বুধবার, ০১ মে ২০২৪ | ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
জাতীয়

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে পিডি নিয়োগে বড় অনিয়ম

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ‘মানিকগঞ্জ, ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, মাদারীপুর ও শরীয়তপুর জেলার নদীবিধৌত চরাঞ্চলের সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটি একনেকে পাস হয়েছে গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর। ৫ বছর মেয়াদি এই প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা ২০২৭ সালের ৩০ জুনে। প্রকল্প অনুমোদনের প্রায় ছয় মাস অতিবাহিত হতে চললেও এখনো প্রকল্প পরিচালক (পিডি) নিয়ে চলছে নানা নাটকীয়তা। পিডি নিয়োগের জন্য মহাপরিচালকের দফতর থেকে তিনবার ভিন্ন রকমের সুপারিশ পাঠানো হয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে। আবার মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ কমিটির সুপারিশ তোয়াক্কা না করে একেক সময় একেক রকম সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে।

প্রকল্প পরিচালক নিয়ে এমন সিদ্ধান্তকে নজিরবিহীন অনিয়ম বলছেন প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের সংশ্লিষ্টরা। পিডি নিয়োগ না হওয়ায় প্রকল্পের কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি। ফলে প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়েও এখন শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) তৈরিসহ শুরু থেকেই ফোকাল পয়েন্ট অফিসার ছিলেন ১৯তম বিসিএস (লাইভস্টক) ক্যাডারের জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো: শামীম হোসেন। তিনি অধিদপ্তরের আইসিটি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন। গত বছরের ৭ মার্চ অধিদপ্তরের এক আদেশে এই কর্মকর্তাকে ডেজিগনেটেড প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব দেয়া হয়। পরে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের জন্য ডা: মো: শামীম হোসেন, ডা: মো: আমিনুল হক ও এ কে এম বাহারুল ইসলামের নাম প্রস্তাব করেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।

গত ৫ অক্টোবর এ প্রস্তাবের ওপর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন সচিব ড. নাহিদ রশীদের সভাপতিত্বে নিয়োগ কমিটির বৈঠক হয়। নিয়োগ পরীক্ষায় শামীম হোসেন প্রথম হন। ফলে ওই বৈঠকে তাকে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। ওই নিয়োগ কমিটির সভাপতি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব। এ ছাড়া আইএমইডি বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগের প্রতিনিধি ও প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থার প্রধান এবং সংশ্লিষ্ট অনু বিভাগ ও শাখা প্রধানরা কমিটিতে ছিলেন। ওই সুপারিশের তিন মাসের মাথায় গত জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে সুপারিশকৃত শামীম হোসেনকে নিয়োগ না দিয়ে নতুন করে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের জন্য উপকূলীয় চরাঞ্চলের সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের সাবেক প্রকল্প পরিচালক (৩৩তম বিসিএস (লাইভস্টক) কর্মকর্তা) জিয়াউল হক রাহাতসহ তিনজনের নাম মন্ত্রণালয়ে পাঠায় অধিদপ্তর। অথচ সাবেক এই প্রকল্প পরিচালকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন।

উল্লেখ্য, এর আগে যে তিনজনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল সেখানে জিয়াউল হকের নাম ছিল না। এ ছাড়া আগের তালিকার এ কে এম বাহারুল ইসলামের নামও বাদ দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে এক ধরনের অসন্তোষ তৈরি হয়।

এমন পরিস্থিতিতে দ্বিতীয়বার পাঠানো প্রস্তাব টেকেনি বেশি দিন। একই প্রকল্পের পরিচালক নিয়োগের জন্য এবার (বিসিএস ৩০তম ব্যাচ-লাইভস্টক) উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: প্রাণকৃষ্ণ হাওলাদারের নাম নতুন করে যুক্ত করে তৃতীয়বারের মতো প্রস্তাবনা পাঠিয়েছেন মহাপরিচালক। এ তালিকায় আগের দুই তালিকায় ১ নম্বরে থাকা জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা শামীম আহমেদের নাম রাখা হয়েছে ৩ নম্বরে। আর জুনিয়র কর্মকর্তা প্রাণকৃষ্ণ হাওলাদারের নাম রাখা হয়েছে ১ নম্বরে।

নতুন এ প্রস্তাবনা অনুযায়ী আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারি প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ সংক্রান্ত কমিটির সভা ডাকা হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বর্তমান সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন। নতুন নোটিশে আগের সভার কোনো কিছুই উল্লেখ করা হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, একটি প্রকল্পের পরিচালক নিয়োগের জন্য তিনবার প্রস্তাব এসেছে। আগের সচিবের সভাপতিত্বে নিয়োগ কমিটি একজনকে নিয়োগের সুপারিশ করেছিলেন। পুরনো সেই সুপারিশ বাতিল না করে নতুন করে নিয়োগ কমিটির বৈঠক বেআইনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র আরো জানায়, আগের মন্ত্রীর সময় জিয়াউল হককে নিয়োগে মরিয়া ছিলেন মন্ত্রীর দপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা। এবার নতুন করে প্রাণকৃষ্ণ হাওলাদারকে নিয়োগ দিতে প্রভাবশালী মহল দিয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ডিজিকে দিয়ে তার নাম এক নম্বরে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপিরচালক ডা: মো: এমদাদুল হক তালুকদার বলেন, যখন যা করেছি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশই করেছি। এখানে আমার ব্যক্তিগত কোনো এখতিয়ার ছিল না।

ট্রাব স্মার্ট পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড পেলো ওয়ালটন
সুবর্ণচরে ইনডোর স্টেডিয়ামের উদ্বোধন

আপনার মতামত লিখুন