শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
অর্থনীতি

পর্যটনশিল্পের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের বছর ২০২২

ডেস্ক রিপোর্ট
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২

২০২২ সালে পর্যটকরা স্বাধীনভাবে এক দেশ থেকে আরেক দেশে ঘুরে বেড়াতে পারবেন। চলতি বছর তারা নিশ্চিন্তে দেশের বাইরে ছুটি কাটাতে পারবেন। অর্থাৎ কভিড-১৯ মহামারির আগের সময়ের মতো ছুটি কাটানোর পরিকল্পনা করতে পারবেন তারা। কেননা বিশ্বের অনেক জনপ্রিয় গন্তব্য তাদের সীমান্ত খুলে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। একই সঙ্গে তারা টিকা কর্মসূচি চালু রাখার পাশাপাশি বিধিনিষেধ তুলে নিচ্ছে, পরিহার করছে দীর্ঘমেয়াদি কোয়ারেন্টাইন। খবর: খালিজ টাইমস।

বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে খালিজ টাইমস জানায়, বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল ও শ্রমঘন একটি শিল্প এটি। পর্যটনশিল্পের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার বছর হবে ২০২২ সাল। চলতি বছর হবে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের বছর।

ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম কাউন্সিলের (ডব্লিউটিটিসি) সর্বশেষ গবেষণায় দেখা গেছে, চলতি বছর বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বৈশ্বিক পর্যটন খাতের অবদান বেড়ে দাঁড়াতে পারে আট লাখ ৬০ হাজার কোটি ডলারে। এর আগে ২০১৯ সালে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এ খাত প্রায় ৯ লাখ ২০ হাজার ডলার অবদান রাখে। পরের বছর ২০২০ সালে সম্পূর্ণ স্থবির হয়ে পড়ে খাতটি। তখন ৪৯ দশমিক এক শতাংশ ধস নামে এ খাতে। ক্ষতি হয় প্রায় চার লাখ ৫০ হাজার ডলারের। ডব্লিউটিটিসি জানায়, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার শুরু হলে এবং ইতিবাচক ধারায় ফিরলে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধিতে পর্যটন খাত ছয় দশমিক চার শতাংশ অবদান রাখবে। অর্থাৎ মহামারি-পূর্ব রমরমা অবস্থায় ফিরে আসবে পর্যটন খাতে।

গালাদারি আন্তর্জাতিক ট্রাভেল সার্ভিসেসের (আইটিএস) ব্যবস্থাপক রাজা মির ওয়াসিম বলেন, মহামারিতে বিপর্যস্ত হয়ে বিশ্বের পর্যটনশিল্প। সুখবর হচ্ছে, ২০২২ সালটি সেসব সমস্যা কাটিয়ে উঠবে। কেননা অনেক দেশের সীমান্ত খুলে দেয়া হচ্ছে। দেশের ভেতরে ও বাইরে অনেকে বেড়াতে যাচ্ছেন। ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকা মহাদেশের দেশগুলোর নাগরিকদের পাশাপাশি এশিয়ায়ও পর্যটকদের ঘোরাফেরা বেড়েছে।

মির ওয়াসিম বলেন, আমার দেশে সংযুক্ত আরব আমিরাতে কিছু গন্তব্য বিশেষ করে দুবাইয়ে পর্যটকর আসছেন, ফিরছেন প্রবাসীরা। মালয়েশিয়াও বিদেশি পর্যটকদের জন্য আগামী ১ মার্চ তাদের সীমান্ত খুলে দিচ্ছে। এভাবে ক্রমান্বয়ে আরও অনেক দেশ সচেতন হচ্ছে। তার মতে, খুব দ্রুত অগ্রগতি দেখা যাবে এ খাতে। তবে লক্ষ্য অর্জনে সব সরকারকে কভিড-১৯ টিকাদানে গুরুত্ব দিতে হবে। বুস্টার ডোজ কর্মসূচি চালিয়ে যেতে হবে। কোয়ারেন্টাইন ছাড়াই টিকার সম্পূর্ণ ডোজ নেয়া ব্যক্তিদের স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়ানোর অনুমতি দিতে হবে।

পর্যটকদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ফিরে এসেছে। তারাও আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন। তাই দীর্ঘ ঘরবন্দি দশা কাটিয়ে তারা পছন্দের গন্তব্যে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন।

ডব্লিউটিটিসির গবেষণা থেকে জানা গেছে, চলতি বছর পর্যটনশিল্পে তিন কোটি ৩০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। বৈশ্বিক ট্যুরিজম সংস্থাগুলো বিশ্বের সব সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়, পর্যটকদের জন্য সহজ ও সুবিধাজনক ভ্রমণ নিশ্চিতে ডিজিটাল সমাধান খুঁজে বের করা উচিত। তারা যেন কোনো ধরনের সমস্যায় না পড়েন, সেদিকে নজর দিতে বলেন তারা।

ডব্লিউটিটিসির প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জুলিয়া সিম্পসন বলেন, গত দুই বছরে আমাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বড় ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পর্যটন খাত। এ খাতের সঙ্গে যুক্ত লাখ লাখ প্রতিষ্ঠান, উদ্যোগ ও ব্যক্তি রীতিমতো পথে বসেছে। এ বছর আর কোনো ক্ষতি দেখতে চাই না। কর্মসংস্থান ও অর্থনীতির উন্নতি দেখতে চাই। এরই মধ্যে যারা চাকরি হারিয়েছেন তাদের আবার কর্মসংস্থান করতে চাই, যেন সম্পূর্ণ অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার হয়।

হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, ট্যুর অপারেটর, ট্রাভেল এজেন্সি, এয়ারলাইনস ও ট্রান্সপোর্টে সরাসরি চাকরি ছাড়াও পর্যটনসংশ্লিষ্ট সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থাপনায় এবং পশ্চাৎপদ ও ফরোয়ার্ড পর্যটনসেবায় বিস্তৃত পরিসরে কর্মসংস্থান হয় এ খাতে। পরিবহন, নির্মাণ, প্রকৌশল, উৎপাদন, কৃষি, খাদ্য টেলিকম, তথ্যপ্রযুক্তি, নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবাসহ অন্য কিছু খাত আছে, যা পর্যটকদের নিরাপদ ও আরামদায়ক ভ্রমণে সুযোগ করে দেয়। তাই অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধিতে পর্যটন ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন জুলিয়া।

বাজারে এলো ওয়ালটনের নতুন স্পিকার
ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি কাউন্সিলের নেতৃত্বে হেলাল-শামীম

আপনার মতামত লিখুন