শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
অর্থনীতি

পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ, ক্ষতির সম্মুখীন হাজারো লোক

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৩ অক্টোবর ২০২২

কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণার প্রতিবাদে জাহাজ মালিক, ঘাট মালিক, কর্মচারী, শ্রমিক ও সাধারণ ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছে। এ বিষয়ে একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া জাহাজ ঘাটে পর্যটক জাহাজ চলাচল বন্ধের প্রতিবাদে এই মানববন্ধন হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, প্রতি অক্টোবরের শুরুর দিকে পর্যটন মৌসুমে টেকনাফ সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়। এতে প্রায় ১০টি জাহাজে করে ১০ হাজার পর্যটক যাতায়াত করতো। কিন্তু হঠাৎ করে নাফ নদীর নৌ-রুটে নাব্যতা সংকট দেখিয়ে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। ফলে পর্যটন নির্ভরশীল টেকনাফ উপজেলার বাসিন্দাসহ দেশের হাজারো নাগরিক বেকারের পাশাপাশি লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছে। তাদের দাবি টেকনাফ থেকে জাহাজ চলাচলের অনেক বিকল্প পথ রয়েছে। এটির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত বিকল্প নৌ রুট দিয়ে জাহাজ চলাচলের দাবি জানিয়েছেন অংশগ্রহণকারীরা।

জানা যায়, প্রতিবছরের ন্যায় এই বছরও জাহাজ চলাচলের জন্য সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিল ব্যবসায়িরা। পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিন যাওয়ার প্রস্তুতি সম্পন্ন করে দমদমিয়া বিআইডব্লিউটিএ'র ঘাটে জাহাজসমূহ অবস্থান করেছিল। একটি বছরের মধ্যে এক লক্ষাধিক মানুষ পাঁচ মাস পর্যটন ব্যবসার পুঁজি খাটিয়ে সারাবছর জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। চলতি বছর হঠাৎ করে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করায় পর্যটন খাতের সংশ্লিষ্ট রেস্টুরেন্ট, আবাসিক হোটেল, বাস, মাইক্রো মালিক, চালক ও জাহাজ শ্রমিকেরা বেকার হয়ে পড়েছে। এ কারণে অনেকেই মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

আরও জানা যায়, ইতিমধ্যে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম থেকে কর্ণফুলী ও বে-ওয়ান নামে দুটি পর্যটক জাহাজ চালু হলেও পর্যটকেরা ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা জাহাজে অবস্থান করে সাগরের প্রচণ্ড ঢেউয়ে প্রায় পর্যটক অসুস্থ হয়ে পড়ে। সেই অসুস্থতার কারণে পর্যটকগণ আর জাহাজ নিয়ে কক্সবাজার ফিরতে পারেনি।

পর্যটন ব্যবসায়িরা অভিযোগ করে জানায়, কিছু স্বার্থনেষী বড় ব্যবসায়ী তাদের নিজস্ব ফায়দা লুটার জন্য টিকেটের মূল্য বাড়িয়ে ওভারলোডিং করে দীর্ঘ সাগরের পথ পাঁড়ি দিয়ে সাধারণ পর্যটকদের ক্ষতিসাধনের চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ- রুট দিয়ে পর্যটকবাহী জাহাজ চালু থাকলে কম খরচে পর্যটকগণ সাচ্ছন্দে ভ্রমণে উৎসাহিত হয়।

বিগত ১৫ বছর ধরে এই নৌ-রুটে জাহাজ চলাচল করে আসছিল। টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ রুটে জাহাজ চলাচল না করা হলে পর্যটন শিল্পে ধ্বস নামার পাশাপাশি সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হবে।

এ বিষয়ে ইজারাদার জিয়াউর রহমান জানান, লাখ লাখ টাকায় জাহাজ ঘাট ইজারা নিয়েছিলাম। হঠাৎ কেন, কী উদ্দেশ্যে, কাদের খুশি করার জন্য জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে তা বোধগম্য নয়। অনেক পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়ী যুবক ছেলে বেকার হয়ে গেছে। তাদের পরিবারের অর্ধহারে অনাহারে মানবেতর জীবনযাপন করা ছাড়া বিকল্প পথ নেই। এরকম ঘটনায় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. এরফানুল হক চৌধুরী বলেন, নদীর নাব্যতা সংকটের কারণে জাহাজ চলাচল আপাতত বন্ধ রয়েছে। অচিরেই ড্রেজিং করে জাহাজ চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে।

পরে ইউএন'র নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেন ব্যবসায়ীরা।

রিকুইজিশন আতঙ্কে পর্যটন ব্যবসায়ীরা
অধিক মুনাফার লোভে পর্যটনের ক্ষতি

আপনার মতামত লিখুন