শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫ | ১২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ইভেন্ট

পর্যটন খাতের উন্নয়নে তিন ধাপে মহাপরিকল্পনা

আবুল কালাম
২৯ ডিসেম্বর ২০২১

করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত পর্যটন খাতকে ঢেলে সাজাতে তিন ধাপে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, বর্তমান অবস্থা পর্যালোচনা, পর্যটনের ভিশন, মিশন, স্ট্র্যাটেজিক অবজেক্টিভস, প্রায়োরিটিস এবং এরিয়া নির্দিষ্ট করে অঞ্চলভিত্তিক পরিকল্পনা প্রস্তুত। এ ছাড়া মেলা, ফেস্টিভাল, কার্নিভাল, কালচারাল অনুষ্ঠান, ব্র্যান্ডিং, স্যোসাল মিডিয়ায় প্রচারণা, ভিডিও নির্মাণ, ডিজিটাল স্ক্রিনে প্রদর্শনী ও ওশান ট্যুরিজমকে বেসরকারি উদ্যোগে চালুর পরিকল্পনাও রয়েছে।

ট্যুরিজম বোর্ডের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সম্ভাবনার পর্যটন খাত ঢেলে সাজানোর করণীয় ঠিক করতে ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সাথে তারা একাধিক বৈঠক করেছেন। সেখানে তিন ধাপে মহাপরিকল্পনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথম পর্যায়ে দেশের পর্যটন শিল্পের বর্তমান অবস্থা, দুর্বলতা, আকর্ষণ, সম্ভাবনা ও সঙ্কট চিহ্নিত করা হবে। এরপর তার উন্নয়নে সংশ্লিষ্টদের সাথে বৈঠক করে তাদের মতামত নেয়া হবে।

দ্বিতীয় পর্যায়ে এ খাতের স্ট্র্যাটেজিক অবজেক্টিভস, ভিশন, প্রায়োরিটিস, মিশন, এবং লিংকেজ নির্ধারণ করা হবে। এরপর এর উন্নয়ন, প্রমোশন এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তিন, পাঁচ এবং ১৫ বছর মেয়াদি স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান তৈরি করা হবে। তৃতীয় পর্যায়ে এরিয়া নির্দিষ্ট করে অঞ্চলভিত্তিক পরিকল্পনা প্রস্তুত করা হবে। প্রোডাক্ট উন্নয়নের পরিকল্পনা, অর্থায়ন ও বিনিয়োগের কৌশল অন্তর্ভুক্ত করে কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুত এবং বিপণন ও প্রমোশনাল কৌশল নির্ধারণ করা হবে।

বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের উপপরিচালক, পরিকল্পনা ও গবেষণা, উপসচিব মোহাম্মাদ সাইফুল হাসান বলেন, দেশের ট্যুরিজমকে বিশ্বের সামনে তুলে এর বাইরেও আরো কিছু কার্যক্রম মহাপরিকল্পনার আওতায় থাকবে। এর মধ্যে রয়েছে, প্রতি সপ্তাহে ডাবল ডেকার পর্যটন বাসের মাধ্যমে ঢাকা ও এর আশপাশের পর্যটন আকর্ষণগুলো ঘুরে দেখার ব্যবস্থা। রয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বিশেষ প্রচারণা। ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ ক্যাম্পেইনে মহান মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন স্মৃতিস্তম্ভ এবং সেগুলোর ইতিহাস নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্লগ আকারে পোস্ট। মেলা, ফেস্টিভাল, কার্নিভাল, কালচারাল অনুষ্ঠান, ব্র্যান্ডিং, স্যোসাল মিডিয়ায় প্রচারণা, ভিডিও নির্মাণ, ডিজিটাল স্ক্রিনে প্রদর্শনী ও ওশান ট্যুরিজমকে বেসরকারি উদ্যোগে চালু। এ ছাড়া কালচারাল অনুষ্ঠান ও ব্র্যান্ডিংসহ একাধিক ইভেন্ট রয়েছে।

তিনি জানান, এসব কার্যক্রমের প্রধান কারণ পর্যটনের উন্নয়নের পাশাপাশি বাংলাদেশকে দেশে-বিদেশে প্রমোট করা। তিনি বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় ইতোমধ্যে ছোট ছোট ভিডিও তৈরি চলছে। একটি প্রতিষ্ঠানকে তা তৈরির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। দুই বছরের চুক্তিতে প্রতিষ্ঠানটি সারা দেশের জন্য ৭০০ ভিডিও তৈরি করবে।

এ ছাড়া অ্যানিমেশনসহ প্রায় এক হাজার ভিডিও তৈরি করা হচ্ছে। এগুলো স্যোসাল মিডিয়ায় প্রচার হবে। অন্য দিকে বিভিন্ন স্থানে ডিজিটাল স্ক্রিনেও এগুলো প্রদর্শন করা হবে। হোটেলগুলোতে টিভিসিগুলো সার্বক্ষণিক চলবে। যারা ট্যুর অপারেটররা আছে তাদেরও প্রমোট করা হবে।

ওশান ট্যুরিজমকে বেসরকারি উদ্যোগে চালুর চেষ্টা চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট প্যাকেজ চালুর বিষয়টিও পরিকল্পনার মধ্যে আছে। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের মাধ্যমে এই মহাপরিকল্পনার কার্যক্রম চলবে বলেও জানান তিনি।

পর্যটন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশে ভ্রমণ ও পর্যটন খাতে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। অপর দিকে প্যাসিফিক এশিয়া ট্রাভেলস অ্যাসোসিয়েশনের রিপোর্ট অনুযায়ী এ শিল্প প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকারও বেশি ব্যবসা হারিয়েছে। আর জীবন-জীবিকা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন এর সাথে সংশ্লিষ্ট ৪০ লাখেরও বেশি জনবল।

সৈকতে নারী-শিশুর জন্য আলাদা জোন
নতুন রূপে সাজছে গোয়াইনঘাটের পর্যটনস্পট

আপনার মতামত লিখুন