর পুরো কাঠামো দাঁড়ানোর পর এসব এলাকার আকর্ষণ বেড়ে গেছে বহু গুণ। বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রতীক এই সেতু দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন পর্যটকরা। পদ্মার পাড় ও সেতুর আশপাশে নৌ-যানে চড়ে মন ভরে দেখছেন স্বপ্নের সেতু। পদ্মার পূর্ব পাড়ে মুন্সীঞ্জের লৌহজংয়ের অনেক স্থানেই গড়ে উঠেছে পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। স্থানীয় অনেক লোকজনই এখন নতুন নানা পেশার সঙ্গে জড়িত হয়েছেন। ট্রলার ভাড়া দেয়ার ব্যবসা এখানে বেশ জমজমাট। দৈনিক আয়রোজগার বেশ। আবার অনেকে গড়েছেন রেস্টুরেন্ট। বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত পর্যটকদের খাবারের জোগান দিতে অনেকে আদি পেশা ছেড়ে হোটেল ও মাছের ব্যবসা ধরেছেন। শিমুলিয়া ঘাটের গোল চত্বর ঘিরে গড়ে উঠেছে অর্ধশতাধিক খাবার হোটেল ও কার পার্কিং। পারিবারিক পুরনো ব্যবসা বাদ দিয়ে এখানে হোটেল দিয়েছেন অনেকে। পদ্মা সেতুর কাজ শুরুর কয়েক মাস পর থেকেই তার এই হোটেল ব্যবসা বেশ জমে উঠেছে। প্রতিদিন কয়েক হাজার লোক এখানে আসছে। আরও অনেকেই বাপ-দাদার পুরনো পেশা বাদ দিয়ে দর্শনার্থীদের সেবামূলক ব্যবসা গড়েছেন এখানে।

পদ্মা সেতু চালুর আগেই দুই পাড়ের সংযোগ সড়কের উভয় পাশেই শুরু হয়েছে পর্যটকদের জন্য নানা বিনোদনের আয়োজন। স্থানে স্থানে কার পার্কিং, চা-কফির দোকান, খাবার হোটেল, বিশ্রামাগার, সুদৃশ্য যাত্রী ছাউনি নির্মাণও করা হচ্ছে। ফরিদপুরের ভাঙ্গার চার রাস্তা মোড়ে গোল চত্বরে নির্মাণ করা হয়েছে দর্শনার্থীদের জন্য আকর্ষণীয় কয়েকটি স্পট। আরও রয়েছে উন্নয়নের নানা চোখ ধাঁধানো কর্মযজ্ঞ। একই সঙ্গে ঢাকা-বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের দুই পাশে এখন কেবলই দেখা যায় অবকাঠামোগত উন্নয়নকাজ। বিশেষ করে দপদপিয়া, বিমানবন্দর, গড়িয়ার পাড়, শিকারপুর এলাকায় মহাসড়কের দু’পাশে বেসরকারী খাতে অবকাঠামো উন্নয়ন চলছে একের পর এক। আর এসবই হচ্ছে পদ্মা সেতুকে টার্গেট করে।

নির্মাণাধীন পদ্মা সেতু শেষ হলে শিল্পায়নের সঙ্গে সঙ্গে দেশের পর্যটন শিল্প বিকাশেও বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সেতুর কাজ শেষ হলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বিশ্বনন্দিত গন্তব্য রয়েল বেঙ্গল টাইগার সমৃদ্ধ সুন্দরবন ও সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের অভাবনীয় সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠবে বিশাল পর্যটন শিল্প। এছাড়া পদ্মা সেতুকে ঘিরে ভবিষ্যতে পর্যটন শিল্প গড়ে তোলার কথাও ভাবছে সরকার।

পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকার পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য জাদুঘর ও প্রজাপতি পার্ক স্থাপন করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পর্যটক আকর্ষণের জন্য অত্যন্ত গোছানো ও দৃষ্টিনন্দন করে এ প্রাণী জাদুঘর ও পার্কটি গড়ে তোলা হচ্ছে। এটি পদ্মা সেতুরই একটি অংশ। পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে ছোট-বড় শিল্পকারখানা গড়ে উঠছে। পদ্মার চরাঞ্চলে অলিম্পিক ভিলেজ, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট সিটি, হাইটেক পার্ক, বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। পদ্মা সেতু সংলগ্ন জাজিরার নাওডোবা এলাকায় প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে শেখ হাসিনা তাঁতপল্লী গড়ে তোলা হচ্ছে। এখানে আবাসন, শিক্ষা-চিকিৎসাসহ আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা থাকবে। ঢাকার বাইরে পদ্মা সেতুর আশপাশের এলাকায় গার্মেন্টস ও অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রসার ঘটানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। পদ্মা সেতু সংলগ্ন মুন্সীগঞ্জের লৌহজং, মাদারীপুরের শিবচরের কাঁঠালবাড়ী, চরজানাজাত ও শরীয়তপুরের জাজিরা এলাকায় শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে মহাপরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে এসব এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে শহরায়ণ হবে এই এলাকা।

পদ্মা সেতুর কারণে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মংলা গতিশীল হবে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা স্বল্প সময়ে পণ্য পরিবহন করে মংলা বন্দরের মাধ্যমে রফতানি ও আমদানি করতে উৎসাহিত হবেন। খুলনায় দেশের অন্যতম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাত হিমায়িত মৎস্য ও পাট শিল্পের অধিকাংশ। পদ্মা সেতু চালু হলে এই খাতে রফতানি আয় আরও বাড়বে। পদ্মা দক্ষিণাঞ্চলের কুয়াকাটা ও সুন্দরবন সংলগ্ন ছোট ছোট বিভিন্ন দ্বীপে মালদ্বীপের মতো পর্যটন উপযোগী করা যাবে। কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত, সুন্দরবন ও পায়রা বন্দরকে ঘিরে দেখা দেবে পর্যটনের বিপুল সম্ভাবনা। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন চর ও দ্বীপকে কেন্দ্র করে মালদ্বীপের মতো পর্যটনের বিশাল জগৎ তৈরি করা সম্ভব। পদ্মা সেতু চালু হলে সেই সম্ভাবনা বহুগুণ বেড়ে যাবে। এখন ঢাকা থেকে কক্সবাজারের চেয়ে কম সময়ে সুন্দরবন ও কুয়াকাটায় পৌঁছানো সম্ভব হবে। কক্সবাজার যেতে যেখানে সময় লাগে ১০-১২ ঘণ্টা, সেখানে কুয়াকাটায় পৌঁছানো যাবে মাত্র ৬ ঘণ্টায়, ফলে, নিঃসন্দেহে পর্যটকের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়বে। পায়রা বন্দরের সঙ্গে বুলেট ট্রেন চালুর কথা দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনায় বলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে কুয়াকাটা ও আশপাশে অনেক দ্বীপের সঙ্গে ভাল ও উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হবে। তাহলে পর্যটকরা আকৃষ্ট হবে। এজন্য ইতোমধ্যে অনেক দেশী-বিদেশী প্রতিষ্ঠান পটুয়াখালীর পায়রা বন্দর ও এর আশপাশে বিনিয়োগ করা শুরু করেছে।

পদ্মা সেতুকে ঘিরে পদ্মার দুই পারে সিঙ্গাপুর ও চীনের সাংহাই নগরের আদলে শহর গড়ে তোলার কথাবার্তা হচ্ছে। নদীর দুই তীরে আসলেই আধুনিক নগর গড়ে তোলা সম্ভব। তবে সে জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিতে হবে। ইতোমধ্যে অনেক আবাসন প্রকল্প গড়ে উঠেছে। এই সেতু ঘিরে কী কী হতে পারে, কোথায় শিল্পকারখানা হবে, কোথায় কৃষিজমি হবে সেসব ভেবেচিন্তে করতে হবে। এই সেতুকে ঘিরে পর্যটনে যুক্ত হবে নতুন মাত্রা। অনেক আধুনিক মানের হোটেল মোটেল রিসোর্ট গড়ে উঠবে।

২০৩৫-৪০ সালে বাংলাদেশ যে উন্নত দেশ হবে, সেক্ষেত্রে পদ্মা সেতু নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। স্বপ্নের এই সেতুকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হবে ভবিষ্যতের বাংলাদেশ। এ সেতুকে ঘিরে বিশদ অঞ্চলজুড়ে গড়ে উঠবে নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্ক। ফলে, দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট হবে এবং দেশের শিল্পায়নের গতি ত্বরান্বিত হবে। সেতু ঘিরে পদ্মার দুই পারে পর্যটন শিল্পের ব্যাপক প্রসার এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা মাত্র। আমাদের সৌভাগ্য প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে স্বপ্নের বাংলাদেশ।

লেখক : ট্রেজারার, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

যশোরে দিনব্যাপী ওয়ালটনের পার্টনার্স সামিট
কক্সবাজারে হবে আন্তর্জাতিক মানের ৩ ট্যুরিজম পার্ক

আপনার মতামত লিখুন