শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ইভেন্ট

সুন্দরবনে পর্যটন নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৪ জানুয়ারি ২০২২

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সুন্দরবনে পর্যটক ও নৌ-পরিবহনসহ সব ধরনের নৌ-চলাচলে বৃহষ্পতিবার সকালে দেওয়া নিষেধাজ্ঞা রাতে প্রত্যাহার করে নিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ। 

বৃহস্পতিবার রাতে ট্যুর অপারেটর এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ও ট্যুর অপারেটর এ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবনের সাথে যৌথসভা শেষে সীমিত সংখ্যাক যাত্রী পরিবহনসহ কয়েকটি শর্তে এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। এর আগে, গত বুধবার বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ সুন্দরবনে সব ধরণের যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচলে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দেয়, যা বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল।

বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় এ দু’টি সংগঠনের নেতাদের সাথে তাদের বিআইডব্লিউটিএ’র খুলনা আঞ্চলিক অফিসে সভা করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ। সভায় কোভিড স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সীমিত সংখ্যক যাত্রী নিয়ে চলাচলসহ বেশ কয়েকটি শর্তে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়।

এ বিষয়ে ট্যুর এসোসিয়েশন অব সুন্দরবনের সভাপতি মইনুল ইসলাম জমাদ্দার প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘সরকার যে ১১ দফা নির্দেশনা দিয়েছে, সেখানে নৌ-পরিবহন বন্ধের কোনো নির্দেশনা নেই, তাহলে আমরা এটা কেনো মানবো?’ তিনি দাবি করেন, আমরা সীমিত সংখ্যক যাত্রী নিয়ে লঞ্চ ও জাহাজ পরিচালনা করব।

খুলনা নদীবন্দর ও পরিবহন বিভাগের উপ-পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে সুন্দরবনে ব্যবসায়ের সাথে সংশ্লিষ্টদের সভা শেষে কোভিড স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সীমিত সংখ্যক যাত্রী নিয়ে চলাচলসহ আরও কিছু শর্ত দিয়ে সুন্দরবনে পর্যটন নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে।’

এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে খুলনা নদী বন্দরের বন্দর ও পরিবহন বিভাগের উপ-পরিচালক মোঃ আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছিলেন করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ‘ওমিক্রন’-এর সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সুন্দরবন ভ্রমণে নৌযান চলাচলে সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, গত ১০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিআইডব্লিউটিএ’র প্রধান কাযালয় থেকে তাঁকে ওই নির্দেশনা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। তারই আলোকে তিনি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পযন্ত ওই নিষেধাজ্ঞা কাযকর থাকবে।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) বেলায়েত হোসেন বলেন, বন বিভাগ থেকে এখনও সুন্দরবন ভ্রমণের বিষয়ে কোনও ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি। সব স্বাভাবিক নিয়মে চলছে।

সুন্দরবনে ট্যুর অপারেটরদের সংগঠন ট্যুরিস্ট অপারেটর এ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবন-এর সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আজম ডেভিড বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারীর শেষ পর্যন্ত সব ট্যুর অপারেটরদের নৌযান বুকিং দেওয়া আছে। অনেকেই অগ্রিম টাকা নিয়ে খরচও করে ফেলেছেন। এমন পরিস্থিতে যে কোনো নিষেধাজ্ঞা ট্যুর অপারেটরদের বিপাকে ফেলবে।

উলে­খ্য, করোনা পরিস্থিতির শুরুতে ২০২০ সালের ২৬ মার্চ থেকে সুন্দরবন ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতি কিছুটা শিথিল হলে ওই বছরের ১ নভেম্বর থেকে স্বল্প পরিসরে সুন্দরবন ভ্রমণের সুযোগ দেওয়া হয়। এর সাড়ে সাত মাস পর ফের করোনা পরিস্থিতির অবনতি হলে ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল সুন্দরবনে পর্যটক প্রবেশে ফের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। সাড়ে চার মাস বন্ধের পর ২০২১ সালের ১ সেপ্টেম্বর আবারও সুন্দরবন ভ্রমণ শুরু হয়।

সুন্দরবনে পর্যটকবাহী লঞ্চ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা
কক্সবাজারে শঙ্কা, সুন্দরবনের নীরব কান্না

আপনার মতামত লিখুন