শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
মতামত

বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ ও প্রণোদনা দিলে ঘুরে দাঁড়াবে পর্যটন খাত

কাজী রহিম শাহরিয়ার
১৩ জুন ২০২০

করোনা মহামারিতে দেশের পর্যটন খাত ভয়াবহ সংকটে পড়েছে। করোনার প্রভাবে এখানে পর্যটন ব্যবসায় নেমে এসেছে স্থবিরতা। পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে নেই কোনো পর্যটক। তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই বন্ধ রাখতে হচ্ছে বেশিরভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। আপাতদৃষ্টিতে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি দেখা যাচ্ছে না। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দেশের পর্যটন খাতের ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে এ খাতের সাথে সম্পৃক্তরা সহসা এ ক্ষতি ও সংকট থেকে উত্তরণের কোনো উপায় খুঁজে পাবেন বলেও মনে হয় না। এ খাতের কর্মীদের অনেকেই চাকরি হারিয়ে বেকারত্বের অভিশাপ বয়ে বেড়াচ্ছেন। অন্য দিকে আরও অনেক কর্মী ছাটাইয়ের আশঙ্কায় রয়েছেন। তাই আমরা বাংলাদেশ ট্যুরিজম এ্যাণ্ড এভিয়েশন মিডিয়া ফোরাম (বিটিএএমএফ) এবং সম্মিলিত পর্যটন জোটের পক্ষ থেকে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছিলাম। পর্যটন খাতের জন্য বিশেষ প্রণোদনা প্রদানের কথা বলেছিলাম। কিন্তু ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে তা দেওয়া হয়নি। যদিও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আশ্বাস দিয়েছেন, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া দেশের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে সরকার সক্রিয় প্রচেষ্টা গ্রহণ করবে। 

অপরদিকে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন খাতে ২০২০-২০২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ৩ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। গত অর্থবছরে এই বরাদ্দ ছিল ৩ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা। এবারের বাজেটে তা বেড়েছে মাত্র ২৬২ কোটি টাকা। যা চাহিদার তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল। 

অর্থমন্ত্রী অবশ্য বলেছেন, ‘পর্যটন শিল্পকে অর্থনৈতিক খাত হিসেবে উন্নত ও সমৃদ্ধ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার আলোকে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। যেমন, দেশের পর্যটন সম্ভাবনাময় স্থানগুলোতে কেবল বিদেশিদের জন্য স্বতন্ত্র পর্যটন এলাকা স্থাপন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অক্ষুন্ন রেখে ইকো-ট্যুরিজম পার্ক, দ্বীপভিত্তিক পর্যটন পার্ক ও হোটেল নির্মাণ এবং পর্যটকদের বিনোদনসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা সমৃদ্ধ আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।’

পাশাপাশি বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের বিদ্যমান স্থাপনাগুলোর আধুনিকায়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং নতুন নতুন স্থানে আধুনিক পর্যটন সুবিধা সম্প্রসারণের জন্য প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন। 

কিন্তু পর্যটন খাতের ব্যবসায়ীরা যদি টিকে থাকতে না পারেন, যদি লাখ লাখ কর্মী চাকরি হারান, তাহলে এ খাত ঘুরে দাঁড়াবে কি করে? কারণ, প্রাইভেট সেক্টরকে বাদ দিয়ে কোনো দেশেই উন্নয়ন সম্ভব নয়। এ বিষয়টা বিবেচনায় নিয়েই বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দেয়া হবে- এমনটাই আশা করেছিলাম আমরা। 

আমি মনে করি, প্রস্তাবিত বাজেটে সংশোধনী এনে পর্যটন খাতের জন্য বিশেষ বরাদ্দ ও প্রণোদনা ঘোষণা করা উচিৎ। তাহলেই এই সেক্টর ঘুরে দাঁড়াতে পারবে এবং জিডিপিতে প্রত্যাশিত অবদান রাখতে সক্ষম হবে। এ বিষয়ে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

লেখক : প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ ট্যুরিজম এ্যান্ড এভিয়েশন মিডিয়া ফোরাম (বিটিএএমএফ) 

অসুস্থ সাংবাদিক শাহাদাৎ হোসেন নিজাম দোয়া চেয়েছেন
জীবন জীবিকার প্রস্তাবিত বাজেট

আপনার মতামত লিখুন