শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
জাতীয়

সুবর্ণচর উপজেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান হচ্ছেন সেলিম

আরিফুর রহমান, সুবর্ণচর (নোয়াখালী) থেকে
০৮ মার্চ ২০১৯
এএইচএম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম           -ফাইল ছবি

এএইচএম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম -ফাইল ছবি

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম। বুধবার জেলা সিনিয়র নির্বাচন অফিসার ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী দিদারুল ইসলামের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। এতে খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিমের সঙ্গে আর কোনো প্রার্থী না থাকায় তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। জেলা সিনিয়র নির্বাচন অফিসার ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ রবিউল আলম ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী দিদারুল ইসলামের মনোনয়নপত্র বাতিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বর্ণাঢ্য কর্মময় রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী ও একজন সাদা মনের মানুষ অধ্যক্ষ এ.এইচ.এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম। গণমানুষের নেতা তিনি। ব্যক্তি খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম নিভৃত। তিনি পল্লী গ্রাম নোয়াখালীর সুধারাম থানার (বর্তমান সুবর্ণচর উপজেলা) চরবাটা ইউনিয়নের চরবাটা গ্রামে ১৯৪৯ সালের ১ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। পিতা অলি উল্যাহ চৌধুরী ও মাতা অহিদা খাতুনের ২ ছেলে ও ৩ কণ্যা সন্তানের মধ্যে সেলিম মেজো।

চরবাটা গ্রামের আলো-বাতাস, পানিতে বেড়ে উঠা সেলিম তার মেধা, যোগ্যতা ও সাহসিকতায় হাঁটি হাঁটি পা-পা করে আজ সূবর্ণচর তথা নোয়াখালীর জনতার নেতায় পরিণত হয়েছেন।

তিনি নোয়াখালীর গণমানুষের কথা বলেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের পথ পেরিয়ে ৬৭ বছর বয়সেও জনগণের কাতারে থেকে জনগণের জন্যই কাজ করে যাচ্ছেন সেলিম। জেলার সুবর্ণচর থেকে পরপর দুইবার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে মাটি ও মানুষের জননন্দিত নেতা হিসেবে খ্যাতি অর্জনের পাশাপাশি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে থেকে দলকে সু-সংগঠিত করতে প্রতিনিয়তই কাজ করে যাচ্ছেন।

সেলিম ছাত্র জীবন থেকেই খুব মেধাবী ও নেতৃত্ব প্রবন ছিলেন। দক্ষিণ চরবাটা প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণী পাস করার পর ১৯৫৮ সালে ভর্তি হন রাম গোবিন্দ জুনিয়র হাই স্কুলে পরবর্তীতে বামনী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৪ সালে প্রবেশিকা উর্ত্তীণ হন তিনি।
কলেজ জীবনে সেলিম চট্রগ্রাম সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং পরবর্তীতে চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যাল থেকে অর্থনীতিতে এমএ পাস করেন। চট্রগ্রাম সরকারি কলেজে অধ্যায়নকালে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়ে পরবর্তীতে চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্র সংসদের সাহিত্য সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি। সেখান থেকে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেন।

মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী ১৯৭২ সালে রাজনৈতিক মাঠে সক্রিয় অংশগ্রহনের জন্য নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য হন খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম। পরবর্তীতে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক, সহ-সভাপতি এবং ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি।

শিক্ষানুরাগী খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম ১৯৯৩ সালে সুবর্ণচরের সৈকত ডিগ্রি কলেজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ওই কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বর্তমানে সৈকত ডিগ্রি কলেজের গর্ভনিং বোর্ডের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া তিনি চরবাটা খাসেরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি, চরবাটা আর জি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি, চরবাটা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি, আনছার মিয়ারহাট দাখিল মাদ্রাসা ও আনছার মিয়ারহাট এতিম খানার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করার পর খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম স্বৈরাচারী খুনি সরকারের বিরুদ্ধে দুর্বার গণআন্দোলনে অংশ নেন। ১৯৮১ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফেরার পর তাঁর নির্দেশে স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহন করেন। ১৯৯৫ সালে আন্দোলনরত অবস্থায় তৎকালীন বিএনপি সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হন তিনি। ১৯৯৬ সালে সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী হিসাবে নোয়াখালী সদর আসন থেকে সংসদ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

এর আগে ১৯৭২ সাল থেকে র্দীঘ ৩৮ বছর চরবাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সেলিম।

রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে গিয়ে এ.এইচ.এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম সাধারণ মানুষের কাছে জনতার নেতা হিসেবে সুখ্যাতী অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। তাঁর চিন্তা-চেতনায় সব সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের আর্দশ বিরাজ করে। তাই তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কাজ করে যাচ্ছেন বলে র্দীঘ সাক্ষাৎকারের ইতি টানলেন।

পারিবারিক জীবনে সেলিম এক ছেলে সন্তান ডা. জোবায়ের আনম চৌধুরী, কণ্যা মরিয়ম ছাদিয়া ও সালমা সাদিয়ার জনক। তার স্ত্রী দিলারা সেলিম গৃহিনী। স্ত্রী, সন্তান, আত্মীয়-স্বজন ও সাধারণ মানুষের ভালবাসায় প্রবীণ রাজনৈতিক নেতা খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম এখনো জনগণের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

অদম্য মেধাবী দাউদের চিকিৎসা সহায়তায় পাশে দাঁড়ালেন ওসি নেজাম
আইসিটি মন্ত্রীকে ফোনে যা বললেন ছাত্রলীগ সেক্রেটারি

আপনার মতামত লিখুন