শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
অর্থনীতি

কক্সবাজারে পর্যটক কমেছে ৯৫ শতাংশ

আর্থিক চাপে পর্যটন খাতে নতুন সঙ্কটের আভাস

অনলাইন ডেস্ক
০৮ নভেম্বর ২০২২

আর্থিক চাপে নতুন করে অনিশ্চয়তায় পড়তে যাচ্ছে দেশের পর্যটন খাত। করোনা লোকসান কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর মুহূর্তেই আবারো সঙ্কটের আভাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, পর্যটন ব্যবসার ভরা সময়ে সব জিনিসের দাম বৃদ্ধিতে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। দিন দিন পর্যটক কমে আসায় লোকসান বাড়ছে। ফলে ধীরে ধীরে বড় সঙ্কটের দিকে যাচ্ছে এ খাত।

ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন জানান, সাধারণত এ খাতে ব্যবসার ভরা মৌসুম হলো বছরের নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি। করোনা সঙ্কট কাটিয়ে এতদিন ব্যবসা খারাপ যায়নি। বলা যায়, এতদিন এ খাত সঙ্কট কাটাতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে সব জিনিসের দাম বৃদ্ধিসহ সার্বিক পরিস্থিতির কারণে সামনে পর্যটন খাতে নতুন সঙ্কট সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। যদিও গত কয়েক মাসে এ ব্যবসায় নতুন করে আশার সঞ্চার হয়েছিল।

তিনি জানান, গেল দুই ঈদেও ব্যবসা হয়েছে হাজার কোটি টাকার। কিন্তু এর মধ্যে কিছুদিন আগেও জ্বালানির দাম বৃদ্ধির পর এ খাতে প্রথম ধাক্কা লাগে। এতে করে পরিবহন খরচের সাথে অন্যান্য ব্যয় বৃদ্ধি পায়। ফলে সারা দেশে প্রায় ২০ শতাংশ পর্যটকের যাতায়াত কমে যায়। এর পর থেকে একের পর এক জিনিসের দামের ঊর্ধ্বগতিতে ধীরে ধীরে এ খাত নতুন সঙ্কটের দিকে যাচ্ছে। এ রকম চলতে থাকলে হয়তো আগামী জানুয়ারি থেকে আবারো এ ব্যবসায় সঙ্কট সৃষ্টি হতে পারে।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম শিকদার জানান, কক্সবাজারে প্রায় ৯৫ শতাংশ পর্যটক কমে গেছে। প্রতিদিন পণ্যের দাম বৃদ্ধি হলেও তারা দাম বৃদ্ধি করতে পারছেন না। ফলে ব্যবসায় লোকসান বেড়ে চলেছে। তিনি জানান, প্রতি বছর এ সময়ে হোটেল-মোটেলে যে পরিমাণ রুম বুকিং হয় এবার তার ৫ শতাংশও হয়নি। এতে তাদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে। মানুষের ব্যয় বৃদ্ধির ধারা এভাবে অব্যাহত থাকলে সামনে পর্যটক কমে এ খাত বড় ঝুঁকিতে পড়বে। এতে করে মোটা অঙ্কের লোকসানের সাথে বেকার হয়ে পড়বে লাখো কর্মী। ঝুঁকিতে পড়বে এ খাতের হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ।

সিলেট হোটেল ও গেস্ট হাউজ ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি সুমাত নূরী জুয়েল জানিয়েছেন, চলতি বছরের মাঝামাঝি থেকে তারা সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতিতে রয়েছেন। এক দিকে লোডশেডিং অন্য দিকে জ্বালানির দাম বৃদ্ধির পর একে একে সব জিনিসের দাম বাড়তে থাকায় ব্যবসা কমে আসছে। ব্যবসার এ ভরা মৌসুমেও প্রায় ৯০ শতাংশ পর্যটক কমেছে। ব্যবসা টিকিয়ে রাখাও এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অপর দিকে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন ব্যবস্থাপক (জনসংযোগ ও বিপণন) মো: জিয়াউল হক হাওলাদার জানান, দৈনন্দিন ব্যয় বৃদ্ধিতে কিছুটা হলেও এ খাতে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। কারণ নিত্যপণ্যসহ সাংসারিক ব্যয় মেটানোর পরই তো বিনোদনের বিষয়টি আসে; কিন্তু এখন যে অবস্থা তাতে আয় ব্যয়ের সঙ্কুলান কষ্টকর। এ অবস্থায় পর্যটন খাতেও তার প্রভাব পড়বে এটাই স্বাভাবিক। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত খুব একটা খারাপ যাচ্ছে তা বলা যাবে না। তবে সামনের সময় কেমন হবে তা বছর শুরুর পর পরিস্থিতি বলে দেবে।

অন্যদিকে বান্দরবান ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা থাকায় পর্যটকশূন্য রয়েছে বান্দরবানের রোয়াংছড়ি, রুমা, আলীকদম ও থানচি। স্থানীয় হোটেল ব্যবসায়ীরা জানান, প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞায় ব্যবসার এমন সময়েও গোটা এলাকায় পর্যটক না থাকায় তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। হোটেল-মোটেল না চললেও কর্মচারী বেতন ও ঘরভাড়া দিতে হচ্ছে। ফলে প্রতিদিনই লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের।

ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ
বদলে যাবে দক্ষিণের দ্বীপ, পর্যটনে নতুন সম্ভাবনা

আপনার মতামত লিখুন