অদম্য মেধাবী দাউদের পাশে পে ইট ফরোয়ার্ড

অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী দাউদ নবীর চিকিৎসা সহায়তায় পাশে দাঁড়িয়েছেন সমাজের বিত্তবান, চাকরিজীবী, শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ। ফেসবুক ভিত্তিক একটি সামাজিক শিক্ষাসহায়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পে ইট ফরোয়ার্ড দাউদের চিকিৎসার জন্য দুই লাখ টাকা অনুদান দিয়েছে।
সরকারী কর্মকর্তা সৈয়দ মো. আবু দাউদ (বাদল সৈয়দ) এর দিকনির্দেশনায় ইকবাল তানজির, সাইমা আকতারসহ আরো কয়েকজন কর্মনিষ্ঠ মানুষের পরিশ্রমে ফেসবুক ভিত্তিক একটি সামাজিক শিক্ষাসহায়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পে ইট ফরোয়ার্ড ছড়িয়ে পড়ে দেশের সব কয়টি জেলায় এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। এই সংগঠনের প্রধান কাজ হলো সেতু বন্ধন করে দেয়া। সমাজে টাকার অভাবে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা চালিয়ে যেতে সমাজের বিত্তবানদের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দেয়া। ফলে হাজার হাজার ঝরে পড়ার আশঙ্কায় থাকা শিক্ষার্থী হয়ে উঠছে স্কলার এবং একেকটি আলোর মশাল। এভাবে সমাজের বিত্তবানরা গরীব শিক্ষার্থীদের মাসিক এবং এককালীন আর্থিক শিক্ষা অনুদান দিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন সাফল্যের শিখরে।
এ সংগঠন শুধুমাত্র শিক্ষা অনুদান দিলেও মাঝেমাঝে এর ডোনাররা চিকিৎসা সহায়তাও করে থাকেন। এমনই একজন যাকে পে ইট ফরোয়ার্ড থেকে চিকিৎসার জন্য ২ লক্ষ টাকা দেয়া হয়। সে পে ইট ফরোয়ার্ড এরই শিক্ষার্থী মো. দাউদ নবী। ইতোমধ্যে তার মেরুদণ্ডের অপারেশনের জন্য আর্থিক সাহায্য চেয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় আবেদন করা হয়। এরই ফলশ্রুতিতে বাদল সৈয়দ এর প্রচেষ্টায় এ সংগঠনের ডোনাররা দাউদের চিকিৎসায় এগিয়ে আসেন।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালেও দাউদের চিকিৎসায় আর্থিক সহায়তা করেছিলেন এ সংগঠনের ডোনার।
এরআগে ব্যক্তিগতভাবে সর্বোচ্চ সহায়তা নিয়ে দাউদের পাশে দাঁড়িয়েছেন সুবর্ণচরের কৃতি সন্তান ইফাত ট্রেডিং লিমিটেড ও মাওলানা আব্দুর রহিম স্মৃতি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান রেজাউর রহমান। শনিবার বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলে তার কার্যালয়ে দাউদের চিকিৎসার জন্য তিনি নগদ এক লাখ টাকা তুলে দেন।
ঢাকা, চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় দাউদের জন্য অর্থ সংগ্রহের কাজ চলছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ১০ লাখ টাকা সংগ্রহ হয়েছে বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিন্যান্স বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী দাউদ গ্যাটে বাতে আক্রান্ত হন সেই সপ্তম শ্রেণিতে থাকতে। ৪ বছর বয়সে দিনমজুর বাবা চলে যান না ফেরার দেশে। পিতৃহারা দাউদ দারিদ্র আর অসুস্থতাকে জয় করে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পান। এইচএসসি পরীরক্ষার সময় তার অসুখ আরও বেড়ে যায়। শুয়ে শুয়ে পরীক্ষা দিতে হয় তাকে। অল্পের জন্য এ-প্লাস পাওয়া হয়নি। জীবন যেখানে বিপন্ন, পাশ করাটাই যেখানে বড় চ্যালেঞ্জ সেখানেও তিনি কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময় তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এক মাস চিকিৎসা নেন। অনার্স তৃতীয় বর্ষে এসে দাউদের মেরুদণ্ডের হাঁড় বাঁকা হয়ে যেতে থাকে এবং তিনি কুঁজো হয়ে যান। তখন অনেকের সহযোগিতায় চিকিৎসার জন্য তাকে নেওয়া হয় ভারতে। গত ৬ মাস আগে ভারতের চেন্নাইয়ের অ্যাপোলো হাসপাতালের চিকিৎসক বলেছেন দ্রুত সার্জারি করতে। হাসপাতালে খরচ হবে ২০ লাখ টাকা। দ্রুত চিকিৎসা না হলে দাউদের যেকোনো সময়ই তার ঘাড় থেকে মাথাটা ছিঁড়ে যেতে পারে।
ইতোমধ্যে দাউদকে বাঁচাতে এগিয়ে এসেছেন অনেকে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অর্থ তুলেছেন। কিন্তু তাকে বাঁচাতে প্রয়োজন বিশ লাখ টাকা। এ বিশাল অঙ্কের টাকার জন্য সবার সহযোগিতা চেয়েছেন দাউদ। তার আকুতি, 'দয়া করে আমাকে একটু সোজা হয়ে দাঁড়াতে সাহায্য করুন।'
সাহায্য পাঠাতে পারেন- মো. দাউদ নবী, সঞ্চয়ী হিসাব নং ১৩৩১ ৫১০০৭৯ ৪৭৫, ডিবিবিএল, মুরাদপুর শাখা চট্টগ্রাম; মো. দাউদ নবী, সঞ্চয়ী হিসাব নং ০২৬১ ২১০০১৬ ৭৮০৮, এক্সিম ব্যাংক সিডিএ এভিনিউ শাখা, চট্টগ্রাম; বিকাশ ০১৬৪০৮৩৫৮৩৬ (পারসোনাল), রকেট ০১৮৩৭৬৮৫৫৬৩।
আপনার মতামত লিখুন