শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ঘুরে আসি

নতুন রূপে সাজছে গোয়াইনঘাটের পর্যটনস্পট

মিনহাজ উদ্দিন
২৯ ডিসেম্বর ২০২১

সিলেটের গোয়াইনঘাটের জাফলং, বিছনাকান্দি, রাতারগুল, পান্তুমাইসহ সবকটি পর্যটন স্পটকে নিয়ে সরকারের পর্যটন বান্ধব নীতি অনুসরণ করে মহাপরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এসব পরিকল্পনায় সরকারের পাশাপাশি স্থানীয়রা যাতে ব্যাপকহারে উপকৃত, পর্যটকদের মাধ্যমে গোয়াইনঘাটের প্রতিটি পর্যটন স্পট এবং স্থানীয় উৎপাদিত পণ্য দ্রব্যাদি বিক্রয়ের মাধ্যমে উপকৃত হতে পারেন সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে সরকার।

গোয়াইনঘাটের জাফলংয়ে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী খাসিয়াদের ইতিহাস ঐতিহ্য ও শিল্প সংস্কৃতি নিয়ে একটি জাদুঘরও গড়ে তোলা হবে। ওই জাদুঘর নৃ-গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের দ্বারা পরিচালিত হবে। এছাড়াও বে-সরকারি ব্যবস্থাপনায় রিসোর্ট, হোটেল-মোটেলসহ পর্যটন অবকাঠামো গড়ে তুলতে বিনিয়োগকারীদেরকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। প্রকৃতি কন্যা সিলেটকে নিয়ে ব্রান্ডিংশপ করার প্লানও এগিয়ে চলছে। গোয়াইনঘাটের দৃষ্টি নন্দন পর্যটন স্পট সমূহে পর্যটকরা ঘুরাফেরা করে ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর বসতিস্থল, জাদুঘরসহ ঘুরে দেখার সব স্থানের পাশাপাশি গোয়াইনঘাট থেকে উৎপাদিত জাড়া লেবু, শীতল পার্টির মত পণ্য সমূহ যাতে পর্যটকরা নিতে পারে তার ব্যবস্থা রাখা হবে।

জাফলং- কোম্পানিগঞ্জ পর্যটনস্পট সমূহে পর্যটকদের দ্রুত যাতায়াত সুবিধার্থে কানেক্টিং সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কমিউনিটি বেইজড পর্যটন সুবিধা বৃদ্ধিতে তার সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

জাফলংকে নিয়ে সরকারের পর্যটন উন্নয়নে প্রাথমিক পরিকল্পনায় ইতিপূর্বে ৪০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে দৃষ্টি নন্দন সিঁড়ি, ওয়াশ ব্লক, যাতায়াত সড়ক স্থাপিত হয়েছে। পর্যটন বিকাশে জাফলংয়ের পাশাপাশি পান্তুমাই ওয়াটার ফলস (ঝর্ণার) অদূরে একটি গোল ঘর, কটেজ তৈরির উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। ১ কোটি টাকা ব্যয়ে রাতারগুল সোয়াম ফরেস্টে একটি রাস্তা তৈরি হয়েছে।

পর্যটকদের নিরাপদে আগমন ও প্রস্তানে প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারির পাশাপাশি অতিরিক্ত সময়ে দায়িত্ব পালনে টুরিস্ট পুলিশের জন্য অবকাঠামোগত উন্নয়ন বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গোয়াইনঘাটের পর্যটন সম্ভাবনা বিকশিত করতে সরকারের তরফে ইতিপূর্বে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকার একটি উন্নয়ন পরিকল্পনা বিছনাকান্দি থেকে কতিপয় পাথর খেকো চক্রের বিরোধিতায় কোম্পানিগঞ্জ চলে গেছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে সে লক্ষ্যে শক্ত হস্তে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গোয়াইনঘাটের পর্যটন শিল্প বিকশিত করণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নেয়া মহা-পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ চলমান রয়েছে। স্থানীয় এমপি ও সরকারের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদের প্রচেষ্টায় এসব পর্যটন বান্ধব উন্নয়ন পরিকল্পনা দ্রুততায় এগিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তাহমিলুর রহমান। তিনি জানান, গোয়াইনঘাটের জাফলং, বিছনাকান্দি, রাতারগুল, পান্তুমাইসহ সবকটি পর্যটন স্পটে প্রতিদিন হাজারো মানুষের আগমন ঘটে।

দেশি-বিদেশি পর্যটকরা গোয়াইনঘাটকে অবলোকন করেন। গোয়াইনঘাটের পর্যটন স্পট সমূহে সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগে পর্যটন শিল্পকে আরো বিকশিত ও আধুনিকায়নে সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছে। ইতিপূর্বে বাস্তবায়িত হওয়া পর্যটন অবকাঠামোর পাশাপাশি ইউজিডিপি-এর আওতায় আওতায় কারু শিল্প প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে করে স্থানীয় উৎপাদিত কারু পণ্য সামগ্রী পর্যটকদের কাছে বিক্রয়ের মাধ্যমে স্থানীয়রা উপকৃত হওয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। জাফলং ভ্রমণে আসা পর্যটকরা যাতে এখানকার বসবাসরত নৃ-গোষ্ঠীর শিল্প সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সাথে মিশতে পারেন, সে লক্ষ্যে একটি নৃ-গোষ্ঠী (খাসি) জাদুঘর স্থাপনে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

সরকারের পর্যটন মন্ত্রণালয়সহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং সরকারের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদের প্রচেষ্টায় গোয়াইনঘাটের পর্যটন অবকাঠামো উন্নয়ন এবং পর্যটন শিল্পকে বিকশিত করণের কাজ চলছে। পর্যটন শিল্প বিকাশের মাধ্যমে স্থানীয়দের জড়িয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতিপূর্বে এরই ধারাবাহিকতায় জাফলংয়ের প্রবেশ পথে পর্যটকদের কাছ থেকে ৩টি পয়েন্টে ১০ টাকায় টিকিটিং ব্যবস্থা চালু হয়েছে। পর্যটন স্পট সমূহ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করণসহ বিভিন্ন উন্নয়নে তা ব্যয় হচ্ছে। 

পর্যটন খাতের উন্নয়নে তিন ধাপে মহাপরিকল্পনা
দেশের যে ১০ স্থানে পর্যটকরা বেশি ভিড় করে

আপনার মতামত লিখুন